E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আগৈলঝাড়ায় ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমী মাঠ এক যুগ পরিত্যাক্ত  

২০১৮ জুলাই ১৩ ১৫:৩৪:৫১
আগৈলঝাড়ায় ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমী মাঠ এক যুগ পরিত্যাক্ত  

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের ৯৯ বছরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমী’র মাঠ এক যুগ যাবত পরিত্যাক্ত হওয়ায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্রীড়া চর্চা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ রয়েছে বিদ্যালয়ের প্রতিদিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সমাবেশ ও সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন। 

বছরের পর বছর এভাবে পানি জমে, নির্মান সামগ্রী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখার কারণে ময়লার ভাগারে পরিণত হয়ে পরিত্যাক্ত হয়ে গেছে বিদ্যালয়ের সু-বিশাল খেলার মাঠের একটি বড় অংশ। বালিকা বিদ্যালয় ব্যাতীত মাধ্যমিক স্তরে উপজেলা সদরের একমাত্র বিদ্যালয়টিতে প্রশাসন ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় নিয়মিত খেলাধুলা করতে না পারায় শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯১৯সালে ক্ষণজন্মা ভেগাই হালদার তার নিজ নামে “ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমী’ নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। কালক্রমে বিদ্যালয়টি উপজেলা সদরের অন্যতম বিদ্যালয়ে পরিণত হয়। সূত্র মতে, বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত আট শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়ের একমাত্র মাঠে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছাড়াও নিয়মিত খেলাধুলা, প্রতিদিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সমাবেশ ও সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন বাধ্যতামুলক থাকলেও পরিত্যাক্ত মাঠের কারণে এখন সব কিছুই দীর্ঘ দিন যাবত বন্ধ রয়েছে।

বিদ্যালয়ের মাঠের অংশ বিশেষ নীচু হওয়ায় ও কর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের অবহেলার কারণে মাঠটি সংস্কার না করায় বৃষ্টির পানি জমে ও যত্রতত্র স্থানে নির্মান সামগ্রী ফেলে রাখায় দীর্ঘ কয়েক বছর পর্যন্ত মাঠের সকল নিয়মিত কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। পরিত্যাক্ত মাঠের কারণে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় শিশু-কিশোর ও যুবকেরাও উপজেলা সদরের এই মাঠে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। খেলাধুলা বন্ধের কারণে তারা আকৃষ্ঠ হয়ে পরেছে আকাশ সংস্কৃতি ও আধুনিক মোবাইল ফোনসহ মাদকতার ভয়াল করাল গ্রাসে।

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সরদার হারুন রানা জানান, আগে এই বিদ্যালয় মাঠে শুধু স্কুলের শিক্ষার্থীরাই নয় আন্তঃ স্কুল, আন্তঃ উপজেলার সকল ক্রীড়া অনুষ্ঠিতসহ প্রতিদিন বিকেলে উপজেলার সর্বস্তরের লোকজন খেলায় অংশ গ্রহণ করত। বিদ্যালয় ছুটির পর মাঠে মৌসুম অনুযায়ি ফুটবল, ভলিবল, ক্রিকেট ও কাবাডি খেলা হতো; কিন্তু পরিত্যাক্তর কারণে এখন সকল খেলাধুলা অন্তত এক যুগ যাবত বন্ধ রয়েছে। কাঁদা-পানি আর ময়লার কারণে বিদ্যালয় মাঠে সহজে কেউ ওই মাঠ পাড়ায় না। মাঠ ব্যবহার না করার কারণে একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের ক্রীড়া ও জাতীয় সংগীত পরিবেশন বন্ধ রয়েছে তেমনি ময়লার কারণে দূষিত হচ্ছে বিদ্যালয়ের পরিবেশ।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যতীন্দ্র নাথ মিস্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বর্ষা মৌসুমে মাঠে পানি জমে খেলার বিঘ্ন হয়, এছাড়াও যত্রতত্র নির্মান সামগ্রী রাখায় মাঠের আগের পরিবেশ বলেও জানান তিনি। তবে স্কুলের বারান্দায় বা মাঠের শুকনা জায়গায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করার হয় দাবি করে দীর্ঘ দিনেও কেনন মাঠ সংস্কার করা হয়নি তার কোন উত্তর দেননি তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আহম্মেদ রাাসেল জানান, উল্লেখিত মাঠটি উপজেলা সদরের মাধ্যমিক স্তরের একমাত্র খেলার মাঠ। এখানে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের আগেই দ্বায়িশীল হওয়া উচিত ছিল। পাশাপাশি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও স্থানীয় প্রশাসনের দ্বায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসা উচিত ছিল, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। বর্তমানে স্কুলে ম্যানেজিং কমিটি নেই। এডহক কমিটি চেয়ে বোর্ডে প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তি কমিটির সদস্যদের মাঠ সংস্কারের তিনি সকল প্রকার সাহায্য ও সহযোগী করার আশ্বাস দিয়ে পূর্বের মত আবার ওই মাঠে সকলের খেলার পরিবেশ ফিরিয়ে আনবেন বলেও জানান তিনি।

(টিবি/এসপি/জুলাই ১৩, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test