E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরিশালে চার মেয়র প্রার্থীর ভোট বর্জন

২০১৮ জুলাই ৩০ ১৭:৫৩:৫৬
বরিশালে চার মেয়র প্রার্থীর ভোট বর্জন

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : কেন্দ্র দখল, ভোট কারচুপি ও এজেন্টদের মারধরের অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের চার মেয়র প্রার্থী। সোমবার ভোটগ্রহণ চলাকালে তারা এ ঘোষণা দেন।

এরা হলেন- বিএনপির প্রার্থী মো. মজিবর রহমান সরওয়ার, সিপিবির প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ওবাইদুর রহমান মাহাবুব ও বাসদের প্রার্থী মনীষা চক্রবর্তী। তবে শেষ সময়ে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস।

এর মধ্যে দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন বিএনপির প্রার্থী মো. মজিবর রহমান সরওয়ার।

তিনি বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে নগরীর ৮০টির বেশি কেন্দ্র দখলে নিয়ে নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা। তারা সেখানে প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে বাক্সে ফেলছে। এছাড়াও ভোট কারচুপি, এজেন্টদের মারধর ও কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ তোলেন সরওয়ার।

এরপর দুপুর সোয়া ১টার দিকে বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে সিপিবির প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, একটি কেন্দ্র নেই যেই কেন্দ্রটি দখল হয়নি। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা সকল কেন্দ্র দখল করে নৌকা প্রতীকে সিল মারছে। এটা কারচুপি নয়, এটা ভোট ডাকাতি। তাই এই নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।

এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে নগরীর টাউন হলের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ওবাইদুর রহমান মাহাবুব।

তিনি বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে তার এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেয়া হেয়েছে। এমনকি ভোটারদের কাছ থেকে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে নৌকায় সিল মারছে। এছাড়াও কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে তার ‘হাতপাখা’ প্রতীকের মার্কা রাখা হয়নি। ফলে ভোটাররা হাতপাখা প্রতীকে ভোট দিতে পারছেন না বলেও অভিযোগ এসেছে।

এরপর সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে বরিশাল নগরীর ফকিরবাড়ি রোডে বাসদের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন বাসদের প্রার্থী মনীষা চক্রবর্তী।

তিনি অভিযোগ করেন, ১০০টি কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের মারধর করে বের করে দিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মেরেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। এছাড়া তার মই মার্কা সিল মারা ব্যালট ভোটারদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। বেশির ভাগ কেন্দ্রে ভোটারদের মেয়র প্রার্থীদের ব্যালট দেয়া হচ্ছে না। ভোটাররা ব্যালট চাইলে মেয়র প্রার্থীদের প্রতীকে ভোটের প্রয়োজন নেই বলে বুথ থেকে ভোটারদের বের করে দিচ্ছে।

মনীষা চক্রবর্তী বলেন, সকাল সোয়া ৯টার দিকে সরকারি বলিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৪ নম্বর বুথে একাধিক ব্যালটে আগে থেকেই সিল মারা দেখে প্রতিবাদ করলে আমাকে লাঞ্ছিত করে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। এসব বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবহিত করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

অপর দিকে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বরিশাল নগরীর অক্সফোর্ড মিশন রোগে নিজ বাস ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস। তিনি নতুন তফসিল দিয়ে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।

মেয়র প্রার্থীদের অভিযোগ ও নির্বাচন বর্জনের বিষয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, চার প্রার্থীর অভিযোগ পেয়েছি। তাদের অভিযোগ ও দাবির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে জানানো হবে। নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

সোমবার সকাল ৮টা থেকে বরিশালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এবার মেয়র পদে ৬ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৯৪ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

(টিবি/এসপি/জুলাই ৩০, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test