E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কালিগঞ্জে জেলা পরিষদের জায়গা দখল করে পাকাঘর নির্মাণের অভিযোগ

২০২০ জুন ১৫ ১৪:৩২:৩৫
কালিগঞ্জে জেলা পরিষদের জায়গা দখল করে পাকাঘর নির্মাণের অভিযোগ

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে  কলেজ ছাত্রলীগের সাইন বোর্ড তুলে জেলা পরিষদের জায়গা দখল করে চলছে পাকা ভবন নির্মাণ কাজ। বৃহষ্পতিবার বিকেল থেকে উপজেলার বাজারগ্রাম রহিমপুরের শেখ নজরুল নামে এক ব্যক্তি নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

কালীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ অফিস সংলগ্ন মিঠুন, শহীদুল, রাজুসহ কয়েকজন জানান, জেলা পরিষদের ডাক বাংলোর পাশে ২০১৮ সালের পহেলা জুলাই থেকে ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত স্কুল শিক্ষিকা শম্পা গোস্বামী জেলা পরিষদ থেকে দু’ শতক জায়গা ডিসিআর নিয়ে সেখানে একটি পাকা ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিলে কালিগঞ্জ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ ফাহিমের নেতৃত্বে তাদের পরিবারের সদস্য ও রাসেলসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী বাধা দেয়। এ সময় ফাহিম ও রাসেলের নেতৃত্বে টানিয়ে দেওয়া হয় কলেজ ছাত্রলীগের একটি সাইন বোর্ড। ফলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এখনো ওই সাইন বোর্ডটি রয়েছে। শম্পা গোস্বামী ওই ডিসিআর নবায়নের জন্য আবেদন করেছেন।

তারা আরো জানান, গত বৃহষ্পতিবার বিকেলে থেকে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ ফাহিম ও রাসেলের উপস্থিতিতে তার বাবা শেখ নজরুল ইসলাম জেলা পরিষদের ওই জায়গা দখল করে সেখানে দু’টি পাকা ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। তবে বিষয়টি কালিগঞ্জ থানাকে অবহিত করেও কোন লাভ হয়নি। ফাহিম সভাপতির ক্ষমতা ব্যবহার করে কলেজ ছাত্রলীগের সাইনবোর্ডটি ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে বাবা নজরুলকে জেলা পরিষদের জায়গা জবরদখলে সহায়তা করছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।

তবে স্থানীয় একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়,এ অবৈধ নির্মাণকাজের সঙ্গে জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমান, সার্ভেয়র হাসানুজ্জামান ও কেয়ারটেকার তারিকুল জড়িত। জেলা পরিষদের দু’ সদস্য নুরুজ্জামান জামু ও রোজিনা কান্টু কালিগঞ্জ সদরে বসবাস করলেও জবরদখল প্রতিরোধে তাদের কোন ভূমিকা দেখা যায়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কালিগঞ্জ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ ফাহিম নিজেকে অনলাইন পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত থাকা ও তার নানার শ্যালক এহছান প্রথম আলো পত্রিকার খুলনার সাংবাদিক দাবি করে শনিবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদককে জানান, ওই জমি তাদের পৈতৃক ছিল। জেলা পরিষদ ওই জায়গা অধিগ্রহণ করে। গত বছরের পহেলা জুলাই তার বাবা, চাচা সিরাজুল ও আব্দুল হামিদের নামে ৩০ ফুট জায়গা জেলা পরিষদ থেকে এক বছরের জন্য ডিসিআর নেয় । সে অনুযায়ি তার বাবা ও চাচারা সেখানে পাকা ঘর বানাচ্ছেন।

তবে কলেজ ছাত্রলীগের সাইন বোর্ডটি আগে তোলা ছিল বলে জানান তিনি। তবে শম্পা গোস্বামী ডিসিআরকৃত জমিতে ঘর বানানোর সময় তার পরিবারের লোকজন বাধা দেয়। এ সময় কলেজ ছাত্রলীগের সাইনবোর্ড তোলা হলেও তিনি সে সময় ঢাকায় ছিলেন বলে দাবি করেন।

শেখ নজরুল ইসলাম তার ছেলে ফাইমের বক্তব্য সমর্থন করে বলেন বলেন, নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। যেখানে ডিসিআর পেয়েছি সেখানেই ঘর করেছি।

কালিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নূর আহম্মেদ রণি বলেন, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি জেলা পরিষদের জায়গা দখলে সংগঠণের সাইন বোর্ড তুললে সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার । এর সঙ্গে উপজেলা ছাত্রলীগের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
জানতে চাইলে জেলা পরিষদের কালিগঞ্জের ডাকবাংলোর কেয়ারটেকার তারিকুল ইসলাম শনিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি তিনি জেলা পরিষদের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সার্ভেয়র হাসানুজ্জামান তার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শেখ নজরুলকে তার ডিসিআরের কাগজপত্রসহ সোমবার সাতক্ষীরা অফিসে ডাকা হয়েছে।

জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমানের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শওকত হুসেন বলেন, মৌখিক অভিযোগ পেয়ে নজরুল ইসলামকে শনিবার দুপুরে থানায় ডাকা হয়। তিনি একটি ডিসিআরের কাগজ দেখান। লিখিত কোন অভিযোগ না পাওয়ায় ওই ডিসিআর সঠিক না বেঠিক তা যাঁচাই বাছাই করা হয়নি।

সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রশাসক মোঃ নজরুল ইসলাম ও প্রধান নির্বাহী ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি তাদের জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(আরকে/এসপি/জুন ১৫, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test