E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও গ্যাস জনিত কারণে গৃহবধূর মৃত্যু : স্ট্রোকে মারা গেছে বললেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা

২০২০ এপ্রিল ০১ ১৫:১৯:৪৫
জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও গ্যাস জনিত কারণে গৃহবধূর মৃত্যু : স্ট্রোকে মারা গেছে বললেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও গ্যাস জনিত কারণে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার ভোর ৫টার দিকে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বন্দকাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মৃতের নাম ফরিদা ওরফে শিল্পী খাতুন (৩৩)। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার ফতেপুর গ্রামের সিরাজুল কারিকরের স্ত্রী ও দু’ সন্তানের জননী।

এদিকে শিল্পী খাতুনের মৃত্যুর পর এলাকায় করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শককে বিষয়টি অবহিত করে ওই বাড়ির আশেপাশে অবস্থান নেন।

কালীগঞ্জের ফতেপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত ২৭ মার্চ শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তার স্ত্রী শিল্পীর অতিরিক্ত গ্যাসের কারণে বমি শুরু হয়। শনিবার সকাল পর্যন্ত বমি থামেনি। এ সময় তার শরীরে জ্বর ছিল। পরবর্তীতে শনিবার দুপুরের পর শিল্পীকে তার বাপের বাড়ি বন্দকাটি গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় স্থানীয় চিকিৎসক ডাঃ রুহুল আমিন তার শরীরে ১০৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস জ্বরের অস্তিত্ব পান। রক্তচাপ ছিল ৯০/৬০। ছিল শ্বসকষ্ট।

রুহুল আমিনের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ি ট্যাবলেট সোডিপো, ট্যাব-এজেড, ট্যাবলেট সিনামিন, ট্যাবলেট নাপা একসট্রা ও সিরাপ পেপনিক খেয়ে তার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট কমে যায়। তবে বুকে গ্যাসের ব্যাথা ছিল। মঙ্গলবার সকালে তিনি হোমিও চিকিৎসক ঠেকরা জামে মসজিদের পেশ ইমাম আব্দুস সামাদের কাছে চিকিৎসা নেন। সন্ধ্যায় তিনি ছেলে সপ ওয়ান বিন সিরাজ ও ফাওবান বিন সিরাজকে নিয়ে বাড়ি চলে যান। কেন হাসপাতালে ভর্তি করেননি এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুস সামাদ বলেন, তারা ইসলামী অনুশাসনে চলেন ও শরীরে কোন করোনার লক্ষণ না থাকায় শিল্পীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি।

বন্দকাটি দাখিল মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক আব্দুস সালাম জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত দু’টোর দিকে তার মেয়ে শিল্পীর বমি ও বুকে ব্যাথা শুরু হয়। একপর্যায়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে গায়ে পানি ঢালতে বলে। তার শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ায় তারা গায়ে পানি দেননি। একপর্যায়ে বুধবার ফজরের নামাজের পর শিল্পী মারা যায়।

আব্দুস সালাম বলেন, শিল্পীর মৃত্যুর পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উৎসুক জনতা তার বাড়িতে ভিড় করে। একপর্যায়ে প্রশাসনের লোকজন ও স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন না আসা পর্যন্ত লাশ সৎকার না করা ও বাড়ির কোন ব্যক্তিকে বাইরে না যাওয়ার কথা বলেন তারা।

গ্রাম ডাক্তার রুহুল আমিন বলেন, তিনি শিল্পীর যে সময় চিকিৎসা দিয়েছেন তাতে করোনার কোন লক্ষণ ছিল না।
বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রিয়াজউদ্দিন বলেন, শিল্পী খাতুন কিভাবে মারা গেল তা যাচাই করার জন্য বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তারা আসার পর লাশ দাফন এর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল রাসেল বিষয়টি জানার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ তৈয়বুর রহমান বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় এ প্রতিনিধিকে বলেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর মৃতের স্বজন ও স্থানীয় চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনিসহ আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মৃত্যুঞ্জয় সরকার ও ল্যাব এসিসট্যান্ট কিশোর কুমার মণ্ডল। শিল্পী খাতুনের রক্তচাপ কম থাকায় স্ট্রোকেমারা গেছেন বলে তাদেও মনে হয়েছে। বিষয় টি তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

(আরকে/এসপি/এপ্রিল ০১, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test