বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন: আস্থার শেষ পরীক্ষা
দেলোয়ার জাহিদ
গণতন্ত্র কোনো আনুষ্ঠানিক আয়োজন নয়; এটি টিকে থাকে নাগরিক আস্থার ওপর। সেই আস্থার জন্ম হয় এমন একটি নির্বাচন থেকে, যেখানে মানুষ বিশ্বাস করে—তার ভোটের মূল্য আছে, তার মতামত রাষ্ট্র শুনবে। এই আস্থা ভেঙে গেলে নির্বাচন যতই সাংবিধানিক হোক না কেন, তা রাষ্ট্রকে নিরাপদ ও স্থিতিশীল রাখতে পারে না। বাংলাদেশ আজ ঠিক সেই সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে।
নির্বাচনের আর হাতে গোনা কয়েক সপ্তাহ বাকি । এই শেষ সময়ে এসে প্রশ্নটি আর রাজনৈতিক কৌশলের নয়, বরং রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের—এই নির্বাচন কি জনগণের আস্থা নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে, নাকি আস্থাহীনতার ভার নিয়েই ফল ঘোষণায় পৌঁছাবে? ইতিহাস বলে, শেষ মুহূর্তে নেওয়া সিদ্ধান্তই অনেক সময় একটি নির্বাচনের বৈধতা ও ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেয়।
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্রের মূল ভিত্তিই দুর্বল হয়ে পড়ে। প্রধান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর কার্যকর অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন একটি অসম প্রতিযোগিতায় রূপ নেয়। এমন নির্বাচনে আইনি বৈধতা থাকলেও রাজনৈতিক বৈধতা থাকে না। আর এই ঘাটতি নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে গভীর সংকট, দীর্ঘস্থায়ী অনিশ্চয়তা ও সামাজিক মেরুকরণ সৃষ্টি করে—যার মূল্য দেয় সাধারণ নাগরিক।
অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের প্রশ্নও এখন আর তাত্ত্বিক নয়। নারী, সংখ্যালঘু, যুব ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নামমাত্র উপস্থিতি অন্তর্ভুক্তি নয় সকল দল ও মতের অংশ গ্রহণ জরুরি । তাদের ভোট, কণ্ঠ ও প্রতিনিধিত্ব যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান না হয়, তবে এই নির্বাচন সমাজের বড় অংশের কাছে দূরত্ব ও বর্জনের প্রতীক হয়ে উঠবে। প্রতীকী অন্তর্ভুক্তি আসলে বর্জনের আধুনিক রূপ—যা নীরব ক্ষোভ জমা করে এবং ভবিষ্যতে বিস্ফোরণের ঝুঁকি বাড়ায়।
সবচেয়ে গুরুতর প্রশ্ন রাষ্ট্রীয় নিরপেক্ষতা। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আস্থার সংকট দূর না হলে নির্বাচন প্রতিযোগিতা নয়, বরং ক্ষমতা সংরক্ষণের প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচিত হবে। এতে শুধু বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিই নয়, সাধারণ নাগরিকও ভোট প্রক্রিয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। ভোটাধিকার তখন কাগজে থাকবে, বাস্তবে তার মূল্য শূন্যে নেমে আসবে।
এই বাস্তবতা আন্তর্জাতিক পরিসরেও স্পষ্টভাবে অনুধাবন করা হচ্ছে। ভারত, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াসহ প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করছে—এটি কোনো গোপন বার্তা নয়। বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কের সাম্প্রতিক সংকটও দেখিয়েছে, আস্থার ঘাটতি কেবল অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়; তা কূটনীতি, অর্থনীতি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকেও ঝুঁকির মুখে ফেলে। রাশিয়ার সংযত অবস্থানও একই বাস্তবতার দিকে ইঙ্গিত করে—আস্থা ও সংলাপ ছাড়া স্থিতিশীলতা সম্ভব নয়।
এখনও সময় পুরোপুরি ফুরায়নি। এই শেষ সপ্তাহেই রাষ্ট্রকে স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে—সব রাজনৈতিক শক্তির জন্য সমান সুযোগ, নিরাপদ ও নির্ভয় প্রচার পরিবেশ, নির্বাচন কমিশনের কার্যকর স্বাধীনতা এবং প্রশাসনিক নিরপেক্ষতার দৃশ্যমান নিশ্চয়তা। এগুলো কোনো অতিরিক্ত দাবি নয়; এগুলোই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ন্যূনতম শর্ত।
নির্বাচন কেবল ফল ঘোষণার দিনে শেষ হয় না। ভুল নির্বাচন একটি প্রজন্মের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়—এবং সেই বোঝার ভার সবচেয়ে বেশি বহন করে সাধারণ মানুষ। আজকের সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে, এই নির্বাচন রাষ্ট্রের জন্য আস্থার ভিত্তি হবে, নাকি দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ঝুঁকির উত্তরাধিকার রেখে যাবে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনই।
