E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পার্বতীপুর রেল হেড ডিপোতে জ্বালানি তেলের সংকট, শঙ্কিত কৃষক

২০১৮ ফেব্রুয়ারি ১৫ ১৪:৩৯:৩৬
পার্বতীপুর রেল হেড ডিপোতে জ্বালানি তেলের সংকট, শঙ্কিত কৃষক

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরের পার্বতীপুুর রেলওয়ে হেড ডিপোতে দুুই/তিন সপ্তাহ ধরে জ্বালানি তেল (ডিজেল) সংকট দেখা দিয়েছে। অয়েল কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা জ্বালানি তেল সরবরাহ ঠিকমত দিতে না পারায় রংপুর বিভাগের ৮ জেলার প্রায় ৬৬২টি পাম্প ও এজেন্টগুলোতে চলছে ভয়াবহ তেল সংকট। ফলে বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কৃষক। তারা বলছেন, তেল সংকটের কারণে সেচ কাজে বিঘ্ন ঘটছে।

দিনাজপুর জেলা পাম্প মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক রওশন আলী ও সড়ক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন সাজুু জ্বালানি তেল সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, খুলনায় পর্র্যাপ্ত জ্বালানি তেল রয়েছে। শুধু রেলওয়ের কর্মকর্র্তা-কর্র্র্মচারীদের গাফিলতির কারনে খুুলনার দৌলতপুুর রেল ডিপো থেকে পার্বতীপুুর রেলওয়ে হেড ডিপোতে তেলের ওয়াগন পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় পার্বতীপুুর রেলওয়ে হেড ডিপো জ্বালানি তেল ডিজেল শুন্য হয়ে যেতে পারে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার পার্বতীপুর ডিপোতে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই ডিপোতে প্রতিদিন তিন কোম্পানির ডিজেল তেলের চাহিদা রয়েছে প্রায় ১৮ লাখ লিটার। সেখানে তিন কোম্পানী মিলে ফেব্রুয়ারি ১২ তারিখ পযুর্ন্ত রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যেমে তেল পেয়েছে মাত্র ১ কোটি ২০ লাখ লিটার। পাম্প ও এজেন্ট মালিকরা জ্বালানি তেল নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছে দিনের পর দিন।

দেশের অন্যান্য খুলনা বাঘাবাড়ী ও চিলমারী ডিপো থেকে তেল সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও পার্বতীপুুর রেলহেড ডিপো থেকে জ্বালানি তেল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে।

ডিপোর পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার সংশ্লিষ্ট কর্র্মকতারা জানান, ইতোপুর্বে রেলওয়ে কর্তৃৃপক্ষ ৪টি তেলের রেক (প্রতি রেকে ৩০টি তেলবাহী ওয়াগন) দিয়ে তেল সরবরাহ করতেন। বর্তমানে রেল ১টি তেলবাহী রেক কমিয়ে দিয়ে ৩টি ( ৯০ টি ) তেলবাহী ওয়াগন দিয়ে তেল সরবরাহ করছেন। এরপরও ধীরগতি জটিলতা রয়েছে। খুলনা থেকে পার্র্বতীপুুর তেলবাহী রেক আসতে ২ থেকে ৩ দিন সময় লেগে যায়। ফলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সময়মতো তেল সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে বোরো মৌসুুমে তেল সংকটে পড়েছে সাধারণ কৃৃষকরা। যে কোন সময় একেবারে তেলশূন্য হয়ে পড়েতে পারে পার্বতীপুুর রেলওয়ে হেড ডিপো।

অন্যদিকে চিলমারী ডিপোর তেল তলানিতে নেমে এসেছে। সেখানে যে কোনো মুহূর্তে ডিজেল ও পেট্রোলের সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। ইতোপূর্বে ভারতের আসাম থেকে পার্বতীপুুর রেলওয়ে হেড ডিপোতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হলেও ইরি বোরো মৌসুুমের কারনে বর্র্তমানে তা বন্ধ রয়েছে।

অনেক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, পাম্পে এখন ১০ লিটার ডিজেল চাইলে দেওয়া হচ্ছে ৪/৫ লিটার। জমিতে সেচ দেওয়ার ব্যাঘাত ঘটছে। তেলের এ সংকট দ্রুত সমাধান না হলে ইরি বোরো আবাদ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে তাদের।

পার্বতীপুুর রেলওয়ে হেড ডিপোতে তেল নিতে আসা বেশ ক’জন পেট্রোল পাম্প মালিক জানান, প্রতিদিন তাদের পাম্পে নয় হাজার লিটার তেল প্রয়োজন হলেও দেওয়া হচ্ছে সাড়ে ৪ হাজার লিটার। তাও আবার একদিন বা দুদিন পর পর। এ ভাবে চলতে থাকলে বোরো আবাদ নিয়ে সংকটে পড়বেন কৃষকরা। বিঘ্নিত তাই দ্রুত এ সংকট সমাধানের আহ্বান জানান মলিকগণ।

রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যেমে তেল পরিবহন নিয়ে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধায় রেলওয়ে রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান পরিবহন কর্মকর্র্তা (শাহানেওয়াজ) বলেন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চিঠি পেয়েছি। তেল পরিবহনের বিষয়টি নিয়ে তিনি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমাধান করবেন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

তিনি আরো বলেন, বর্র্তমানে বিটিও (তেল পরিবহনের ওয়াগন) নিয়ে সংকটে রয়েছেন। প্রায় ৪৫টি বিটিও মেরামতের অপেক্ষায় রয়েছে।

তেল পরিবহন জঠিলতা নিয়ে মতামতের জন্য রেলওয়ে পশ্চিম জেনারেল ম্যানেজার/রাজশাহী একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় মতামত নেয়া সম্ভব হয়নি।

ডিপোর তিন কোম্পানির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ আশা প্রকাশ করে বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তেলবাহী ওয়াগন পরিবহনে মনোযোগি হলে দ্রুত তেল সংকট কেটে যাবে।

(এসএএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test