E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টাঙ্গাইলের লৌহজং নদী এখন বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠ

২০১৮ এপ্রিল ২১ ১৫:৩৯:৩৪
টাঙ্গাইলের লৌহজং নদী এখন বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠ

রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এক সময়ের খরস্রোতা লৌহজং নদী এখন বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠে পরিনত হয়েছে। নদীর বুকজুড়ে চাষ করা হয়েছে ধান সহ নানা ফসল। সবুজের সমরোহ নদীটির বুকজুড়ে। কালক্রমে নদীর গতিপথ রোধ হওয়ায় নির্জীব হয়ে পড়ে নদীটি। নদীটির উজানে মূল স্রোতধারায় অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণে নদীটি স্রোতহীন হয়ে পড়ে। ফলে ধীরে ধীরে বালু স্তর পড়ে ভরাট হয়ে পড়েছে। সে সুযোগে স্থানীয়রা যে যার মতো নদীর বুকে চাষ করছেন নানা শস্য।

এছাড়া দু’পাড়ে গড়ে ওঠেছে অবৈধ স্থাপনা। সে কারনে নদীটি ঐতিহ্য হারিয়ে দিন দিন মরতে বসেছে ।

অথচ এক সময় নদীর বুকে বড় বড় লঞ্চ স্টীমার চলাচল করতো। ভাটিয়ালি, জারি ,সারি ও ভাওইয়া গানে মুখরিত ছিল নদীর পাড়ের এলাকা। সে সময়ে সহজ যোগাযোগের একমাত্র সহজ মাধ্যম ছিল নদী পথ। এসব কিছুই এখন শুধুই স্মৃতি। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে নদীটি প্রায় পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। নদীর বুকে জেগে উঠেছে ধূ ধূ বালু চর। নদীর তীর ঘেষে ও নদীর মাঝে কোথাও কোথাও ধান, পাট ছাড়াও শাক সবজির চাষ করা হয়েছে ।

নদীর ঐতিহ্য নিয়ে স্থানীয় সুবল রাজবংশী(৬৫) জানান, তার বাপ দাদার পেশা মাছ ধরা। মাছ ধরে বিক্রি করাই জীবন-জীবিকা তাদের। এক সময় নদীতে বড় বড় শোল, বোয়াল ও গজার মাছ পাওয়া যেত। এখন চুনো পুটিও পাওয়া কষ্টকর। পালবাহী নৌকার মাঝি মাল্লাদের গানে মুখরিত থাকতো নদী পাড় এলাকা ।

বাথুলী গ্রামের কার্তিক চন্দ্র ভৌমিক ও সুবর্ণতলী গ্রামের শাখাওয়াত হোসেন জানান, বাপ দাদার মুখে শুনেছি এক সময় এ নদীতে বাইচের নৌকা ও লঞ্চ স্টীমার সহ ছোট বড় নৌকা চলাচল করতো। সে সময় নদীতে প্রচুর মাছও পাওয়া যেত । বর্তমানে নদীটি দখল আর দুষণের ফলে জেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। এদিকে উপজেলার এলেনজানি নদীর নাল্লাপাড়া এলাকায় নদীর বুকে অবৈধ স্থাপনা নির্মানের অভিযোগ উঠেছে ।

মওলানা ভাসানি ডিগ্রী কলেজের সহকারি অধ্যাপক মো. আমিনুজ্জামানের জানান, কালের আবর্তনে নদী-নালা, খাল-বিল এভাবে ভরাট হতে থাকলে এক সময় চরম প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটবে।

তিনি আরো জানান, এভাবে চলতে থাকলে কালের পরিক্রমায় পানির অভাবে মানুষ চরম সংকটে উপনীত হবে। তবে নদীর পুনঃ খননই প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষার একমাত্র উপায়। উপজেলার সচেতন মহলের দাবি পুনরায় খননের মাধ্যমে তার চিরচেনা রূপ ফিরে পেতে পারে।


(আরকেপি/এসপি/এপ্রিল ২১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test