E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মালিতে নিহত সার্জেন আলতাফের বাড়িতে শোকের মাতম

২০১৭ সেপ্টেম্বর ২৫ ১৪:৪২:৩৭
মালিতে নিহত সার্জেন আলতাফের বাড়িতে শোকের মাতম

দিনাজপুর প্রতিনিধি : পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত সার্জেন আলতাফ হোসেন (৪০) এর দিনাজপুরের বাড়ি’তে শোকের মাতম বইছে। চিরিরবন্দর উপজেলার ১০ নং পুনট্রি ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর মন্ডলপাড়া গ্রামে সার্জেন আলতাফের বাড়ি। তার পিতা মৃত আব্দুস সাত্তার মন্ডল দু’ছেলে এক মেয়ে’র মধ্যে আলতাফ মেঝো। আলতাফের স্ত্রী নাসিমা ও তার দু’ মেয়ে মিম(১৭) ও সুমাইয়া(১০) নীলফামারী’র সৈয়দপুর সেনানিবাসে অবস্থান করেন। সৈয়দপুর ক্যান্ট্রমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজে মিম একাদ্বশ এবং সুমাইয়া ৫ম শ্রেণিতে পড়া লেখা করেন। সৈয়দপুর সেনানিবাস থেকেই ৪ মাস আগে মিশনে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যোগ দেন সার্জেন আলতাফ হোসেন।

তার মা সুরতজান বিবি (৬০) ক্যানসারে আক্রান্ত। পিতার মৃত্যু’র পর মা সুরতজান বিবি ভাইয়ের বাড়ি চিরিরবন্দরের দক্ষিণ ভবানীপুর গ্রামে অবস্থান করছেন। বিশ্বনাথপুর মন্ডলপাড়া গ্রামে নিহত সার্জেন আলতাফ হোসেন বাড়ি’তে রয়েছে তার বড় ভাই মোশাররফ হোসেন (৪৪)।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে বিদ্রোহীদের হামলায় সার্জেন আলতাফ হোসেন নিহত হয়েছেন এ খবর পেয়ে তার গ্রামের বাড়ি বিশ্বনাথপুর মন্ডলপাড়া এবং সৈয়দপুর সেনানিবাসে অবস্থানরত স্ত্রী,কন্যা,পরিবার,পরিজনের মধ্যে শোকের মাতম বইছে।

আজ সোমবার সরজমিনে গিয়ে কথা হয় নিহত সার্জেন আলতাফ হোসেনের বৃদ্ধ চাচা মোতালেব এর সাথে। তিনি জানালেন, নিহতের ঘটনাটি আমরা রোববার বিকেলে নিশ্চিত হয়েছি। খবর পেয়ে আত্মীয়-স্বজন ভীড় করছে আলতাফের বাড়িতে।
নিহত সার্জেন আলতাফ হোসেনের ক্যানসারে আক্রান্ত মা সুরতজান বিবি ছেলে নিহতের খবর পেয়ে মূর্চা যাচ্ছেন।

রবিবার পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে বিদ্রোহীদের হামলায় বাংলাদেশী তিন শান্তিরক্ষী নিহত হয়। আহত হয় আরো ৪ বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী।

বিদ্রোহীদের সঙ্গে শান্তিরক্ষীদের সংঘর্ষের পর বোমা বিস্ফোরণে এ হতাহতের এই ঘটনা ঘটে বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

নিহতরা হলেন- সার্জেন্ট আলতাফ, ইএমই (দিনাজপুর), ল্যান্স কর্পোরাল জাকিরুল, আর্টিলারি (নেত্রোকোণা) ও সৈনিক মনোয়ার, ইস্ট বেঙ্গল (বরিশাল)।

আহত হয়েছেন মেজর জাদিদ, পদাতিক (ঢাকা), কর্পোরাল মহিম, পদাতিক (নোয়াখালী), সৈনিক সবুজ, পদাতিক (নওগাঁ) ও সৈনিক সরোয়ার, পদাতিক (যশোর)।

উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের গাঁও শহরে নেয়া হয়েছে বলে আইএসপিআর জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, মালিতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সময় শনিবার বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের সংঘর্ষ হয়। আমাদের শান্তিরক্ষীরা সফলভাবে তাদের প্রতিহত করে।

দায়িত্ব পালন শেষে রবিবার ক্যাম্পে ফেরার পথে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের ওপর ফের হামলা হয়।
সাহসিকতা ও সফলতার সাথে তারা পুনরায় সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করে। তবে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের পুঁতে রাখা ই¤েপ্রাভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণে তিনজন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী নিহত এবং চারজন আহত হন।

২০১৩ সালে মালির উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন শহর থেকে বিদ্রোহী জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী তুয়ারেগদের হটিয়ে দেয় ফরাসি বাহিনী। এরপর ওই বছরই দেশটিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মোতায়েন করা হয়।
জাতিসংঘের এই মিশন ‘মিনুসমা’ নামে পরিচিত। এটাই জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত।

(এসএএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test