E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হাতুড়ে চিকিৎকের খপ্পড়ে পড়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে শিশু রঞ্জিত

২০১৯ ডিসেম্বর ১০ ১৭:৩০:০০
হাতুড়ে চিকিৎকের খপ্পড়ে পড়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে শিশু রঞ্জিত

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর : বে-সরকারি এক হাসপাতালের বেডে মৃত্যু’র সাথে পাঞ্জা লড়ছে, ৭ বছরের শিশু রঞ্জিত সিংহ। পেনিসে ভুল অপারসনে প্রায় একমাস ৫দিন ধরে এই পরিাস্থতি তার। তাকে নিয়ে এখন দিশেহারা দরিদ্র পিতা-মাতাসহ পরিবারের সবাই। হাসপাতালের বেডের পাশে বসে প্রতিনিয়ত চোখের জল ঝড়াচ্ছে তারা। ঘুম হারাম হয়ে গেছে ওই পরিবারের।

এ ঘটনা দিনাজপুরের। কাহারোল উপজেলার দরিদ্র বর্গাচাষী কাজল সিংহের ছেলে রঞ্জিত সিংহ (৭)। পেনিসের একটি রোগ বাঁকা হওয়ায় দালালের খপ্পড়ে পড়ে দিনাজপুর শহরের বালুয়া ডাঙ্গা দোতালা মসজিদ মোড়স্থ হাসনা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত ৫ নভেম্বর’১৯ ভর্তি করানো হয় রনঞ্জিত সিংহ’কে। ১৪ হাজার টাকার বিনিময়ে সেখানে ডা. মারুফ খাঁন এবং ওবায়দুর রহমান নামে দুই চিকিৎসক ভুল অপারেশন করায় রঞ্জিতের পেনিসে ইনফেকশন দেখা দেয়।

এ ঘটনায় এলাকাবাসী এবং কথিপয় সাংবাদিক চড়াও হয় হাসনা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এলাকাবাসী এবং কথিপয় সাংবাদিককে এক লক্ষ দশ হাজার টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। সেই সাথে পরিস্থিতির বেগতিক দেখে রঞ্জিতকে পরে ভর্তি করা হয় দিনাজপুর ইসলামী হাসপাতালে। হাসপাতালের ৪১৫ নম্বর বেডে রঞ্জিত এখন মৃত্যু’র সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

ইসলামী হাসপাতালে আজ মঙ্গলবার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে শিশু রঞ্জিত চিকিৎসক ডা.এস.এম.বোরহান উদ্দিনের অধীনে চিবিৎনাধীন রয়েছে। চিকিৎসক ডা. রোরহান জানিয়েছেন,রঞ্জিতের অবস্থা ভালো নয়। রঞ্জিতের প্রসাব ক্যাথেটারের মাধ্যমে করানো হচ্ছে। সময় সাপেক্ষে ঢাকায় তাকে নিয়ে আবারো অপারেশন ও চিকিৎসা করাতে হবে।

রঞ্জিতের পিতা কাজল জানান, অপারশনের রাতে তিনি বাড়িতে ছিলেন। তার স্ত্রী ও শাশুরি ছিলো ক্লিনিকে। অপারশনের সময় মদ পান করে ওই দুই চিবিৎসক। মদ্যপ অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ ওই অপারেশন করা হয় তার ছেলের। যা তার স্ত্রী এবং শ্বাশুরী দেখেছেন।

এ ব্যাপারে হাসনা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কথিত চিকিৎসক ডা. মারুফ খানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে জানালেও পরে আর রিসিভ করছেনা মুঠোফোন। অন্যদিকে আরেক কথিত চিকিৎসক ওবায়দুর রহমান পল্লী চিকিৎসক বলে জানা গেছে। তারপরও তিনি নিজেকে ডিগ্রিধারী চিকিৎসক দাবী করে হাসনা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে রয়েছেন।

হাসনা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী মো, শামীম হোসেন সব অভিাযোগ অস্বীকার করে জানান,তাদের উপর মিথ্যা অপবাদ দেয়া হচ্ছে। তাদের ক্লিনিক রেজিষ্টেশনের জন্য অনলাইনে আবেদন করা হয়েছে। এ ঘটনাকে পুঁজি করে এলাকার কিছু মান্তান ও কতিপয় সাংবাদিক এক লাক্ষ দশ হাজার টাকা নিয়েছে।সেই সাথে ক্লিনিকের প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকার ওষুধও চুরি করে নিয়ে গেছে তারা। তারপরও শিশুটি’র উন্নত চিকিৎসার জন্য তারা খরচ বহন করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মো, শামীম হোসেন আগে অন্য একটি ক্লিনিকের কর্মচারী ছিলেন। বিরল উপজেলার জুগিহারী গ্রামের মৃতঃ আনিসুর রহমানে ছেলে মো, শামীম হোসেন নিজেই এখন ক্লিনিক দিয়েছেন। দালাল চক্রের মাধ্যমে তার হাসনা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসা মানুষগুলোর জীবন-মৃত্যু নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে কথিত চিকিৎসকরা। এমন অভিযোগ অনেকের।

এ বিষয়ে দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অবৈধ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিতে বদ্ধ পরিকর।আমি অফিসের কাজে ঢাকায় অবস্থান করছি। ফিরে বিয়টি দেখবো।

(এস/এসপি/ডিসেম্বর ১০, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test