E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আ. লীগে বিএনপি কাউয়া

ফের ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি হতে মরিয়া মোজাম্মেল গাইন 

২০১৯ নভেম্বর ০৫ ১৬:৫২:৫৭
ফের ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি হতে মরিয়া মোজাম্মেল গাইন 

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউনিয়ন বিএনপির এক সময়কার দাপুটে সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোজাজম্মেল হক গাইন এখন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। আগামি দলীয় কাউন্সিলে নিজের পছন্দের লোকজনদের নিয়ে তিনি আবারো সভাপতি হলে আওয়ামী লীগের চরম ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের।

কালিগঞ্জ থানাধীন চম্পাফুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রেজাউল বিশ্বাস, আওয়ামী লীগ নেতা আবু বক্কর, সাহেব আলীসহ কয়েকজন জানান, ২০০৩ সালের ২০ জুলাই চম্পাফুল ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি হিসেবে চাঁদখালি গ্রামের শওকত আলী গাইনের ছেলে মোজম্মেল হক গাইনের নেতৃত্বে ১৫ সদস্য বিশিষ্ঠ ইউনিয়ন বিএনপি’র কমিটি গঠিত হয়। এরপর থেকে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি তথা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠণের লোকজন নির্যাতিত হতে শুরু করে। নিজের প্রভাব খাটাতে ২০০৩ সালে তিনি বিএনপি সমর্থিত চার দলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী তরিকুল ইসলামকে বিএনপি’র মিটিং এ ফুলের তোড়া দিয়েছেন।

আবার মান্নান ভুঁইয়া, মোশাররফ হোসেনসহ বিএনপি মন্ত্রীদের পিছনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন। হয়েছেন কালিগঞ্জ উপজেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহবায়কও। ভূমিহীনদের প্রতিহত করতে এক লাখ টাকার কথিত চাঁদার দাবিতে ২০০৫ সালের ১৮ জুলাই উজিরপুর বাজারের নিজ দলীয় অফিস ও ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী অফিসে টাঙানো তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি’র চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দেয়ালে টাঙানো ছবি ভাঙচুর ও পদদলিত করার মিথ্যা অভিযোগে মোজাম্মেলল হক গাইন কালিগঞ্জ থানায় বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সহসভাপতি সাইফুল্লাহ লস্করসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা (জিআর-১০২/০৫) করেন।

এ মামলায় সাইফুল্লাহ লস্কর, আলী নুর খান বাবুল, আশরাফ মীর, মোশাররফ হোসেনসহ পাঁচ জনের দু’ বছর করে কারাদণ্ড হয়। যা বর্তমানে আপিল মামলা হিসেবে যশোর জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এরপর থেকে তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি চাপের মুখে ২০১২ সালে নলতা আহছানিয়া মিশন ডিগ্রী কলেজ মাঠে তৎকালিন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হকের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।

২০১৫ সালে কালিগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রয়াত শেখ ওয়াহেদুজ্জামানের সান্নিধ্যে এসে সাবেক সভাপতি মতিয়ার রহমানসহ ত্যাগী নেতা কর্মীদের বাধা বিপত্তি স্বত্বেও চম্পাফুল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মনোনীত হন। আওয়ামী লীগ না করলেও নিজেদের অস্তিত্ব ঠেকিয়ে রাখতে কাইয়ুম গাইনকে ১নং ওয়ার্ডের সভাপতি, আব্দুল জলিল মোল্লাকে ২নং ওয়ার্ডের সভাপতি, বিএনপি সমর্থক আজু মোড়লকে ৪নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ইউপি সদস্য আব্দুস সাত্তারকে ৫ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক, আনোয়ার হোসেনকে ৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ও ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ফজলুর রহমানকে মনোনীত করেন।

মোজাম বাহিনীর চাপে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা কর্মীরা একপর্যায়ে কোনঠাসা হয়ে পড়ে। এসবের পরও আওয়ামী লীগের আগামি কাউন্সিল অধিবেশনে এক ধরনের সুবিধাভোগী নেতাদের ম্যানেজ করে মোজাম্মেল হক গাইন আবারো চম্পাফুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা আশাবাদি যে, দলীয় প্রধান ও বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যেখানে দলের মধ্যে কাউয়া খোঁজা শুরু করেছেন সেখানে মোজাম্মেল হক গাইনের মত লোক কোন মতেই আগামি কাউন্সিলে কমিটিতে ঢোকার সূযোগ পাবে না।

জানতে চাইলে চম্পাফুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক গাইন মঙ্গলবার বিকেল পৌনে তিনটায় (০১৭১৫-২৫১৮৪৮) সাংবাদিকদের বলেন, ২০০০ সালের আগে তিনি বিএনপি করতেন। পরে তিনি আওয়ামী লীগের নীতি ও আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে তিনি ওই দলে যোগদান করেছেন।

তার বিরুদ্ধে আনীত কোন অভিযোগের ভিত্তি নেই দাবি করে তিনি বলেন, সাইফুল্লাহ লস্কর হত্যা মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হলেও পরে তাকে ওই মামলা থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।

(আরকে/এসপি/নভেম্বর ০৫, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test