E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

যশোরে ২৫ কোটি টাকার শীতকালীন সবজির চারা বিক্রির লক্ষ্য

২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ১৯:২৮:২৬
যশোরে ২৫ কোটি টাকার শীতকালীন সবজির চারা বিক্রির লক্ষ্য

স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : যশোরের আব্দুলপুর সবজির চারা উৎপাদনের জন্য সারাদেশে বিখ্যাত। এই গ্রামের কয়েকশো কৃষক শীতকালীন সবজি উৎপাদন না করে শুধু বীজতলা নিবিড় পরিচর্যা এবং বীজ অঙ্কুরোদগমের মাধ্যমে প্রতিবছর কোটি টাকার ব্যবসা করেন। এখানে বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, বেগুনসহ বিভিন্ন প্রকার চারা উৎপাদন করা হয়। বিশেষ ব্যবস্থাপনায় উন্নত মানের এসব সবজির চারা উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৩০ কোটি। যার বাজার মূল্য ২৫ কোটি টাকারও বেশি। এখানকার উৎপাদিত চারা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।

যশোরের চৌগাছা সড়কের আব্দুলপুর গ্রামের রাস্তার দু’পাশে তাকালেই চোখে পড়ে শত শত পলিথিনে ঢাকা সবজির বীজতলা। প্রতি বছর আষাঢ় মাস থেকে এ গ্রামের কৃষকরা বিশেষ ব্যবস্থায় বীজতলা প্রস্তুত করে বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, বেগুন, মরিচসহ বিভিন্ন সবজির বীজ বপন করেন। বীজ অঙ্কুরোদগমের মাধ্যমে চারা গজালে তা পরিচর্যা করে এক মাস বয়সে তুলে অন্য কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হয়।
বর্তমানে বাজারে মানভেদে প্রতি হাজার ফুলকপির চারা ১২শ থেকে ১৫শ টাকা এবং বাঁধাকপির চারা ৫শ থেকে ৮শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, টমেটো ও বেগুন চারা প্রতি হাজার ১হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা এবং অন্যান্য চারা প্রতি পিস ১ টাকা থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে এবছর চারার দাম কম থাকায় চারা উৎপাদনকারী কৃষকরা কিছুটা হতাশ।

আব্দুলপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম দুই বিঘা জমিতে বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, বেগুনসহ বিভিন্ন জাতের চারা উৎপাদন করেছেন। তিনি জানান, এই জমিতে ছয় মাসে চারা উৎপাদন খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এখানে ৬০ থেকে ৭০ লাখ চারা উৎপাদন হবে। আশা করা যায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা বিক্রি হবে। এই অঞ্চলের অন্য চাষিদেরও একই অবস্থা।

ইলিয়াস আলী নামে অন্য এক কৃষক জানান, আমরা জমি বর্গা নিয়ে এখানে ১২ মাস সবজির চারা তৈরির চেষ্টা করি। সার, কীটনাশকের যে দাম তাতে করে খুব বেশি লাভবান হওয়া যায় না। তারপরও এখানে সবজির চারার আবাদ করে আমরা খুশি। বর্তমানে সারাদেশে চারা যায়। অনলাইনের মাধ্যমেও চারা বিক্রি হচ্ছে।

প্রতিবছর ঝিকরগাছা, গদখালী, নাভারণ, চৌগাছা, মণিরামপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গার জীবনডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ, নড়াইল, লোহাগড়া, সাতক্ষীরা জেলার কৃষক ও সবজি চারার পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখানকার উৎপাদিত চারা ক্রয় করে নিয়ে যায়।

চুয়াডাঙ্গা থেকে চারা কিনতে আসা কৃষক আব্দুল লতিফ জানান, আব্দুলপুরের কৃষকদের উৎপাদিত কপির চারার মান ভালো এবং দামও তুলনামূলকভাবে কম। ফলে যাচাই-বাছাই করে এখান থেকেই চারা কেনা সহজ হয়। যে কারণে প্রতিবছর এখানে চারা কিনতে আসি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের অতিরিক্ত উপপরিচালক প্রতাপ মন্ডল জানান, মানসম্মত কপির চারা উৎপাদনে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রযুক্তি ও কারিগরি সহায়তার পাশাপাশি কৃষকদের বাজার ব্যবস্থাসহ নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যশোরে মোট ৪০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন বীজ রোপণ করা হয়। যা থেকে প্রায় ৩০ কোটি চারা উৎপাদন হয়। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

(এসএমএ/এএস/ডিসেম্বর ০৭, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test