E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

একই পরিবারের তিন প্রতিবন্ধী, ভাতা পান না কেউ!

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ২৬ ১৭:৩৩:০৭
একই পরিবারের তিন প্রতিবন্ধী, ভাতা পান না কেউ!

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের নাগরপুরে প্রতিবন্ধী তিন সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর বুদ্ধু মিয়া ও চেইন বানুর পরিবার। এই পরিবারের ছয় সন্তানের তিন সন্তানই শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম গ্রহণ করেছে। জন্মগ্রহণের পর থেকেই তাদের ভরন পোষণ নিয়ে কষ্ট করছে পরিবারটি। প্রথম তিন সন্তান সুস্থ ও স্বাভাবিক হয়ে জন্মগ্রহণ করলেও পরের তিন সন্তানই শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে। 

শারীরিক প্রতিবন্ধির পাশাপাশি তারা বাক প্রতিবন্ধীও। প্রতিবন্ধী এই তিন সন্তান নিয়ে দূর্বিষহ জীবন যাপন করলেও সরকারি কোন সাহায্য সহযোগিতা এখন পর্যন্ত পায়নি পরিবারটি। এই তিন জনের প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়ার জন্য জন প্রতিনিধিদের বলেও কোনো সমাধান হয়নি বলে জানা গেছে।

প্রতিবন্ধী পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের বাটরা গ্রামের বুদ্দু মিয়ার(৬৫) ও চেইন বানুর ৬ সন্তানের মধ্যে দুই বোন ও এক ভাই শারীরীক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। গুনজান (২০), ফতে (১৮) ও মেরাজ (১০) তারা কেউই প্রতিবন্ধী ভাতা পান না। বাবা বুদ্দু মিয়া বর্গাচাষী ও দিনমজুর। প্রতিবন্ধী এই তিন সন্তানের দেখভাল করছেন মা চেইন বানু।

অসহায় প্রতিবন্ধীদের মা বলেন, “ বড় অওয়ার লগে লগে তারা বেশি সময় অসুখ থাহে। তাদের ওষুধ ও খাওনের জোগান ঠিকমত দিতে পারি না। তাদের বাবা মানুষের বাড়িতে কাম করে। কাম থিকা যা পায় তা দিয়া কোন রকম ডাল ভাত খাইয়া জীবন চালাই। ওষুধ কিনমু কেমনে।”

প্রতিবন্ধীদের বাবা বুদ্দু মিয়া জানান, “আমার নিজের বাড়ি নাই। শ্বশুড় বাড়ি থাহি। আমার ছয় বাচ্ছা ,আল্লাহ তিনজনেরে প্রতিবন্ধী বানাই দিছে। বড় ছেলে কাজ কাম করে, হে বিয়া করছে। এরপরথিকা আলাদা খায়। আমি এই তিনজন প্রতিবন্ধী লইয়া বিপদের মধ্যে আছি। তাগো ওষুদ (ঔষধ) কেনা ,জামা কাপড় কেনা ,খাওন এত কিছু আমি পারি না। আমি সাধারণ দিনমুজুর। হুনছি (শুনছি) সরকার এগো লাইগা ট্যাহা দেয়। কই আমার প্রতিবন্ধী পোলা পাইনগো তো কিছু দিলো না।”

সহবতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.তোফায়েল মোল্লা এ প্রতিবেদককে বলেন, ঐ পরিবারের দুইজন প্রতিবন্ধির নাম অগ্রগামী তালিকায় দেওয়া আছে। তারা ১৫/২০ দিনের মধ্যে ভাতাকার্ড পেয়ে যাবে। বিষয়টি আমি আগে থেকেই জানলেও প্রতিবন্ধী কার্ড কম থাকায় গত বছর তাদেরকে দেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো. সৌরভ তালুকদার বলেন, আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছি তিনি বলেছেন, আগামী বছর একটা ভাতার ব্যবস্থা করে দিবেন। আমাদের কাছে যদি আগে আসতো তাহলে গতবারই একটা ভাতার কার্ড করে দিতাম। আপনি যদি (প্রতিবেদককে) একটা জন্ম নিবন্ধন নিয়ে আসতে পারেন তাহলে কালকেই একটা হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দেওয়া যাবে।

(আরএসআর/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test