E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রশ্ন সংকটে ফটোকপি 

প্রশ্ন ভুল : তিন ঘন্টার পরীক্ষা চার ঘন্টা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা

২০১৮ ফেব্রুয়ারি ১০ ১৬:৪০:১৬
প্রশ্ন ভুল : তিন ঘন্টার পরীক্ষা চার ঘন্টা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : আগৈলঝাড়ায় কেন্দ্র সচিব ও হল সুপারের দ্বায়িত্বে অবহেলার কারণে তিন ঘন্টার এসএসসি’র গণিত পরীক্ষা  চার ঘন্টা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। তারপরেও পুরান বছরের ভুল প্রশ্নপত্রে চার ঘন্টা পরীক্ষা নেয়ার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এমসিকিউ পরীক্ষার প্রশ্ন ভুল, সৃজনশীল পরীক্ষার প্রশ্ন সংকটে ফটোকপি প্রশ্ন সরবরাহ। পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে উদ্বিগ্ন ও হতাশা প্রকাশ করছেন পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা। ইউএনও’র সত্যতা স্বীকার। 

তিন ঘন্টার পরীক্ষা চার ঘন্টা ব্যাপী নেয়ার ঘটনা মুহুর্তের মধ্যে শহরে ছড়িয়ে পরলে সংবাদ কর্মীরা সংবাদ সংগ্রহের জন্য কেন্দ্রের সামনে গেলে সেখানে উপস্থিত পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আহম্মেদ রাসেল কোন সাংবাদিককে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেননি। তিনি কেন্দ্রের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে পরীক্ষা নিচ্ছিলেন।

মোবাইল ফোনে তার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে চার ঘন্টা পরীক্ষা নেয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রশ্নপত্র দেরীতে দেয়ায় তাদের পরীক্ষার সময় বাড়ানো হয়েছে।

অবশ্য তিনি প্রথমে ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়ার কথা অস্বীকার করলেও পরে পরীক্ষা দিয়ে বেড় হওয়া শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে তার কাছে পুনরায় ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত ভুল। তবে বিষয়টি তাৎক্ষনিক বরিশাল শিক্ষা বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে।

বোর্ডের বরাত দিয়ে ইউএনও রাসেল আরও জানান, বোর্ড তাকে মৌখিকভাবে বলেছেন যে, উত্তরপত্র দেখার সময় ওই ভাবেই মুল্যায়ন করা হবে।

নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রে মোট ৩৮৩জন পরীক্ষার্থী ছিল। এর মধ্যে ৮১জনকে ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়েছিল। তবে তাদের ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহর খবর কেন্দ্র সচিব বা হল সুপার তাকে জানায়নি। সৃজনশীল প্রশ্নপত্র সরবরাহ করার পরে পরীক্ষার্থীদের কাছে ভুলের বিষয়টি ধরা পরে। এই ৮১জন পরীক্ষার্থীর ভাগ্যে কি ঘটবে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।

উপজেলার কাঠিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৬নং হলের পরীক্ষার্থী অপূর্ব বাড়ৈ, অমিও অধিকারী, অরিন্দমসহ অনেকেই জানান, তাদের হলে ১২জন পরীক্ষার্থী শনিবার গনিত পরীক্ষায় অংশ নেয়। এরকম সকল হলেই পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। যথাসময়ে তাদের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়। পরীক্ষার্থীরা প্রথমে এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অন্তত ত্রিশ মিনিট পর তাদের ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে বলে পরীক্ষার্থীরা হল সুপার ও কেন্দ্র সচিবকে অবহিত করে।

কেন্দ্র সচিব ও শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ ও হল সুপার কাঠিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিল চন্দ্র কর পরীক্ষার্থীদের কথায় ভ্রুক্ষেপ না করে সরবরাহকৃত প্রশ্নেই তাদের উত্তর লিখতে বলেন। শিক্ষার্থীরা সেই মোতাবেক ২০১৬ সালের সরবরাহ করা ভুল প্রশ্নে পরীক্ষায় অংশ নিতে বাধ্য হয়।

এমসিকিউ পরীক্ষার পর সরবরাহকৃত সৃজনশীল প্রশ্ন বিতরণকালে প্রশ্নপত্রে সংকট ধরা পরে। এসময় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বন্ধ করে পাশ্ববর্তি পরীক্ষা কেন্দ্র ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমী ও গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ফটোকপি করা প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। সরবরাহকৃত ফটোকপি করা সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেয় পরীক্ষার্থীরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, দ্বায়িত্বে অবহেলার কারণে তিনি কেন্দ্র সচিব, হল সুপারসহ অন্যন্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে শুপারিশ করবেন। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

(টিবি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test