E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মজুরি বৈষমের শিকার সিরাজগঞ্জের নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর নারী শ্রমিক

২০১৯ মে ০১ ১৪:৫৯:৪৭
মজুরি বৈষমের শিকার সিরাজগঞ্জের নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর নারী শ্রমিক

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের বেশিরভাগ ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জন গোষ্ঠীর বাস রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলায় । পরিসংখ্যান অনুযায়ী উরাঁও, মাহাতো, সিং,মুন্ডারী, সাঁওতাল,বড়াইক সহ প্রায় ৩৫ হাজার ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর লোকজন বাস করেন এখানে । আবহমানকাল থেকে বংশ পরম্পরায় এরা কৃষি কাজের সাথে জড়িত । নারী-পুরুষ উভয়ে মিলেই এরা দলগতভাবে মাঠে কাজ করে থাকেন । পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি দক্ষতার সাথে কাজ করলেও অভিযোগ রয়েছে নারী শ্রমিকের মজুরি বৈষম্যের ।

সারাদেশের ন্যায় সিরাজগঞ্জেও এখন চলছে বোরো ধান কাটার মৌসুম । সংগত কারণে কৃষি শ্রমিকের চাহিদাও বেশি ।সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে ধান কাটা,মাড়াই ও শুকানোর কাজ । তাড়াশ ও রায়গঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি নারী শ্রমিকেরাও সমান তালে কাজ করছেন ।

সরেজমিনে তাড়াশ উপজেলার গুল্টা গ্রামে গিয়ে দেখা হয় নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর নারী পুরুষ সম্মিলিত একটি দলের সাথে । ১৩ জনের এ দলে আট জনই নারী । সেখানে কথা হয় পদ্মা রানী খাখার সাথে । তিনি বলেন,এতো সারা জীবনই দেখে আসছি কম আর কম । কে শোনে আমাদের কথা ।আরেক নারী শ্রমিক রীনা রানী পাশ থেকে কণ্ঠ মিলিয়ে বলেন, আমরা ঘরে বাইরে পুরুষের চেয়ে বেশি কাজ করি । তারপরও কোন দাম আছে মেয়ে মানুষের ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একজন পুরুষ শ্রমিকের মজুরি যেখানে দেয়া হচ্ছে ছয় শ টাকা,সেখানে নারী শ্রমিক কে দেয়া হয় সাড়ে চার শ থেকে পাচ শ টাকা । এ বৈষম্য চলে আসছে যুগের পর যুগ ধরে ।
এ প্রসংগে কথা হয় তালম গ্রামের জোতদার আসাদ আলীর সাথে ।

তিনি বলেন, নারী শ্রমিকেরা বিশ্বস্ত ।কাজও করেন মন দিয়ে । তবে ভার বহনে পুরুষ কামলার (শ্রমিকের স্থানীয় নাম) চেয়ে নারী কমলারা একটু কম নেয় বলে তাদের মজুরি কম দেয়া হয় ।

প্রসঙ্গটি নিয়ে কথা হয় ওরাঁও ফাউন্ডেশানের নির্বাহী অধ্যাপক যোগেন্দ্র নাথ টপ্পর সাথে । তিনি বলেন, শুধু মজুরি কেন সব ক্ষেত্রেই আদিবাসী নারীরা বঞ্চনার শিকার । কৃষিখাতের শ্রমিকেরা অপ্রাতিষ্ঠানিক হওয়ার কারণে তাদের কোর সুর্নিদৃষ্ট মজুরি কাঠমো ও নেই । এ ব্যাপারে সবার আগে রাষ্ট্রকেই এগিয়ে আসতে হবে ।

নারী ও শিশু কল্যাণ ফাউন্ডেশানের নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা পারভীন লাভলী কালেরকণ্ঠকে বলেন, জাতি সংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন ও সরকারের ভীষণ বাস্তবায়ন করতে হলে নারী পুরুষের বৈষম্য আগে দুর করতে হবে । মোট জন সংখ্যার অর্ধেক মানুষ কে বঞ্চনায় রেখে কোন উন্নয়নই সম্ভব নয় । নৃ-তাত্ত্বিক নারী শ্রমিকের ক্ষেত্রে এ কথা সমভাবে প্রযোজ্য ।

(এমএস/এসপি/মে ০১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test