E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

তারুণ্যের শক্তি কাজে লাগিয়ে বিশ্বকে বদলে দেওয়ার আহ্বান

২০২৫ অক্টোবর ১২ ১৩:২১:৪৫
তারুণ্যের শক্তি কাজে লাগিয়ে বিশ্বকে বদলে দেওয়ার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার : সমাজে অর্থবহ পরিবর্তন আনতে, বিশ্বকে বদলে দিতে তারুণ্যের শক্তি কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে সারা বিশ্বের তরুণ প্রজন্মকে আরও বেশি দূরদর্শী ও সাহসী হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

রবিবার (১২ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সুইডেন ও নরওয়ের তরুণ রাজনৈতিকদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অনেকে বলে, তরুণরাই ভবিষ্যৎ। আমি বলি, তরুণরাই বর্তমান।

তিনি বলেন, বিশ্ব দ্রুত বদলে যাচ্ছে, আর আজকের তরুণরা আগের প্রজন্মের মতো নয়। তোমাদের বেড়ে ওঠা, প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার— সব মিলিয়ে তোমরা এক নতুন প্রজাতির মানুষ, প্রায় সুপারহিউম্যান। তোমাদের শুধু নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে— ‘আমি কেমন পৃথিবী গড়তে চাই?’ এরপর সেই লক্ষ্যেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হও, কারণ সেই পরিবর্তন আনার সব উপকরণ তোমাদের হাতেই আছে।

সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস ও নরওয়ের হাকন আরাল্ড গুলব্রানসেনের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন সুইডেনের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরুণ নেতারা। তারা হলেন, মডারেট ইয়ুথ পার্টির অ্যালিস ল্যান্ডারহোম, সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক ইয়ুথ পার্টির আরিয়ান তওয়ানা, লিবারেল ইয়ুথ পার্টির অ্যান্টন হোলমলুন্ড, সুইডেন ডেমোক্র্যাটস ইয়ুথ ডেক্সটার ক্রোকস্টেড, গ্রিন ইয়ুথ পার্টির হান্না লিন্ডকভিস্ট ও খ্রিস্টান ডেমোক্র্যাটিক ইয়ুথ পার্টির ম্যাক্স পেলিন।

নরওয়ে থেকে অংশ নেন ইয়াং কনজারভেটিভস ওদা রোহমে সিভার্টসেন, প্রগ্রেস ইয়ুথ পার্টির লার্স মিকায়েল বারস্টাড লোভোল্ড এবং রেড ইয়ুথের সাইভার ক্লেভে কোলস্টাড।

তরুণ এসব রাজনৈতিকের সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, নর্ডিক রিপ্রেজেন্টেশন অফিসের ডেপুটি ডিরেক্টর ক্যারোলিন এবার্গ, স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনস ও এক্সটারনাল রিলেশনস স্পেশালিস্ট কীর্তিজয় পাহাড়ি এবং কমিউনিকেশনস অ্যানালিস্ট এমিলি আন্দ্রেসেন।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তরুণ রাজনীতিকদের সঙ্গে তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করেন। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জুলাই অভ্যুত্থান, তরুণদের অংশগ্রহণ, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই ছিল ঐতিহাসিক মুহূর্ত, বিশেষ করে কারণ অসংখ্য তরুণী তখন একটি ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। আপনারা এমন এক সময়ে এসেছেন, যখন বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আশা করি, আপনারা আমাদের তরুণদের সঙ্গে সময় কাটাবেন এবং তাদের আকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে জানবেন।

তিনি বলেন, জুলাইয়ের বিপ্লবীরা প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের দাবি তুলেছিল, বিশেষত সংবিধান সংস্কারের, যেটিকে তারা ফ্যাসিবাদের মূল কারণ হিসেবে দেখেছিল। আমরা ইতোমধ্যে কয়েকটি সংস্কার কমিশন গঠন করেছি। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গঠনের জন্য আমরা ‘ঐকমত্য কমিশন’ প্রতিষ্ঠা করেছি। কয়েক মাসব্যাপী এই যুক্তিতর্কে ত্রিশটিরও বেশি দল অংশ নেয়। অবশেষে সবাই একমত হয়েছে, এবং আমরা এই মাসেই ‘জুলাই সনদে’ স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এটি আমাদের জাতির ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হবে। এমন কোনো দেশ জানি না, যেখানে এভাবে ঐকমত্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা অতিথি তরুণ নেতাদের বাংলাদেশ ঘুরে দেখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এখানকার প্রতিটি রাস্তাই একেকটি গল্প বলে। দেয়ালের গ্রাফিতি, দেয়ালচিত্র, লেখাগুলো—সবই তরুণদের প্রতিরোধ আর স্বপ্নের জীবন্ত জাদুঘর।

এ ছাড়া বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ ধারণা এবং সামাজিক ব্যবসা ধারণার নিয়ে আলাপ করেন তরুণ এসব রাজনৈতিকরা।

(ওএস/এএস/অক্টোবর ১১, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১২ অক্টোবর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test