E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শীতে নাকাল উত্তরের জনপদ

২০১৮ জানুয়ারি ১১ ১২:১৯:২৭
শীতে নাকাল উত্তরের জনপদ

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে স্মরণকালের ভয়াবহ শীত দেখা দিয়েছে দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলে। দিনে মেঘলুপ্ত সূর্যের লুকোচুরি আর রাতে ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। ঋতু বৈচিত্যের এই খেলা বেশ কিছুদিন ধরেই দেখছে এ অঞ্চলের মানুষ।

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানিয়েছেন,আজ বৃহস্পতিবার জেলায় সর্ব নিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ৯৯ শতাংশ।

হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশা ও টানা শৈত্যপ্রবাহ এ শীতের তীব্রতা বাড়িয়েছে। ছন্দপতন হয়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। শীত বস্ত্রের অভাবে সব থেকে বেশি কষ্টে আছে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো। একইসাথে দেখা দিয়েছে শীতজনিত নানা রোগ।

বাংলাদেশের ইতিহাসে শীত পড়ার সব রেকর্ড ভেঙে গেছে এবার। ভূগৌলিক কারণে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত সীমান্ত জেলা দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের কয়েক জেলায় এবার প্রকোপ আকার ধারণ করেছে শীত। তীব্র শীতে নাকাল জনজীবন। জবুথবু অবস্থা।

ঘন কুয়াশায় ঢাকা ধাকছে দিনের প্রথম ভাগ। কয়েকদিন ধরে দুপুর গড়ালেও সূর্যের দেখা মিলছে না উত্তরাঞ্চলের কোনো কোনো জেলায়। কোথাও কোথাও কিছুক্ষণের জন্য সূর্যের মুখ দেখা গেলেও বারবার ঢেকে যায় ঘন কুয়াশায়। দিনের বেলায় হেড লাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। কনকনে ঠন্ডায় ঘর থেকে বের হতে পারছেন না খেটে খাওয়া মানুষ। এর পরও প্রয়োজনের তাগিদে তাদের বের হতে হচ্ছে।এদিকে ডায়রিয়া,আমাশয়সহ নানা শীতজনিত রোগে কাহিল হয়ে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধমানুষরা। দেখা দিয়েছে, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি।

দিনাজপুর জেলা সার্জন ডা. মওলা বক্স চৌধীরী জানিয়েছেন,যে সকল শিশু ও বৃদ্ধ মানুষ শ্বাসকষ্টজনিত এবং ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের চিকিৎসা চলছে। জেলার ১৩ উপজেলার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও সদর হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে। সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
অপরদিকে ঘন কুয়াশা আর শৈত্য প্রবহের কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কৃষকের আলু ক্ষেত ও বোরো ধানের বীজতলাসহ বিভিন্ন শীতকালীন শাকসব্জি। বোরো ধানের বীজতলা হলুদ বর্ণ হয়ে মরে যাচ্ছে। আলুর খেতে দেখা দিয়েছে লেটব্রাইটসহ বিভিন্ন রোগ।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোলাম মোস্তফা জানান,বোরো বীজতলা রক্ষা ও রোপনে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।

দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম জানান,শীতের প্রকোপ থেকে জেলার মানুষকে রক্ষার জন্য জেলা প্রশাসন পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে জেলায় ৭৭ হাজার শীতবস্ত্র কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরো ৫ হাজার পিস কম্বল বরাদ্দ দিয়েছে ‘ ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থপনা মন্ত্রণালয় । এছাড়াও শীতার্তদের জন্য ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এসেছে জেলায়। যা বিতরণ করা হবে।

(এসএএস/এসপি/জানুয়ারি ১১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test