E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিবির ক্যাডার মফিজুল নাম পাল্টে এখন পলাশ মাহমুদ

২০১৯ জুলাই ০৬ ১৬:১৮:১৮
শিবির ক্যাডার মফিজুল নাম পাল্টে এখন পলাশ মাহমুদ

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : দূর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার মফিজুল ইসলাম ওরফে পলাশ মাহমুদ ও তার ভাই বিএনপি নেতা সুন্দরবনের বনদস্যু শরিফুল ইসলামের নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে  প্রধানমন্ত্রি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রির হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। 

শনিবার দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসে এ সম্পর্কিত অভিযোগপত্র সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গোকুলনগর গ্রামের বক্স গাজীর ছেলে ফারুক আল মামুন।

লিখিত অভিযোগপত্রে ফারুক আল মামুন উল্লেখ করেছেন বর্তমানে তিনি খুলনা জেলার লবণচোরা থানাধীন মোহাম্মদ নগরে বসবাস করেন। তিনি জয় বাংলা’৭১ লীগের লবনচোরা থানা শাখার সিনিয়র সহসভাপতি । মফিজুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম তার চাচা মোহাম্মদ গাজীর ছেলে। মফিজুলের জন্মস্থান একই গ্রামে হলেও তারা পরবর্তীতে খুলনার কয়রা উপজেলা সদরের বাসিন্দা। বর্তমানে সে ঢাকার আব্দুল্লাহ পুরে থাকে। কয়রার কালনা মাদ্রাসা থেকে দাখিল, কপোতাক্ষ কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় পাশ করে মফিজুল।

২০০৫-২০০৬ শিক্ষাবর্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করাকালিন পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ভিসির সঙ্গে বিরোধ বাঁধে ছাত্র শিবিরের। এ সময় মফিজুলের নেতৃত্বে ছাত্রশিবিরের তাণ্ডব চালায়। ভিসিকে না পেয়ে তার স্ত্রীকে মারপিট করে মফিজুল। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়েরকৃত মামলায় মফিজকে দেখা মাত্র গুলি করার নির্দেশ দেয় পুলিশ। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেড়ে আত্মগোপন করে মফিজুল। রাজনৈতিক পালাবদলের সাথে সাথে জাতীয় পরিচয় পত্রে মফিজুল ইসলাম ( নং-১৯৮৮৪৭১৫৩৫৫৭৪৯৮১৩) নাম থাকলেও অনিয়ম ও দূর্ণ তির মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন( নং-১৯৮৮৪৭১৫৩৫৫১০০৬৫৯) তৈরি করে ভোল পাল্টাতে পলাশ মাহমুদ( ভোটার নং-৪৭১৪০১৭৪৯৮১) নাম ধারণ করেছে। তার বিরুদ্ধে লোগো বৈঠা আন্দোলনের সময় খুলনা ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ছাত্র শিবিরের পক্ষে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ থানায় ১৯৯৫ সালে অস্ত্র মামলা, ১৯৯৮ সালে খুলনা সদর থানায় চাঁদাবাজি ও অপহরণ মামলা, তাদের জমি জবরদখল করতে গেলে সশস্ত্র হামলা করায় ২০১৭ সালে আশাশুনি থানায় ২০১৭ ও ২০১৯ সালে পৃথক দু’ টি হত্যা চেষ্টা মামলা ও ২০০৪ সালে হ্যাচারি ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলা(১৫/০৪) হয়।

একইভাবে তার(মফিজুল) ভাই এক সময়কার ছাত্র শিবিরের সক্রিয় সদস্য ১৯৯০ সাল থেকে প্রতাপনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেব দায়িত্ব পালনকারি শরিফুলের বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র বিক্রির অভিযোগ ছাড়াও এলাকার চিংড়ি ঘের দখল, চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। চারটি বিবাহের নাটের গুরু শরিফুল ও তার সন্ত্রাসী ভাই মফিজুল প্রভাব খাটিয়ে নিঃসন্তান চাচা কছিমউদ্দিন গাজীর আট বিঘা জমির অর্ধেক দাবিদার হলেও গায়ের জোরে সবটুকু দখলে নিতে নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে তারা তাাদেরকে(ফারুক) রোহিঙ্গাদের মত ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে বাপ দাদার ভিটা থেকে উচ্ছেদ করে দেশ ছাড়া করার হুমকি দিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে। মামলা করা হয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

মফিজুলের ভাই রবিউল ও আসাদুল বর্তমানে জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ও তাদের বোন ফিরোজা আক্তার সালমা প্রতাপনগর ইউনিয়ন জামায়তের সাধারণ সম্পাদক। তারাই মুলতঃ সাঈদী মুক্তি মঞ্চের উদ্যোক্তা ও অর্থযোগানদাতা। শনিবার তিডিন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে সাংবাদিক মমতাজ আহম্মেদ বাপ্পি বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার কথা বলে সংবাদ সম্মেলন না করার জন্য অনুরোধ করেন।

জানতে চাইলে মফিজুল ইসলাম বলেন, ফারুক আল মামুন এক সময় বিএনপির সক্রিয় সদস্য ছিল। রাজনৈতিক পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে সে খুলনায় যেয়ে নব্য আওয়ামী লীগার সেজে পিঠ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

(আরকে/এসপি/জুলাই ০৬, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test