E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কিনে দিয়েছেন বাসস্থানের জমি নির্মাণ করে দিচ্ছেন বাড়ি

২০১৭ নভেম্বর ২৮ ১৭:৩৯:১৮
কিনে দিয়েছেন বাসস্থানের জমি নির্মাণ করে দিচ্ছেন বাড়ি

খুরশিদ আলম শাওন, রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) : মানুষ মানুষের জন্য, প্রতিবন্ধি দম্পতিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে চিরন্তন এ সত্য কথাটি সমাজে আবার প্রমাণ করলেন  ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সোহাগ চন্দ্র সাহা।

উপজেলার ৬নং রাতোর ইউনিয়নের রাঘবপুর বোগলাডাঙ্গী গ্রামে দৃষ্টি প্রতিবিন্ধ আসাদুল ইসলাম ও শারীরিক প্রতিবন্ধি খাদিজা বেগম দম্পতিকে জমি কিনে বাড়ী করে দেওয়ার দৃশ্যমান ঘটনায় এলাকা জুড়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এছাড়াও উপজেলার সচেতনমহলও সাধুবাধ জানিয়েছেন এসিল্যান্ডের এমন মহৎ উদ্যোগের।

মঙ্গলবার সরজমিনে গিয়ে কথা হয় প্রতিবন্ধি দম্পতির সাথে, স্ত্রী খাদিজাকে পাশে নিয়ে এসিল্যান্ড কতৃক ক্রয় কৃত জমির উপর দাড়িয়ে আসাদুল আমাদের প্রতিবেদককে জানান, দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা থেকে গান গাইতে আসেন এ গ্রামে। এসে কয়েকদিন গান গেয়ে চলে যেতে চাইলে এ অঞ্চলের মানুষ তাকে আর ফিরে যেতে দিতে চাননি। এ কারনে তিনি থেকে যান ।

পরবর্তীতে ঐ গ্রামের এক সহায় সম্বলহীন পিতার শারীরিক প্রতিবন্ধি কন্যার সাথে বিয়ে দেন গ্রামবাসী।
আসাদুল জানান, বিয়ের পর ভিক্ষাবৃত্তি বা কারো কাছে মাথা নত না করে আমার বউকে আমি গান গেয়ে উর্পাজন করে ভোরন পোষন করছি। সেই সাথে সুখের সংসার করে আসছি। তবে আমাদের ছিলো না শুধু নিদিষ্ট বাসস্থান। বর্তমান এসিল্যান্ড স্যার আমাদের এ গ্রামেই জমি কিনে দিয়েছেন এখন আবার বাড়ী করে দিচ্ছেন।

এসিল্যান্ড আপনার খোজ কিভাবে পেলো প্রশ্নে বলেন, গরমের সময় বাজারের যেখানে সেখানে বিছানা বানিয়ে রাত্রীূ যাপন করতাম। বর্তমান শীতকাল তাই রাত্রী যাপনে ঠান্ডা নিবারনের উদ্যোশে বাজারের এক কোনে একটু জায়গা নিয়ে অস্থায়ী ক্যাম্পের মত ঘর তুলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগের মুখে ঘর তুলা সম্ভব হয়নি।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সরকারী সম্পত্তি রক্ষা করতে ছুটে আসেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সোহাগ চন্দ্র সাহা। এসে আমাদের দেখে এসিল্যান্ড স্যারের অনেক মায়া হয়। দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের খোজ খবর নেন, পরে তিনি আমাদের স্থায়ী বাসস্থানের জন্য জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গত ২২ নভেম্বর ২শতক জমি কিনে রেজিস্টি করে দলিল সম্পাদিত করে দেন আমাদের নামে। বর্তমানে বাড়ী নির্মাণ করে দিচ্ছেন। প্রতিবন্ধি দম্পতি এসিল্যান্ডের এমন মহান উদ্যোগের কথা চিরজীবন মনে রাখবে জানিয়ে তার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এ প্রসঙ্গে রানীশংকৈল ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম কবির ভাষায় বলেন, ‘আমাদের দেশের ছেলেরা কবে বড় হবে কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে।’

তিনি বলেন,আজ এসিল্যান্ডের এমন উদ্যোগে মনে হচ্ছে কবির সে উক্তির বাস্তবায়ন হয়েছে। আরো বলেন,আসলে সমাজের অবেহেলিত এমন প্রতিবিন্ধদের প্রতি যদি এসিল্যান্ডের মত আমরা সবাই এগিয়ে আসি তাহলে সমাজে প্রতিবন্ধিরা আর অবেহেলিত থাকবে না।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন,আসলে আমি খবর পেয়ে অবৈধ স্থাপনা নির্মানে বাধা প্রদানের উদ্দেশ্যে সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু প্রতিবন্ধি দম্পত্তির বাসস্থান নেই জেনে আমি খুব ব্যথিত হয়েছিলাম ভেবেছিলাম এদের জন্য কিছু করা উচিৎ। তাই তাদের জন্য সবার সহযোগিতায় স্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করছি মাত্র।

(কেএএস/এসপি/নভেম্বর ২৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test