E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চাটমোহরে ঈদে নতুন পোশাক পেলনা ৫০ এতিম শিশু

২০১৪ জুলাই ২৭ ১৮:৩৭:১৮
চাটমোহরে ঈদে নতুন পোশাক পেলনা ৫০ এতিম শিশু

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : মসজিদ ও এতিমখানা পরিচালনা কমিটির কতিপয় সদস্যদের খামখেয়ালিপনা আর দায়িত্বহীনতার কারণে পাবনার চাটমোহরে এতিমদের ঈদ আনন্দ মাটি হয়ে গেল।

শিশু এতিমদের জন্য বরাদ্দ পোশাক থেকে তারা বঞ্চিত হলো ওই মসজিদ ও এতিমখানার সম্পাদকসহ কতিপয় সদস্যদের কারণে। শুধু তাই নয় প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে কমিটির কতিপয় সদস্য মসজিদ ও এতিমখানার নামে লাখ লাখ টাকা তছরুফ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, চাটমোহর থানা জামে মসজিদ ও এতিমখানা নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি জায়গা দান করেন চাটমোহরের বিশিষ্ট সমাজসেবক মরহুম ডা. জয়েন উদ্দিন। ১৯৮০ সালে তিনি ১ একর ৫ শতক জমি মোহাম্মদ আলী হেফজুল কোরআন মাদ্রাসার নামে একটি দানপত্র দলিলমূলে হস্তান্তর করে মৃত্যুবরণ করেন। পৌর সদরের ওই জায়গার উপর স্থাপন করা হয় জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ৯০/৯২ সাল পর্যন্ত মোহাম্মদ আলী হেফজুল কোরআন মাদ্রাসা নামে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসলেও ৯৫ সালের দিকে তৎকালীন মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটির সদস্যগণ রেজুলেশনমূলে নাম পরিবর্তন করে চাটমোহর থানা জামে মসজিদ ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছে। বিভিন্ন সময়ে কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা মসজিদ মার্কেটের জায়গা নির্মাণ শেষে ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করে তছরুফ করেছেন।

এদিকে মাদ্রাসার নাম পরিবর্তন করায় জমিদাতার সন্তানদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়। এরই প্রেক্ষিতে মরহুম ডা. জয়েন উদ্দিনের ছেলে এটিএম শাহ আলম (আতা) মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি/সম্পাদকের বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ জারি করলেও ওই কমিটি কোন প্রকার ভ্রুক্ষেপ করেনি। সম্প্রতি মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটির এক সভায় এটিএম শাহ আলম (আতা) এবং অপর জমি দাতা আলহাজ্ব রফাত আলীর ছেলে মো. শামসুল ইসলামকে দাতা সদস্য হিসেবে কমিটিতে অর্ন্তভূক্ত করা হয়। পরবর্তী সভায় এতিমখানার নাম পরিবর্তন করে মোহাম্মদ আলী হেফজুল কোরআন মাদ্রাসা হিসেবে সর্বত্র প্রচারে রেজুলেশন করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।

সভায় এটিএম শাহ আলম এতিমখানার ৫০ জন এতিম শিশুদের জন্য ঈদে নতুন পোশাক প্রদানের ঘোষণা দেন এবং ২৬ রমজান তা শিশুদের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জন্য কমিটিকে অনুরোধ জানান। সেই মোতাবেক শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে ডা. জয়েন উদ্দিনের ২ ছেলে এটিএম শাহ আলম (আতা) ও লেঃ কর্ণেল একেএম সাইফুল ইসলাম (কর্ণেল সেলিম) থানা জামে মসজিদে গিয়ে তারাবিহ ও লায়লাতুল ক্বদরের নামাজ আদায় করেন। নামাজের পর এতিমদের মাঝে নতুন পোশাক বিতরণের কথা থাকলেও মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটির অন্যান্য সদস্যরা যথা সময়ে উপস্থিত না থাকায় দাতা সদস্য শাহ আলম (আতা) ও তার ভাই কর্ণেল সেলিম ক্ষুব্ধ হয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যান।

এ ব্যাপারে এটিএম শাহ আলম জানান, পূর্ব নির্ধারিত দিনে শুক্রবার এতিমদের মাঝে নতুন পোশাক বিতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু কমিটির সম্পাদকসহ কতিপয় সদস্যদের দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতার কারণে শিশুদের পোশাক বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, শুধুমাত্র এতিমদের পোশাক দেবার জন্য আমি ঢাকা থেকে এবং আমার ছোটভাই সিলেট থেকে চাটমোহরে এসেছিলাম।

এ ব্যাপারে মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটির সম্পাদক মো. আব্দুস সাত্তার কোন কথা বলতে রাজি হননি। সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী জানান, শুক্রবারের ঘটনাটি শুধু একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের কমিটি আসার আগে টাকা-পয়সা তছরুফ হতে পারে তবে আমরা আসার পর এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি।

(এসএইচ/জেএ/জুলাই ২৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test