E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

নিজ বালিকা বধূকে ধর্ষণ, স্কুল শিক্ষক আটক

২০২০ জুলাই ১১ ২৩:৫৩:২৩
নিজ বালিকা বধূকে ধর্ষণ, স্কুল শিক্ষক আটক

নাটোর প্রতিনিধি : পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। নাম শফিকুল ইসলাম। কিন্তু বিয়ে করা তার নেশা। তিনি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষকতা করেন। পর পর ৪টি বিয়ে করেন তিনি। তিনি তৃতীয় বিয়ে করেন নাজিরপুর মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া ফাতেমা আক্তার (১৩) নামের এক বালিকাকে। মেয়েটির সাথে সাত দিন সংসার করার পর কৌশলে তার মায়ের বাড়িতে রেখে যান। বিয়েটি রেজিস্টার না হওয়ায় শফিকুল এক পর্যায়ে ফাতেমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ দেয় এবং বিয়ে অস্বীকার করেন। নিরুপায় হয়ে কিশোরী আজ দুপুরে গুরুদাসপুর থানায় এসে নিজে বাদি হয়ে শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্ষন মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের হওয়ার পরপরই শফিকুল ইসলামকে আটক করে গুরুদাসপুর থানা পুলিশ।

বাল্য বিয়ের শিকার কিশোরীর অভিযোগ- মায়ের সাথে সৎ বাবার বাড়িতে থাকে সে। শিক্ষক শফিকুলের বাড়ি নাজিরপুর বাজারের পাশে আর তাদের বাড়ি কুমারখালি। শফিকুলের পৃর্বের দুই স্ত্রীর মধ্যে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে তালাক হয়েছে ২০১৩ সালের দিকেই। আর প্রথম স্ত্রী সিংড়ায় বাবার বাড়িতে থাকেন।

ওই কিশোরী জানায়, সে স্থানীয় একটি মাদরাসায় ৭ম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় শফিকুল বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাকে বিয়ে করেন। বিয়েতে অসম্মতি থাকলেও অসহায় পরিবারের কথা বিবেচনা করে রাজি হয়েছিল সে। বয়স কম হওয়ায় ৭/৮ মাস আগে গোপনে ধমীয়পন্থায় বিয়ে হয় তাদের। সেসময় যৌতুকও দেওয়া হয়েছিল।

ওই কিশোরীর মা জানান, আগের দুই স্ত্রীর কথা জেনেও শফিকুলের প্রস্তাবে রাজি হয়ে মেয়েকে বাল্যবিয়ে দিয়ে ছিলেন। মাস দুয়েক সংসার করার পর জামাই শফিকুল মেয়েকে তার বাড়িতে রেখে যান। এরপর যোগাযোগ বন্ধ। কিছুদিন আগে হঠাৎ করেই জানিয়ে দেন শফিকুল তার মেয়েকে বিয়েই করেননি। এখন লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছেন না তারা।

তবে ওই কিশোরীকে বিয়ে করার অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক শফিকুল বলেন, আইন মেনে তিনি একাধিক বিয়ে করতে পারেন তাতে সমস্যা কোথায়।

কাজি মোহম্মদ আলী বিয়ে পড়ানোর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বুঝতে না পেরে শফিকুলের চাপে ধর্মীয় মতে বিয়ে পড়িয়ে ছিলেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, শিক্ষক শফিকুলের বিরুদ্ধে শুধু একাধিক বিয়ে করার অভিযোগই নয়। তার বিরুদ্ধে প্রাইভেট পড়ানোর নামে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগও রয়েছে। ২০১৪ সালে আপন চাচাতো বোনের মেয়েকে বিয়ে করায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। এ ঘটনায় তিনি হাজতবাস করেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে। তদন্তে শফিকুল দোষি হলেও বিদ্যালয় থেকে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শফিকুলের ধারাবাহিক এমন যৌন লালসার ফলে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু ঘটনার সতত্যা নিশ্চিত বলেন, কিছু দিন পর পরই শিক্ষক শফিকুলের বিরুদ্ধে নারী ঘটিত অভিযোগ পাওয়া যায়।

প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম জানান, আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। তাছাড়া কখনও কোন অভিভাবক বিদ্যালয়ে এসে এধরনের কোন অভিযোগ দেয় নাই। শিক্ষক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, ভুক্তভোগি কিশোরি থানায় মামলা দায়ের করার পরপরই আমরা তাকে আটক করতে সক্ষম হই। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

(এডিকে/এসপি/জুলাই ১১, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test