E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ঘোষণা বন্দর ব্যবহারকারী ৭ সংগঠনের

২০১৮ জুন ০১ ১৭:৩৩:২৬
অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ঘোষণা বন্দর ব্যবহারকারী ৭ সংগঠনের

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি : বেনাপোল বন্দর দিয়ে এখন থেকে ভারত থেকে আমদানি করা পণ্য শুল্ককরাদি পরিশোধ শেষে বিজিবি তা আটক করলে তাৎক্ষনিকভাবে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বন্দর ব্যবহারকারী ৭ টি সংগঠন। 

কাস্টমস-বিজিবির যৌথ বাঁশকল পার হওয়ার পর বিজিবি কর্তৃক পুনরায় তলাশীর নামে হয়রানি করা হচ্ছে এ অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। গত বুধবার বিজিবির এ ধরনের হয়রানি বন্ধ না করলে বন্দর ব্যবহারকারী ৭ টি সংগঠন বেনাপোল বন্দরে অনির্দিস্টকালের ধর্মঘট পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোশিয়েশন, আমদানি রফতানি কারক সমিতি, ট্রাক মালিক সমিতি, ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি, ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন, সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফ এসোশিয়েশন, ও বন্দর শ্রমিক ইউণিয়ন এই সিদ্ধন্ত গ্রহন করে। গত ২৪ মে মোস্তফা এন্ড ব্রাদার্স নামে ঢাকার এক আমদানি কারক ভারতে থেকে ৭১০ প্যাকেজ এসোরটেড গুডস আমদানি করেন বেনাপোল বন্দর দিয়ে। যার বি ই নাম্বার ২৯৭৮৭ তারিখ ৩০/৪/১৮। পণ্য চালানটি বন্দরে প্রবেশের পর কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী ২ টি দলে বিভক্ত করে পৃথক ভাবে মালামাল পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মোট মালের ওপর সাড়ে ৫ টন লোড দিয়ে অতিরিক্ত আরো ১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করে।

কমিশনার তার বিচারিক কাজ সম্পন্ন শেষে ১০ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে ৬টি ট্রাকে করে পণ্য চালানটি খালাশ প্রদান করেন। কাস্টমস বিজিবি যৌথ বাঁশ কল অতিক্রমের সাথে সাথে ৬টি ট্রাকই আটক করে বিজিবি সদস্যরা। পরে বেনাপোল বিজিবি ক্যাম্পে ৭ দিন আটকে রেখে মালামাল পুনরায় তলাশী করে ২ টন মাল বেশী পাওয়া যায় বলে আমদানিকারককে জানিয়ে দেয়া হয়। আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো ট্রাস্ক ফ্লোরের মাধ্যমে ট্রাকের পণ্য পুনরায় তল্লাশির আবেদনে যশোর থেকে একজন মেজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়।

পরে মেজিস্ট্রেট জানান, একবার কমিশনার কর্তৃক বিচারিক কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর আর একবার বিচার করে সম্ভব নয় বলে অভিমত জানালে পণ্য চালানটি বিজিবি ছেড়ে দেয়। পরে বন্দর ব্যবহারকারীদের তাৎক্ষনিক সভায় সিদ্ধান্ত হয় বিজিবি এককভাবে পণ্যচালান আটক করলেই বেনাপোল বন্দরে তাৎক্ষনিক অনির্দিস্টকালের ধর্মঘট পালন করা হবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি শামসুর রহমান, বেনাপোল সিএন্ডএফ এজন্টস এসোশিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন, সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা, সিনিয়ির সহ সভাপতি নুরুজ্জামান, আমদানি রফতানি কারক সমিতির সহ সভাপতি আমিনুল হক, ট্রান্স পোর্ট মালিক সমিতির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোওালেব, সিএন্ডএফ কর্মচারী ইউণিয়নের সভাপতি মুজিবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন।

গত ২২ জানুয়ারি স্বরাস্ট্র মন্ত্রনালয়ের সম্মেললন কক্ষে স্বরাস্ট্র মন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় বলা হয় সুনির্দিস্ট অভিযোগ ছাড়া রাস্তায় চেকিং না করাই ভালো। নির্ধারিত সীমানার বাইরে চেকিং করতে হলে জেলা টাস্কফ্লোরের মাধ্যমে তা করতে হবে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৬/৭শ ট্রাক মালামাল আমদানি হয় ভারত থেকে, ২/৩ ’শ ট্রাক পণ্য রফতানি হয় ভারতে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চলতি অর্থ বছরে বেনাপোলে ৪ হাজার ৫৯০ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারন করেন। বিজিবির এ ধরনের হয়রানির কারনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে রাজস্ব আয়ের লক্ষমাত্রা পুরন হচ্ছে না বলে ব্যবসায়ী সংগঠন গুলো জানান।

চলতি অর্থ বছরে এখনও ২৭ মে পর্যন্ত ৩৯৩.৬৭ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে। বিজিবির অনৈতিক উদ্দেশ্যে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান বেনাপোল স্থল বন্দরের সংশিষ্ট বন্দর ব্যাবহারকারীরা।

(এস/এসপি/জুন ০১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test