E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে কটুক্তি : রাঙার বিরুদ্ধে মামলা

২০১৯ নভেম্বর ১৪ ১৮:০৯:১৮
শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে কটুক্তি : রাঙার বিরুদ্ধে মামলা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : স্বৈরাচার বিরোধী আন্দালনে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ নূর হোসেন সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বৃহষ্পতিবার সাতক্ষীরার আমলী প্রথম আদালতে এ মামলা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এম শাহ আলম। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রোকনুজ্জামান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আগামি ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা স্বৈরাচারী শাসকদের যাতাকলে বারবার শিকলবন্দি হয়ে পড়ে। আশির দশকের পর স্বৈরশাসকদের কবল থেকে গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য দেশের সাধারণ মানুষ আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করে। সামরিক বাহিনী আন্দোলনরত ছাত্র জনতার উপর গুলি চালিয়ে ও গাড়ি চাপা দিয়ে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায়। রাজনীতিবীদদের আটক ও কারাবন্দি করে গণতান্ত্রিক মানুষের অধিকার আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করে।

এ স্বেরাচারী সরকারের রোষানলে পড়ে মামলার বাদি এম শাহ আলমও দীর্ঘদিন জেল হাজতে ছিলেন। যখন দেশব্যাপি মানুষের বজ্রকঠিন মিছিলে শ্লোগানে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন তীত্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে তখন একজন দেশপ্রেমিক ও গণতন্ত্রকামি টগবগে যুবকের বুকে ও পিঠে লেখা“ স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক” হাজারো জনতার মাঝে উজ্জ্বল নক্ষত্রের ন্যয় সাদা হরফের চকচকে লেখায় সামরিক জান্তা স্বৈরশাসকের হৃদকম্প শুরু হওয়ার কারণে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর অজানা অচেনা যুবকের উপর গুলি করা হয়।

এতে রাজপথে লুটিয়ে পড়ে সেই যুবক, রক্তে রঞ্জিত হয় ঢাকার রাজপথ। পরে তার পরিচয় জানা যায় নূর হোসেন নামে। এ ঘটনার পর সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন চুড়ান্ত রুপ লাভ করে। “ মুক্তি পায় গণতন্ত্র, পতন হয় সামরিক জান্তার।”

গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য জীবনদানকারি দেশ প্রেমিক নূর হোসেনকে সাধারণ মানুষ “শহীদ নূর হোসেন” উপাধিতে ভূষিত করেন। সেখান থেকে প্রতি বছরের ১০ নভেম্বরকে সাধারণ মানুষ ‘নূর হোসেন দিবস’ হিসেবে পালন করে। সেই নুর হোসেনকে স্বৈরশাসকের গঠণকারি দলের বড় নেতা মশিউর রহমান রাঙা গত ১০ নভেম্বর বনানীস্থ জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে প্রকাশ্যে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় বলেন, “নূর হোসেন একজন গাজা, ইয়াবা ও ফেনসিডিল সেবী বিধায় রাজপথে নেমেছিল।”

বিষয়টি নিয়ে দেশের গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় সেটা নূর হোসেনের পরিবারের সদস্য ও দেশের সাধারণ মানুষের জন্য অপমানজনক। গত ১২ নভেম্বর সকাল ১০টায় জেলা আইনজীবী সমিতির নীচের তলায় বাদি খবর পড়ে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে ক্ষুব্ধ হয়ে বৃহষ্পতিবার আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।

সাতক্ষীরা জেলা আাইনজীবী সমিতির সভাপতি এম.শাহ আলম বৃহষ্পতিবার বিকলে ৫ টায় সাংবাদিকদের কাছে মামলা(সিআরপি- ৬৯৯/১৯- সাত) ও বিচারকের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

(আরকে/এসপি/নভেম্বর ১৪, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test