E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাণীশংকৈলে উপজেলা নির্বাচন : আ.লীগ সরব, বিএনপি নীরব

২০১৯ জানুয়ারি ২৪ ১৬:২১:৪৪
রাণীশংকৈলে উপজেলা নির্বাচন : আ.লীগ সরব, বিএনপি নীরব

খুরশিদ আলম শাওন, রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) : আসন্ন পঞ্চম উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সরগম হয়ে উঠেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা। উপজেলার ইউনিয়ন ওয়াড পৌর শহরসহ পাড়া মহল্লায় এখন চলছে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা। কোন দল থেকে কে প্রার্থী হচ্ছেন এ নিয়ে চলছে ভোটারদের চুলছেড়া বিশ্লেষণ।

দলীয় মনোনয়ন পেতে আ’লীগের একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তারা কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। সে কারণে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কোন প্রচার প্রচারণা করছেন না। তবে জাতীয় পার্টির একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রার্থীরা তাদের দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা সহ অংশ নিচ্ছেন নানা সমাজিক সেবামূলক কাজে। যে যেখানে পারছেন হাত মেলাচ্ছেন ভোটারদের সাথে। চাইছেন দোয়া আশীর্বাদ। তাই বলা যায় আ’লীগে সরব বিএনপি নীরব।

আগামী মার্চ মাসে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা নির্বাচন কোন দল থেকে কাকে প্রার্থী করলে জয় নিশ্চিত হবে এমন আলোচনা এখন সর্বত্র। সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের জয়-পরাজয় নিয়ে নির্বাচনোত্তর কর্মী সভায় উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক কথা হয়। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ সম্ভাব্য ৩ জন প্রার্থীর নাম চাওয়ায় প্রার্থীরা ছুটছেন দলীয় নেতাদের দ্বারে দ্বারে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতার আলোকে এবার উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলগুলো। বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে কি না- এর উপর নির্ভর করবে জাপা’র নির্বাচনী কৌশল। তবে উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে বিএনপি থেকে এখনো কোন ধরনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে বিভিন্ন দল থেকে মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তারা দলের স্থানীয় নেতা-কর্মী সহ উচ্চ পর্যায়েও যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন।

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সইদুল হক, জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল কাদের, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো: শাহরিয়ার আজম মুন্না ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আবু তাহের (ঠিকাদার), বিএনপি নেতা ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আইনুল হক ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান দলীয় মনোনয়ন পেতে কাজ করছেন।

সাবেক উপজেলা চেয়াারম্যান সইদুল হক গত ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু তার সাথে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে থাকায় তিনি জয়ের মুখ দেখতে পাননি। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওয়ার্কাস পার্টির অধ্যাপক ইয়াসিন আলী নৌকা প্রতীক পাওয়ায় এবং একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে বিজয় চলে যায় বিএনপির ঘরে।

তিনি উপজেলা পরিষদের প্রার্থী হতে উপজেলার আনাচে কানাচে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, এতিমখানা এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ছুটে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন ধরনের সমাজ সেবামূলক কাজ করছেন। আওয়ামী লীগের অপর নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল কাদেরও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী আরেক প্রার্থী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো: শাহরিয়ার আজম মুন্নাও বসে নেই। গত নির্বাচনে তিনি হেরে যাওয়ায় এবার তিনি প্রার্থী হতে মাঠ ময়দান চষে বেড়াচ্ছেন।

এছাড়াও তার পিতা উপজেলা চেয়ারম্যান ও আমৃত্যু উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মরহুম মিজানুর রহমান ছিলেন উপজেলার একজন জনপ্রিয় নেতা পিতার সেই জনপ্রিয়তার কারণে ছাত্র নেতা মুন্নার অনেকটা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে উপজেলায়। তিনি গত নির্বাচনে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আইনুল হক মাষ্টারে সাথে লড়াই করে নিকটতম প্রতিদ্বন্দী হন।

জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আবু তাহের নির্বাচনে অংশ নিতে চান। তিনি উপজেলা ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির ও সভাপতি। ঠিকাদারীর পাশাপাশি অসহায় ও দুস্থ মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন তিনি।

বসে নেই বিএনপি সমর্থিত সম্ভাব্য প্রার্থীরাও। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি সভাপতি আইনুল হক বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও দরিদ্র জনগোষ্ঠির মাঝে সোলার প্যানেল, শীতবস্ত্র সহ বিভিন্ন অনুদান প্রদান করছেন। বিপদাপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে সময় ক্ষেপণ করেন না তিনি। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রশ্নে বসে নেই। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিএনপির পক্ষে ভূমিকা রাখায় নির্বাচনের কয়েকদিন পুর্বে গ্রেফতার হন। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছি। এ নির্বাচনে দলের অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে আমি নির্বাচনে যাব কি না?

উপজেলা আ’লীগের সভাপতি সইদুল হক বলেন, র্দীঘ দিন যাবৎ এ আসনে দলীয় সাংসদ নেই জোট মহাজোটের কারণে। আমি নিজস্ব মেধা শক্তিও শ্রম দিয়ে আ’লীগকে এ উপজেলায় শক্তিশালী অবস্থানে ধরে রেখেছি। নেতাকর্মিদের যে কোন সমস্যায় ছুটে গিয়েছি। ইউনিয়ন ওর্য়াডগুলোর নেতাদের সাথে র্সাবক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি। তাই আমি মনে করি দল আমাকে মনোনয়ন দিয়ে মূল্যয়িত করবে।

ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা শাহরিয়ার আজম মুন্না বলেন, আমাদের দলীয় প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনা তরুণদের সামনে নেতৃত্বে থাকার সুযোগ করে দিচ্ছেন। আমিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করে চাকরীর সুর্বণ সুযোগ পেয়ে না করে এসেছি নিজ এলাকার মানুষের পাশে দাড়াতে। কারণ আমার পিতা এলাকার মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন। আমার পিতার মতই আমিও মানুষের সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করতে চাই। তাই আমি আশাবাদী দলীয় মনোনয়ন পাবার ব্যাপারে।

(কেএএস/এসপি/জানুয়ারি ২৪, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test