E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

‘গুমসংক্রান্ত প্রতিবেদন ওয়েবসাইটে ও বই আকারে প্রকাশ করতে হবে’

২০২৫ জুন ০৪ ১৭:৫৪:০১
‘গুমসংক্রান্ত প্রতিবেদন ওয়েবসাইটে ও বই আকারে প্রকাশ করতে হবে’

স্টাফ রিপোর্টার : অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গুম সংক্রান্ত প্রতিবেদন ওয়েবসাইটে দেওয়ার পাশাপাশি বই আকারে প্রকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। এটি ঘিরে শুধু বাংলাদেশ নয়, বৈশ্বিকভাবেও আগ্রহ রয়েছে। আজ বুধবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় প্রধান বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী নেতৃত্বাধীন গুম কমিশন। প্রতিবেদন হাতে পেয়ে ড. ইউনূস এ কথা বলেন। 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কী ভয়াবহ একেকটি ঘটনা! আমাদের সমাজের ভদ্রলোকেরা, আমাদেরই আত্মীয়-পরিজনরা এই ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে। আপনারা যা যা কিছু পেয়েছেন, তার ভিত্তিতে একটি হরর মিউজিয়াম হওয়া উচিত। গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা।

তিনি আরও বলেন, এই ধরনের বন্দিশালা কেমন হয়, তিন ফিট বাই তিন ফিট খুপড়ির মধ্যে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আটকে থাকার যে নির্মমতা, নিষ্ঠুরতার চিত্র মানুষের কাছে তুলে ধরা উচিত।

কমিশন সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আপনারা ভয়-ভীতি, নানান রকম হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছেন। এ দেশের মানুষের জন্য আপনারা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন। ভবিষ্যতে যারা মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করবেন, আপনারা তাদের অনুপ্রেরণা।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা সদস্যদের কাছে প্রতিবেদনের আশু করণীয়গুলো চিহ্নিত করে কোনটি কোন মন্ত্রণালয়ের আওতায় পড়ছে, তা সুনির্দিষ্ট করে দেওয়ার নির্দেশনা দেন, যাতে করে সরকার স্বল্পসময়ের মধ্যে কাজগুলো শুরু করতে পারে।

একজন কমিশন সদস্য প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ঘটনাগুলো এতটাই ভয়াবহ যে জড়িত অনেক কর্মকর্তা ও অন্যরাও অনুশোচনায় ভোগেন। তারা আমাদের সঙ্গে আত্মশুদ্ধির একটা প্রচেষ্টা হিসেবে যোগাযোগ করেন। দুজন অফিসার লিখিতভাবে এর থেকে পরিত্রাণ চেয়ে চিঠিও লিখেছিলেন। চিঠিগুলো গণভবনে পাওয়া গেছে। তৎকালীন সেনাপ্রধান জনসম্মুখে এই চিঠির কথা স্বীকারও করেছেন।

কমিশন সদস্যরা জানান, কমিশনের কাছে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ এসেছে এবং এর মধ্যে ১ হাজার ৩৫০টি অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে। অভিযোগের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

গুমের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে এখনও তিনশতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার যাতে অন্তত ব্যাংক হিসেবে লেনদেন করতে পারে সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান কমিশন প্রধান।

তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনে কেউ সাত বছর নিখোঁজ থাকলে তাকে মৃত বলে ধরে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আইন সংশোধন করে এটিকে পাঁচ বছর করার সুপারিশ করেছি।

অতিদ্রুত যাতে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে করণীয় জানাতে এ সময় কমিশনকে পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রতিবেদন জমাকালে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া, গুম কমিশন সদস্যনূর খান, সাজ্জাদ হোসেন এবং নাবিলা ইদ্রিস উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/জুন ০৪, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test