E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাটোরে আধিপত্য নিয়ে শ্বশুর-জামাতার বিরোধ

২০১৪ জুলাই ১৯ ১৫:১০:১৭
নাটোরে আধিপত্য নিয়ে শ্বশুর-জামাতার বিরোধ

নাটোর  প্রতিনিধি : এলাকার আধিপত্য নিয়ে পুর্ব বিরোধে নাটোরের সিংড়ায় প্রতিপক্ষ আওয়ামীলীগ কর্মীরা ৮ বিএনপি নেতা-কর্মীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে। শুক্রবার সন্ধ্যায় সিংড়া উপজেলার দুর্গম ছতর গ্রামে এই হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া উপজেলার দুর্গম ছতর গ্রামে আধিপত্য নিয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা জুয়েল মোল্লার সাথে প্রতিবেশী উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি আব্দুস সোবাহানের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় জুয়েল মোল্লার সমর্থকরা প্রতিপক্ষ ইউনিয়ন বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ মহুরী, রহমত সরদার, সাইফুল ইসলাম, ফিরোজ খান, সালাম,আহাদ আলী, আসমত খান ও আহম্মদ আলীর বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। হামলাকারীরা বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ মহুরী সহ ওই ৮টি বাড়ি থেকে নগদ টাকা, সোনার গহনা, ধান সহ ১৪ টি গরু লুট করে নিয়ে যায়।

বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ মহুরী জানান, ২০/২৫ জন সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে তার বাড়ি সহ ৮ বিএনপি কর্মীর বাড়িতে চড়াও হয়। এসময় বাড়ির নারী-পুরুষ সকলেই প্রাণ বাঁচাতে বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ দূরত্বে চলে গেলে হামলাকারীরা লুটপাট চালায়। তারা এসব বাড়ি থেকে নগদ ১২ লাখ টাকা, ১৬ ভড়ি সোনার গহনা, ১০ মন চাউল, ৬০ বস্তা সার সৌর বিদ্যুতের ১০ টি সোলার, ৮ টি পাওয়ার ট্রিলার সহ অর্ধ কোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। তারা রোজাদাররা যাতে পানি না পায় সেজন্য নলকুপ কেটে ফেলে। এছাড়া রহমত সরদারের বাড়ি থেকে ৬ টি, সাইফুলের ৩টি, আহাদ আলীর ২টি, ফিরোজ খানের ২টি ও আসমত আলীর বাড়ি তেকে ১টি সহ ১৪টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে।

তবে প্রতিপক্ষ জুয়েল মোল্লা হামলার কথা স্বীকার করলেও লুটপাটের অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি জানান, আব্দুস সোবাহানের সমর্থকরা শুক্রবার বিকেলে রেজা নামে তার এক সমর্থককে গুলি করলে তার পায়ে লাগে। এ ঘটনায় এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েকটি বাড়িতে চড়াও হয়।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায় , গত ২০১০ সালের ১৩ আক্টোবর বিএনপি নেতা আব্দুস সোবাহানের নাতী সাদ্দাম হোসেন (২৬) কে একটি বিয়ে বাড়িতে প্রকাশ্য গুলি করে হত্যা করে প্রতিপক্ষ আওয়ামীলীগ কর্মীরা। এ ঘটনার পর থেকে জামাতা স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা জুয়েল মোল্লার সঙ্গে শ্বশুর আব্দুস সোবাহানের বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সাদ্দাম হত্যার ঘটনায় মামলা হলে আসামীরা জামিনে ছাড়া পেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা চালালে বিরোধ চরমে ওঠে। এই বিরোধে উভয়পক্ষের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ, হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে উভয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

সিংড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামীলীগ সমর্থিত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বেই বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি ঘরে হামলা ও লুটপাট চালানো হয়েছে। তিনি হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান। তবে ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম বাবু এই অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে জানান,তিনিই দু’পক্ষের বিরোধ মিমাংসার জন্য একাধিকবার সালিস বৈঠক করেন। সুনাম ক্ষুন্ন সহ রাজনৈতিকভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে বিএনপি নেতারা তার বিরুদ্ধে এই মিথ্যাচার করছেন।

সিংড়া থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। শ্বশুর-জামাতার মধ্যে পূর্ব বিরোধের জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এব্যাপারে থানায় এখনও অভিযোগ কেউ করেনি । মামলা হলে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এমআর/জেএ/জুলাই ১৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test