লেখক : স্বাধীন রাজনীতি বিশ্লেষক, মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশ নর্থ আমেরিকান জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক এর সভাপতি (এডমন্টন, আলবার্টা, কানাডা)।
পাঠকের মতামত:
- ‘তারেক রহমানের আগমন বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চাকে আরও সুসংহত করবে’
- ফয়সালের স্ত্রী-বান্ধবী-শ্যালকের স্বীকারোক্তি
- বড়দিন উপলক্ষে মেহজাবীনের সম্প্রীতির বার্তা
- ‘তারেক রহমানের পরিকল্পনার দিকে নজর থাকবে’
- 'গণহত্যার বিচার করতে ট্রাইব্যুনাল গঠন করুন'
- মেট্রোরেলের ৫টি স্টেশনে ব্র্যাক ব্যাংকের এটিএম সেবা চালু
- প্রাইম ব্যাংক-এর পে-রোল সেবা নেবে ফেইম গ্রুপ
- ঈশ্বরগঞ্জে ওপেন বুক এক্সাম অনুষ্ঠিত
- গৌরনদীতে শুভ বড়দিন উদযাপন
- গৌরনদীতে সাংস্কৃতিক জোট ও যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার
- সুন্দরবনের খোলপেটুয়া নদী থেকে জীবিত হরিণ উদ্ধার
- সালথায় আ.লীগের ২ নেতার পদত্যাগ
- সাতক্ষীরার ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা, গ্রেপ্তার ৩
- গোপালগঞ্জ- ২ আসনে ধানের শীষের চূড়ান্ত প্রার্থী ডাঃ কে এম বাবর
- গোপালগঞ্জ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজিতা হলের বিদায় অনুষ্ঠান
- নড়াইলে ৪ দলীয় চৌধুরী কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন
- টুঙ্গিপাড়ায় আ. লীগ থেকে ৪ নেতার পদত্যাগের ঘোষণা
- প্রার্থীদের আয়কর রিটার্ন দাখিলে এনবিআরের বিশেষ ব্যবস্থা
- ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু ১ জানুয়ারি
- বর্ণাঢ্য আয়োজনে গাংনগর এএম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭৫তম বর্ষপূর্তি উদযাপন
- কাপ্তাইয়ে সম্প্রীতির ছোঁয়ায় বড়দিন উদযাপন
- সুপ্রীম কোর্ট’র আপিল বিভাগের এডভোকেট আরিফ মন্ডলকে সংবর্ধনা
- তারেক রহমানের সংবর্ধনায় যাওয়ার পথে কৃষক দলের আহ্বায়কের মৃত্যু
- ‘হাদি চেয়েছিলেন দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত’
- চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে সম্রাট নিহত, অস্ত্রসহ আটক সহযোগী
- রংপুরে সেপটিক ট্যাংকে পড়ে মা-ছেলেসহ নিহত ৩
- চা শ্রমিকদের কেউ হামলার শিকার হয়নি, জানালেন বাগান পঞ্চায়েত
- প্রধানমন্ত্রীর সহযোগতিায় বাঁচাতে চায় তপন বেপারী
- কক্সবাজারে ভারী বর্ষণ, পাহাড়ধসে নিহত ২
- ‘আয়নাঘরসহ সব গোপন বন্দিশালা বন্ধ করতে হবে’
- ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন সবচেয়ে সৎ রাজনীতিবিদ’
- ‘বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো পুনর্গঠন করতে চাই’
- গাংনীর ইউএনও’র বদলি আদেশ বাতিলের দাবিতে এবার মুক্তিযোদ্ধাদের মানববন্ধন
- রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ধসে নিহত ৯
- খুলনায় নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে ৩ শ্রমিকের মৃত্যু
- এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ
- ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়ে কলাপাড়ায় ১৩০ পরিবারের ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন
- জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকাদানের প্রস্তুতিমূলক সভা
- রণক্ষেত্র খুলনা, শিক্ষার্থী-পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া
- 'তোমার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম যে ব্যক্তিটি খুনি মোশতাককে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, তিনি মাওলানা হামিদ খান ভাসানী, যাকে তুমি পিতৃজ্ঞানে শ্রদ্ধা করতে'
- মহম্মদপুরে মানবতার সেবায় ‘ছায়া’
- ফরিদপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের মানববন্ধন স্মারকলিপি প্রদান
- সেন্টমার্টিনে মিয়ানমারের ২ সেনা ও ৩১ রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ
- সোনারগাঁয়ে এশিয়া বানী পত্রিকার সাংবাদিককে হত্যার হুমকি
- খাগড়াছড়িতে দ্বিতীয় দিনের মতো অবরোধ চলছে
-1.gif)








