E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আত্রাইয়ে গজমতখালী জলাশয় দখলের চেষ্টার অভিযোগ

২০১৭ অক্টোবর ০৬ ১৭:১২:৩৪
আত্রাইয়ে গজমতখালী জলাশয় দখলের চেষ্টার অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর আত্রাই উপজেলার হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের গজমতখালী জলাশয়টি স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী জবর দখল করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন জলাশয়টি প্রভাবশালীর সমবায় সমিতির নামে দখলে রাখায় স্থাণীয় মৎসজীবি এবং কৃষকরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। জলাশয়টি উন্মুক্ত করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ইতোমধ্যেই একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, স্থানীয় ইউপি মেম্বার গোলাম সারোয়ার। গত সোমবার এলাকাবাসীর পক্ষে ৩৫০জন স্বাক্ষরিত এ অভিযোগটি ইউএনওর কাছে হস্তান্তর করেন তিনি।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে গজমতখালী জলাশয়টি ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত সম্পত্তি এবং জলাশয়টির শ্রেনী খাল। জলাশয়টির ওপর স্থাণীয় প্রায় দুই শতাধিক মৎসজীবি এবং দেড় শতাধিক কৃষক নির্ভরশীল। দীর্ঘদিন থেকে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি জলাশয়টি দখল করার চেষ্টা করে আসছেন। এতে মৎসজীবিরা সেখানে মাছ শিকার এবং কৃষকরা কৃষি কাজের জন্য জলাশয় থেকে জমিতে পানি সেচ দিতে পারছেন না। মৎসজীবিরা জলাশয় থেকে মাছ শিকার করতে না পারায় অনেকটা কষ্টের মধ্যে পড়েছেন। সেই সঙ্গে কৃষকরা তাদের জমি থেকে উৎপাদিত ফসলে পানি সেচ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। ফলে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। এতে করে ওই জলাশয় নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

গজমতখালী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছেফাতুল্লাহ বলেন, আমরা কৃষকদের কখনোই জলাশয় থেকে পানি উত্তোলন কাজে বাধা দেয়নি। বরং তারাই জলাশয় থেকে অংশ দাবী করে বসে এবং দখল করার জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জলাশয়ের অংশ না দেয়ায় গত এক সপ্তাহ আগে কাজল, ইয়াসিন, মাহাবুর ও কামালসহ কয়েকজন মৎস্যজীবিদের মারপিট করেছে। আমাদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, জলাশয়ে কাঠা দেয়ার কারণ হচ্ছে, বন্যায় ডুবে গেলে মাছ যাতে নিরাপদে আশ্রয় নিতে পারে। সারা বছর সেখান থেকে আমরা মাছ শিকার করতে পারি।

সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ জহুরুল ইসলাম জানান, বন্যার পানি নেমে গেছে এখন ওই জলাশয়ে সকলেই মাছ শিকার করবে। এখানে কাঠা দিয়ে মাছ আটকে রাখার কোন প্রয়োজন নেই। তাদের কাঠা দেয়ার মূল উদ্দেশ্য জলাশয়টি উন্মূক্ত রাখা নয় তাদের দখল নেয়া। সরকার জলাশয় উন্মূক্ত করে দিয়েছেন সকলের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট এটা উন্মূক্ত রাখার জোর দাবী জানান তিনি।

গজমতখালী পাহাড়পুর গ্রামের সালাম, ইয়াসিন আলী খানের ছেলে কালাম জানান, সরকার গজমতখালী জলাশয় সকলের জন্য উন্মূক্ত করে দিয়েছে। কিন্তু মৎস্যজীবিরা এই উন্মূক্ত জলাশয়কে বিভিন্নভাবে কচুরী পানা ও কাঠা দিয়ে সাধারন জনগণের গোসল করা জলাশয়ের পানি থেকে সেচ দেয়ার কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। ওই জলাশয়ে মৎস্যজীবিরাসহ এলাকার দরিদ্র শ্রেনীর মানুষ মৎস্য শিকার করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করবে এটাই সরকারী ঘোষনা আছে। কোনভাবেই কাঠা দেয়া যাবে না।

অভিযোগকারী স্থানীয় ইউপি মেম্বার গোলাম সারোয়ার বলেন, এখানে আমরা কেউ দখল করার জন্য আবেদন করিনি। বরং জলাশয়টি মুক্ত রাখার জন্যই আবেদন করা হয়েছে। যে কোন মুহুর্তে সেখানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে। বিষয়টি উপর মহলকে দেখার জন্য সুদৃষ্টি কামনা করছি।

আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। সার্বিক বিষয়টি দেখার জন্য উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।


(বিএম/এসপি/অক্টোবর ০৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test