E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঈশ্বরদীতে ছেলের অত্যাচারে মায়ের আত্মহত্যা!

২০১৯ এপ্রিল ২৯ ২৩:১০:৫৩
ঈশ্বরদীতে ছেলের অত্যাচারে মায়ের আত্মহত্যা!

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : সম্পদের জন্য ছেলের অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে অবশেষে বৃদ্ধা মা মনোয়ারা (৫০) পদ্মা নদীতে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সম্পদের জন্য বৃদ্ধা মায়ের উপর চলছিল নির্মম অত্যাচার। সন্তানের নির্ম্মম অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে অবশেষে আত্মহত্যা করেই নিবারণ করলেন নিজের কষ্ট আর দুঃখ। 

ঘটনাটি ঘটেছে, ঈশ্বরদীর পাকশীস্থ পদ্মা নদীতে। গত রবিবার গভীর রাতে তিনি ঝাপ দিয়েছিলেন বলে পুলিশ ও স্থানীয়রা ধারণা করছেন।

পাকশীস্থ পদ্মানদীর পানি হতে সোমবার দুপুরের দিকে হাজারো বড়শিতে গাঁথা নিহতের দেহ তোলা হয়েছে। আত্মহননকারী হতভাগা মনোয়ারা ঈশ্বরদীর পাকশী ইউনিয়নের চররুপপুর নওদাপাড়া এলাকার আকমল ফকিরের স্ত্রী বলে জানা গেছে। ছেলে ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্ম্মম নির্যাতন হতে এভাবেই মুক্তি নিলেন মনোয়ারা বেগম। প্রতিবেশিদের শোকাহত করে আর ছেলেকে ঘৃণার সাগরে ভাসিয়ে গেলেন তিনি।

এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনেক কষ্ট সহ্য করে কিছু জমির মালিক হয়েছেন মনোয়ারা-আকমল ফকির দম্পতি। ছেলে শামসুল মা- বাবার নিকট হতে সমস্ত সম্পতি লিখে নেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তাঁরা লিখে দিতে রাজী না হওয়ায় শুরু করেন নির্যাতন আর ভৎর্সনা। রবিবার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সন্ধ্যার কিছু পড়ে হতভাগী মনোয়ারা বেগম বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। গভীর রাতেই খবর আসে তিনি লালন শাহ সেতুর উপর হতে পদ্মানদীতে লাফিয়ে পড়েছেন।

খবর পেয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্য, মেয়ের জামাই মনোয়ারাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। লালনশাহ সেতুতে গিয়ে তারা দেখতে পায়, সেতুর র‌্যালিংয়ের সাথে মনোয়ারার ব্যবহৃত ওড়না বাঁধা রয়েছে। পাশেই পায়ের স্যান্ডেল ও মোবাইল ফোনটি পড়ে আছে। সকাল হতে নদীতে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স সদস্য, স্থানীয় জেলে ও আত্মীয় -স্বজন নদীতে তল্লাশি শুরু করেন। অনেক খোঁজাখোজির পর অবশেষে জেলেদের বড়শিতে গাঁথা মনোয়ারার লাশ উদ্ধার হয়।

নিহত মনোয়ারা বেগমের মেয়ে জামাই বরিউল ইসলাম জানান, লাশটি নদী হতে উদ্ধার করে বাড়িতে আনার পর পুলিশ লাশটি থানায় নিয়ে যায়। সোমবার পাবনা হতে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যার দিকে নিজ বাড়িতে আনা হয়েছে।

থানার দায়িত্ব ডিউটি অফিসার উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) আজিজ জানান, এবিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। নিহতের ছেলে শামসুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত থানায় শামসুলের জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল।

প্রতিবেশিরা এঘটনায় ছেলে শামসুলের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জনিয়েছেন।

(এসকেকে/এসপি/এপ্রিল ২৯, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test