E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কথা রাখেনি এমপি ইয়াসিন

২০১৮ জানুয়ারি ০৫ ১৭:৪০:১৯
কথা রাখেনি এমপি ইয়াসিন

রানীশংকৈল, খুরশিদ আলম শাওন : কথায় যায় নি! কার কাছে যায় নি। সবার কাছে গিয়েছি। শুধু একটাই আকুতি জানিয়েছিলাম,আমার স্বামীর চাকরিটা আমাকে দেন। কারন আমার সংসার চলতো শুধুমাত্র এ চাকরীর টাকাই। তাহলে আমি আমার ৩ বছরের ছোট শিশু কন্যাকে নিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারবো।

সর্বশেষ গিয়েছিলাম আমাদের ঠাকুরগাও-৩ আসনের এমপি ইয়াসিন আলীর কাছে তিনি আমাকে কথাও দিয়েছিলেন যত বাধায় আসুক তোমার চাকরি হবে কিন্তু হলো না টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেল এমপিসহ সবাই।

“কথা রাখলো না এমপি ইয়াসিন” অর্থনৈতিক সহযোগিতা করার কথা ছিলো তাও পায় নি। এখন আমি ছোট শিশু কন্যাটিকে নিয়ে দূর্বিসহ এক জীবন যাপন করছি।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় প্রেস ক্লাবে এ কথাগুলো আমাদের প্রতিবেদকে অভিযোগ করে বলছিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার ৩নং হোসেনগাওঁ ইউনিয়নে অবস্থিত রাউতনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকুরিত অবস্থায় মৃত্যু বরন কারী বাবুল প্রধানের স্ত্রী মনিরা বেগম।

জানা যায়, ২০১৭ সালের মার্চ মাসের ১৪ তারিখে হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেন রাউতনগর এলাকার বাসিন্দা ও রাউতনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী বাবুল প্রধান। পরের দিন তার কর্মরত প্রতিষ্ঠানেই জানাযা নামাজ সর্ম্পূণ হয়।

সেখান থেকে দাবী জানানো হয় তার চাকুরীটা যেন তার স্ত্রীকে দেওয়া হয়। সব ঠিক ঠাক ছিলো,মরহুম বাবুল প্রধানের স্ত্রী মনিরা বেগম একজন উচ্চ শিক্ষিত মহিলা তাকে ঐ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ৬ মাসের কম্পিউটার প্রশিক্ষন করে সার্টিফিকেট নিতে বলেছিলেন সেটাও নেওয়া হয়েছিলো।

ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি এমপি ইয়াসিনের ভাগ্নে প্রভাষক সফিকুল ইসলাম মুকুল তিনিও কথা দিয়েছিলেন শতভাগ চাকরীটা করে দেওয়ার।

ঠিক ঠাক থাকার পরে নিয়োগ পরীক্ষার আগ মুহূর্তে পরিবর্তন হতে শুরু করে পেক্ষাপট অবস্থা বুঝে। ছুটোছুটি করতে থাকি প্রধান শিক্ষক,সভাপতি, এমপির বাড়ীতে সবাই কথা দিয়েছিলেন তোমার চাকরীটা অব্যশই হবে। তবে এমপি নিয়োগ পরীক্ষার আগে একবার বলেছিলেন যে টাকার ছড়াছড়ি হওয়া শুরু হয়েছে তারপরও দেখি চিন্তা করো না বলে বিদায় দিয়েছিলেন।

কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষাই পাল্টে গেল চিত্র। নিয়োগ দেওয়া হলো মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের শ্যালক হারুণ আর রশিদ নামক ব্যাক্তিকে। তবে মরহুম বাবুল প্রধানের স্ত্রী মনিরা বেগমের অভিযোগ একজন এমপি’র অনেক ক্ষমতা এবং তার ভাগ্নে ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি তাই ভেবেছিলাম চাকরীটা আমি পাবো। ছোট শিশু কন্যাটিকে মানুষ করতে পারবো। হলো না সে আশা পূরন হলো না।

এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করার কথা ছিলো কিন্তু দীর্ঘ কয়েক মাসও কেউ কোন পদক্ষেপ নেন নি। সংশ্লিষ্ট যার কাছেই যায় সেই বলে ব্যাবস্থা হচ্ছে। এভাবেই প্রায় ৯ মাস অতিবাহিত হলেও আজো প্য়া নি সে অর্থনৈতিক সহযোগিতা। আদৌ পাবো কিনা জানি না। এখন আমি কি করবো ভেবে কুল পাচ্ছি না।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সফিকুল ইসলাম বলেন,চাকরী দেওয়া ক্ষেত্রে আমি আন্তরিক ছিলাম। তবে নিয়োগ পরীক্ষা কমিটি মেধানুসারে নিয়োগ দিয়েছে তাই আমার কিছু করার ছিলো না। একইভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাজির উদ্দীন বলেন,নিয়োগে যে মেধানুসারে এসেছে তাকেই নেওয়া হয়েছে। কোন উৎকোচের বিনিময়ে শিক্ষক নেওয়া হয় নি।

ঠাকুরগাও-৩ আসনের এমপি ইয়াসিন আলী বলেন,আমি বলেছিলাম চাকরীটা যেন ঐ মেয়েটাকে দেওয়া হয়। তবে নিয়োগ কমিটি যাকে মনে করেছে তাকেই দিয়েছে এখানে আমার বলার বা করার কিছু নেই।

(কেএএস/এসপি/জানুয়ারি ০৫, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test