E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

শখের বশেই এলোভেরা চাষ করছেন মাদারীপুরের সাগর

২০২১ নভেম্বর ১১ ১৮:১০:২০
শখের বশেই এলোভেরা চাষ করছেন মাদারীপুরের সাগর

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী, মাদারীপুর : পড়াশুনা ও চাকুরীর পাশাপাশি শখের বশেই এলোভেরা চাষ করছেন মাদারীপুরের সাগর হোসেন মাতুব্বর। বর্তমানে তার ছাদ বাগানে বড় আকারের অর্ধশতাধিক গাছ ও প্রায় শতাধিক চারা গাছ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, একতলা বিল্ডিং এর ছাদের উপর সাগর গড়ে তুলেছেন এই এলোভেরার বাগান। পাচ লিটারের সোয়াবিন তেলের বোতলসহ বিভিন্ন প্লাস্টিকের বোতল ও নানা ধরণের পরিত্যাক্ত পাত্রে লাগিয়েছেন এলোভেরা গাছ। তেমন কোন খরচ ছাড়াই এই বাগান দিনে দিনে বড় হচ্ছে। বর্তমানে তার বাগানে বড় আকারের অর্ধশতাধিক ও শতাধিক চারা গাছ আছে। মাত্র এক বছরের এলোভেরার বিস্তৃর লাভ করেছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পানিছত্র টিবি ক্লিনিক সড়কের হিজলাতলা মসজিদ সংলগ্ন এলাকার মাসুদুর রহমান খোকন ও মোসা. ইরা বেগমের ছেলে সাগর হোসেন মাতুব্বর। রাস্ট্র বিজ্ঞানে অর্নাস প্রথম বর্ষে আছেন। বর্তমানে কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টার পরিচালনার (ইউডিসি) কাজ করছেন। এর আগে ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন ধাপে ধাপে স্মার্ট কার্ড বিতরণের কাজ করছেন।

এ ব্যাপারে সাগর হোসেন মাতুব্বর বলেন, এলোভেরা গাছ লাগানোর শুরুটা ছিলো আমার মায়ের অসুস্থতার জন্য। ২০২০ সালের শেষে দিকে মা পেট ব্যাথাসহ নানা রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন আমার একজন পরিচিত ডাক্তার বলেন মাকে এলোভেরার সরবত খাওয়াতে। তখন এলোভেরা বাজার থেকে কিনে এনে মাকে সরবত খাওয়াতাম। কখনও কখনও বাজারে এলোভেরা পাওয়া যেতো না। তাছাড়া প্রতিদিন কিনতে সমস্যায়ও পড়তে হতো। সে সময় আমার চাচা মো. আওলাদ হোসেন মাতুব্বরের পরামর্শে ও তার দিননিদের্শনায় ২টি গাছ দিয়ে এলোভেরা লাগানো শুরু করি। মা এলোভেরার সরবত খেয়ে অনেক উপকার পান। এতে করে গাছ লাগাতে উৎসাহ পাই। এখন অবশ্য শখের বসেই এই গাছ চাষ করছি।

সাগর আরো বলেন, আমার পড়াশুনা ও চাকুরী করার জন্য অনেক সময় গাছের যত্ন নিতে পারি না। সে ক্ষেত্রে আমার ছোট ভাই রায়হান সজল ও সোহান এবং বোন হুমায়রা জান্নাত শোভা এলোভেরা গাছের যত্ন নেন। বড় গাছের পাশ দিয়ে নতুন চারা হয়। তখন সেই চারাগুলো তারা বিভিন্ন টপে রোপণ করেন। মাত্র ২ টি গাছ নিয়ে ছাদ বাগান শুরু করলেও এখন আমার বাগানে অর্ধশতাধিক বড় গাছ ও শতাধিক চারা গাছ আছে।

এ ব্যাপারে রায়হান সজল বলেন, বিভিন্ন কাজের জন্য গাছের যতœ নেয়া সম্ভব হয় না। তবে নিয়মিতভাবে যতœ নিতে পারলে এগুলো আরো বৃদ্ধি পেতো। তবে যে কেউ ইচ্ছে করলেই ছাদে, বারান্দায় বা উঠোনো এলোভেরার বাগান করতে পারেন। এই এলোভেরা যেমন উপকারী তেমনি এটি বিক্রি করেও লাভবান হওয়া সম্ভব। তবে আমরা এখনও বিক্রি শুরু করিনি। তবে কারো প্রয়োজন হলে তাকে বিনামূল্যেই দিয়ে থাকি।

এলোভেরার বাগান দেখতে এসে স্বেচ্ছাসেবক মিলন মুন্সি বলেন, সাগর অল্প দিনেই ছাদে এলোভেরার সুন্দর বাগান বানিয়েছেন। পড়াশুনা ও কাজের পাশাপাশি এই উদ্যোগ খুবই প্রসংশার।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর পরিবেশবাদী সংগঠন ফ্রেন্ডস অভ নেচারের প্রতিষ্ঠাতা রাজন মাহমুদ বলেন, সাগরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সাগরের এই ছাদ বাগান দেখে অনেকেই উৎসাহ পাবেন। এলোভেরা সৌন্দর্যের পাশাপাশি একটি ঔষুধি গাছ। এই গাছের অনেক উপকার পাওয়া যায়। তাছাড়া যে কেউ চাইলে এলোভেরা চাষ করে তা বিক্রি করে আয়ও করতে পারবেন। ছোট ছোট টপে এই গাছগুলো লাগানো যায়। তাই বাজার থেকে টাকা দিয়ে টপ কিনে না এনেও নিত্যপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিকের বোতল বা পরিত্যক্ত কোন পাত্রে এই গাছ লাগানো যায়। তাছাড়া এলোভেরা গাছের পাশ দিয়েই ছোট ছোট চারা জন্মে। তাই সেগুলো রোপণ করেই তেমন কোন খরচ ছাড়াই গাছ বৃদ্ধি করা যায়। তাই অনেকেই ইচ্ছে করলেই এলোভেরা চাষ করে আর্থিকভাবে জীবন বদলাতে পারেন।

(এএস/এসপি/নভেম্বর ১১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৫ আগস্ট ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test