E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

দিনাজপুরে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষে সাফল্য 

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৭ ১৯:০৭:৩৬
দিনাজপুরে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষে সাফল্য 

শাহ্‌ আলম শাহী, দিনাজপুর : শীতকালীন সবজি শিম এখন গ্রীষ্মকালেও বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে উত্তরের শষ্য ভান্ডার দিনাজপুরে। দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ভাড়াডাঙ্গী এলাকায় কৃষক সোহরাব গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন। জমিতে সাদা-বেগুনী শিমের ফুল আর সবুজ শিমে তার মুখে হাসি ভরে উঠেছে।

আজ শনিবার বিকেলে তার এই শিম ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ কৃষি বিভাগেরঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারকৃষি পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন সেক্টরের মহাপরিচালক এবং অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম জানান, 'কৃষি সমৃদ্ধ জেলা দিনাজপুর বরাবর কৃষিতে বাজিমাত করে আসছে। এবারো বাজিমাত করেছে গ্রীম্মকালীন শীম উৎপাদন করে। আর্লি ৪৫ জাতের এই শিম বিষমুক্ত ও পুষ্টিসমৃদ্ধ হওয়ায় বাজারে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। বাজারে চাহিদা থাকায় তারা ভালো দাম পাচ্ছেন, যা তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাই গ্রীষ্মকালীন শিম চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।'

এ সময় দিনাজপুরে অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন, দিনাজপুর অঞ্চলের টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু রেজা মো.আসাদুজ্জামান, মনিটরিং ও মূল্যায়ন অফিসার মো. মশিউর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ, অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আফজাল হোসেন ও বিরল কৃষি অফিসার মোছা. রুম্মান আক্তারসহ অন্যরা কৃষি কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।।

ভাড়াডাঙ্গী টেকসই কৃষি উন্নয়ন কৃষক/কৃষাণী দলের সহায়তায় কৃষক সোহরাব আল ৩৩ শতাংশ জমিতে প্রাথমিকভাবে গ্রীষ্মকালীন এই শিম চাষ করেন। আর এই শিম চাষে তিনি বাজিমাত করেছেন। পেয়েছেন অভাবনীয় সাফল্য। এখন তার জমিতে শুধুই সাদা-বেগুনী শিমের ফুল আর সবুজ শিম।প্রথমেই তিনি প্রায় ২৫ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেন। পাইকারের কাছে প্রতি কেজি ১৩০/১৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা দরে।

সোহরাবের সাফল্য দেখে এলাকার মখলেস, রহিম, শরিফুল, আকবর আলী, রমেশ, হরিপদসহ আরও অনেকে শিম চাষ শুরু করেছেন। তারা জানান, কম খরচে বেশি লাভের কারণে শিম চাষ তাদের কাছে খুবই লাভজনক মনে হয়েছে। তারা বলেন, আর্লি-৪৫ জাতের এই শিম গ্রীষ্মকালীন চাষের উপযোগী এবং প্রতি হেক্টরে গড়ে ৮ মেট্রিক টন পর্যন্ত ফলন দিয়ে থাকে। তাদের সফলতা দেখে এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও গ্রীষ্মকালীন শিম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তারা বর্তমানে শিম চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন, ব্যবসার পাশাপাশি আমি ২০ শতাংশ জমিতে এই শিম চাষ করেছি।ফলনও পাচ্ছি ভালো। আমার ভালো ফলন দেখে অনেকেই অত্যন্ত খুশি। শিম চাষে পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়ার জন্য তিনি কৃষি কর্মকর্তা মনিটরিং ও মূল্যায়ন অফিসার মো.মশিউর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু রেজা মো.আসাদুজ্জামান জানান, এই শিমে রয়েছে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ক্যারোটিন,সহ নানান পুষ্টিগুন। এই শিম চাষে কৃষকদের পাশে থেকে আমরা নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। আর্লি-৪৫ জাতের গ্রীষ্মকালীন শিমের বীজ জুন-জুলাই মাসে রোপণ করা হয়। সেক্স ফেরোমন ফাঁদ, হদুল পেপার সহ জৈবিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হচ্ছে এই শিম। স্বল্প সময়ে বিষমুক্ত নিরাপদ এই শিম চাষের সাফল্য আগামীতে আরও চাষাবাদের অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে চাষিদের।

(এসএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test