E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষিত

বরিশালে দুই বছরেও পাঁচ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিল হয়নি

২০১৮ মে ০৩ ১৬:৫২:২৭
বরিশালে দুই বছরেও পাঁচ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিল হয়নি

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীর নির্দেশ সত্যেও দীর্ঘ ২ বছর পরেও বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সাকোকাঠি ও শাহজিরা গ্রামের ৫ জন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার গেজেট আজও বাতিল হয়নি। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াতো দুরের কথা তাদের ভাতাও বন্ধ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। 

উপজেলার সাকোকাঠি গ্রামের বাসিন্দা ও মুক্তিযুদ্ধকালীন ৯ নম্বর সেক্টরের সাব-সেক্টরের সেকেন্ড ইন কমান্ড বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অবঃ) এমএ হক বীর বিক্রম, একই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব খান, শাহজিরা গ্রামের বাসিন্দা ও শরিকল ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আঃ রহিম সরদারসহ স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সাকোকাঠী গ্রামের মোতালেব শিকদার, তাজেম আলী চৌকিদার, খালেক মোল্লা ও পাশ্ববর্তী সাহজিরা গ্রামের আঃ রহমান খান, মোবারেক হোসেন হাওলাদার মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও দীর্ঘদিন যাবত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করছেন। তাদের ভাষ্যমতে,এরা কেউই ৭১ সালের মহান যুদ্ধে অংশ নেন নাই বা মুক্তিযোদ্ধাদের কোন ধরনের সহায়তা করেন নাই। তাজেম আলী চৌকিদার ছিলেন একজন চিহ্নিত রাজাকার।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী সাকোকাঠি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব খান ওই ৫ জন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার গেজেট ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বাতিলের দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।

তিনি জানান, এরা ভুয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে জালজালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত হয়ে দীর্ঘদিন যাবত ভাতা তুলছেন।

অভিযোগ পেয়ে মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ২০১৬ সালের ৭ মার্চ বরিশালের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ প্রদান করেন।

খবর নিয়ে জানা গেছে, মন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে বিষয়টি তদন্ত করে তৎকালিন গৌরনদীর নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান কে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক। তবে নির্বাহী অফিসার নিজে তদন্ত না করে তদন্তভার ন্যাস্ত করেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ আবুল কালাম আজাদের ওপর। কিন্তু ওই পর্যন্তই, সমাজ সেবা কর্মকর্তা নানান তালবাহানা করে বিষয়টি নিয়ে কালক্ষেপন করে আজও রিপোর্ট প্রদান করেননি।

এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অবঃ) এম.এ হক বীর বিক্রম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্ষোভের সাথে জানান, আমি ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালিন সময়ে ৯ নম্বর সেক্টরের সাব- সেক্টরের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছি। আমার এলাকার ৫ ব্যাক্তি মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও ভাতা উত্তোলন করছেন। এদের একজন স্বাধিনতা বিরোধী রাজাকার। একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে এটা মেনে নিতে পারিনা। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি জেনেও তাদের ভাতা বন্ধ করছেনা, এটা মহা অন্যায় ও চরম দুর্নীতি।

এ ব্যাপারে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তবে যে ৫ ব্যাক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তারা জানান, আমরা গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাা অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগের ব্যাপারে গৌরনদী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি জটিল হওয়ায় আমি তদন্ত করতে অপারগতা প্রকাশ করে কর্র্তৃপক্ষের কাছে লিখিত মতামত ব্যক্ত করেছি। এর বেশী কিছু বলতে তিনি রাজি হননি।

এ ব্যাপারে গৌরনদীর নব নিযুক্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদা নাছরিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, কিছুদিন আগে আমি এ বিষয়টি জানতে পেরেছি। তবে বিষয়টি অনেক আগের, তার পরেও তদন্ত সাপেক্ষে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

(টিবি/এসপি/মে ০৩, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test