E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাটোর শহরের ব্যস্ততম এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বিল বোর্ড নির্মাণ

২০১৪ জুলাই ২৬ ১৭:৪৫:২১
নাটোর শহরের ব্যস্ততম এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বিল বোর্ড নির্মাণ

নাটোর প্রতিনিধি : অনুমতি ছাড়াই নাটোর শহরের ব্যস্ততম ট্রাফিক মোড় এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের ধারে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের তার ঘেঁষে বিশাল আকৃতির ঝুঁকিপূর্ণ লোহার বিল বোর্ড নির্মাণ করা হয়েছে।

শুক্রবার রাতে কে বা কারা তড়িঘড়ি করে এই বিল বোর্ড নির্মাণ করে। ফলে ঝুঁকিপুর্ণ এই বিল বোর্ড নিয়ে শহরবাসী উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় রয়েছে। কারা এই বিল বোর্ড নির্মাণ করছে তা কেউ জানেনা।

স্থানীয়রা জানায়, রাতের অন্ধারে নির্মাণ করা ওই বিল বোর্ড ঘেঁষে ৩৩ হাজার ভোল্ট এবং নিচে ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ লাইন রয়েছে। সামান্য বাতাস হলেই বিল বোর্ডটি বিদ্যুতায়িত হয়ে যে কোন মূহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে। এছাড়া রাতের অন্ধকারে লোহার ওই বিশাল আকারের বিল বোর্ড স্থাপন করা হলেও প্রশাসনের নজরে না পড়ায় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এদিকে শহরের জনগুরুত্বপূর্ন এলাকায় এই বিল বোর্ড নির্মান করা হলেও সরকারি বা আধা সরকারি কোন দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে কিছুই জানেনা। এমনকি তাদের কাছে এ ব্যাপারে কোন তথ্য নেই। অপরদিকে বিল বোর্ডটি যে জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে সেটি কাদের তা কেউ বলছেনা। সড়ক বিভাগ, পৌরসভা নাকি জেলা পরিষদের সে বিষয়ে কেউ নিশ্চিত নন। আর বিল বোর্ডটি কোন প্রতিষ্ঠানের তাও কেউ জানে না। বিল বোর্ডে কর্মরত শ্রমিকদের কাছে প্রতিষ্ঠানের নাম জানতে চাইলে তারা মুখ খুলতে নারাজ। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিকদের কয়েকজন জানায়, সরকারি দলের স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার সহায়তায় লোহার এই বিল বোর্ডটি স্থাপন করা হয়েছে।

বিল বোর্ড সংলগ্ন এক ব্যবসায়ি জয়নাল আবেদীন জানান, মহাসড়ক সংলগ্ন জনবহুল এলাকায় রাতের অন্ধকারে কে বা কারা এই বিল বোর্ডটি নির্মাণ করে। বিল বোর্ড নির্মাণের পর থেকে আতঙ্কে রয়েছেন। যে কোন মুহুর্তে ভেঙ্গে পড়ার সম্ভাবনাসহ বিদ্যুতায়িত হয়ে প্রাণ হানি হতে পারে।

সুত্র জানায়, ইতোপূর্বেও নির্মানাধীন বিল বোর্ডের কয়েক’শ গজ দূরে বিল বোর্ড নির্মাণ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে জেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হলে বিল বোর্ডটি অপসারন করে নেওয়া হয়।
স্থানীয় হোমিও চিকিৎসক আব্দুর রশীদ খোকন জানান, লোহার বিশাল আকারের বিল বোর্ডটি ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তার ঘেঁষে তৈরি করা হয়েছে। যে কোন মুহুর্তে বিল বোর্ডটি বিদ্যুতায়িত হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে।

নাটোর বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের আবাসিক প্রকৌশলী সাইফুর রহমান জানান, ছুটিতে থাকায় বিষয়টি তার জানা নেই। তবে ৩৩ কেভি ও ১১ কেভির ভোল্টের তার সংলগ্ন এলাকায় বিল বোর্ড নির্মান ঝুকিপূর্ণ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাটোর পৌর সভার প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, শহরের মধ্যে হলেও এই বিল বোর্ড নির্মাণে পৌরসভার কোন অনুমতি নেওয়া হয়নি। এছাড়া বিল বোর্ডটি কারা নির্মাণ করছে তাদের জানা নেই।
নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জিকরুল ইসলাম জানান, এই কর্মস্থলে তিনদিন হলো যোগদান করেছেন। বিষয়টি তার জানা নেই। এ ব্যাপারে কেউ সড়ক বিভাগের অনুমতি নেয়নি। বিল বোর্ডের অবস্থান জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন জানান, স্থানটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের। জেলা পরিষদের নয়। তবুও যেহেতু বিষয়টি ঝুকিপূর্ন তাই সরেজমিন দেখে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার বাসুদেব বনিক জানান, বিল বোর্ডটি কোন প্রতিষ্ঠানের অনুমতি নিয়ে স্থাপন করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক মসিউর রহমান জানান, বিষয়টি জানার পর পৌরসভা, জেলা পরিষদ ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হলে বিল বোর্ডটি অবশ্যই অপসারন করা হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

(এমআর/জেএ/জুলাই ২৬, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test