E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

কাজু বাদামে সমৃদ্ধির হাতছানি 

২০২২ জুন ২৯ ১৭:৩৩:১৮
কাজু বাদামে সমৃদ্ধির হাতছানি 

তুষার কান্তি বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে কাজু বাদাম সমৃদ্ধির হাত ছানি দিচ্ছে । এ বাদাম এ বছর গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টারে প্রথম ফলেছে। এ সাফল্যে গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর নড়াইল, যশোর সহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় কাজু বাদাম চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কাজু বাদাম খেতে সুস্বাদু। এটি খুবই পুষ্টিকর। প্রতি কেজি কাজু বাদাম বাজারে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। উচ্চ মূল্যের এ ফসল চাষাবাদ করে এ অঞ্চলের কৃষক লাভবান হবেন। দেশের অর্থনীতিকে করবেন সমৃদ্ধ।

কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, এ হর্টিকালচার সেন্টারে কাজু বাদামের ৩ টি মাতৃ গাছ রয়েছে। জাতগুলো হলো VLA- 4 Vashkora এবং M-23। এ গাছ থেকে হর্টিকালচার সেন্টারটি ৫০টি গাছ সৃষ্টি করেছেন। এ বছর ৩ প্রজাতির ৫০টি কাজু গাছেই কাজু বাদাম ধরেছে। এটি হর্টিকালচার সেন্টার প্রতিষ্ঠার ৮ বছরের মধ্যে অন্যতম সেরা সাফল্য। এখন এই হর্টিকালচার সেন্টার থেকেই কাজু বাদামের চারা তৈরী করা হবে। এ চারা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় ছড়িয়ে দেয়া হবে। কৃষক কাজু বাদাম উৎপাদন করে খোরপোষের কৃষিকে বানিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত করতে পারবেন। তারা তাদের আয় ২ থেকে ৩ গুন বৃদ্ধি করে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে অবদান রাখবেন।

কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যান তত্ত্ববিদ এ. এইচ. এম. রাকিবুল হাসান বলেন, অর্থকারী ফসল হিসেবে সারা বিশ্বে কাজু বাদাম তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। বাংলাদেশে এ বাদাম খুবই সমাদৃত। বছরে আমাদের দেশে ৬ লাখ কেজি কাজু বাদাম আমাদানী করা হয়। আমাদের অঞ্চলের আবহাওয়া কাজু বাদাম চাষের উপযোগি। তাই সরকার কাজু বাদামের আমাদানী নির্ভরতা কমাতে পাহাড়ি এলাকায় কাজু বাদাম চাষের উদ্যোগ গ্রহন করে। সে ধারবাহিকতায় সরকার কম্বোডিয়া থেকে ৫০ কেজি কাজু বীজ আমদানী করে। এ বীজ দিয়েই দেশের হর্টিকালচার সেন্টার গুলোতে মাতৃগাছ তৈরী করা হয়। আমরা মতৃ গাছ থেকে এখানে ৫০টি গাছ সৃষ্টি করি। এসব গাছে কাজুবাদাম ধরেছে। এটি কাজু বাদাম চাষে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, বাংলাদেশের পাহাড়ে প্রতিবছর উৎপাদিত হচ্ছে মাত্র ১ লাখ কেজি কাজু বাদাম। পাহাড় ও সমতলে কাজুর আবাদ বৃদ্ধি করে বৈদেশিক মূদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব ।

গোপালগঞ্জ জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপপরিচালক ড. অরবিন্দু কুমার রায় বলেন, কৃষক শুধু কাজু বাদাম সংগ্রহ করে বিক্রি করেই টনে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা লাভ করতে পারবে। এছাড়া কাজু বাদাম সংগ্রহ, শুকানো, প্রক্রিয়াজাত করন সহ বিভিন্ন কাজে প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। কাজুর আবাদে কৃষকের আয় যেমন বাড়বে, তেমনি শ্রমিকের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। এখানে নারী শ্রমিকরা বেশি কাজ করার সুযোগ পাবেন। পাহাড়ি অঞ্চলের পাশাপাশি সমতলেও কাজু বাদাম চাষের সমান সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টার। এটি আমাদের কৃষির জন্য সু সংবাদ। কাজু আমাদের কৃষিকে সমৃদ্ধ করবে। কৃষকের জীবন মান উন্নত হবে।

(টিকেবি/এসপি/জুন ২৯, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

৩১ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test