E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সেবার নিয়ন্ত্রণ ভেঙে নষ্ট হচ্ছে কর্মপরিবেশ

ঢাকা শিশু হাসপাতালে চলছে ডাঃ শাহীন ও ডাঃ শরীফের রাম রাজত্ব!

২০২০ সেপ্টেম্বর ২২ ২২:৫৩:৩৫
ঢাকা শিশু হাসপাতালে চলছে ডাঃ শাহীন ও ডাঃ শরীফের রাম রাজত্ব!

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানী ঢাকার শেরে বাংলা নগরে অবস্থিত ঢাকা শিশু হাসপাতালকে অনিয়ম আর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন হাসপাতালের বিতর্কিত সহযােগী অধ্যাপক ডাঃ জহিরুল ইসলাম লিটন ও ডাঃ শাহীন শরীফ। দুই ডাক্তারের দায়িত্ব অবহেলার ফলে হাসপাতালের সেবা নিয়ন্ত্রণ ভেঙে কর্মপরিবেশ দিন দিন নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি শিশু হাসপাতালে নার্স নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় ডা. লিটন কতৃক এক পরীক্ষার্থীকে উত্তরপত্রে দেখিয়ে দেওয়ার ভিডিও চিত্র ভাইরাল হয়। এতে বিতর্কের মূখে পড়ে নার্স নিয়োগের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও শিশু হাসপাতালের চেয়ারম্যান।

এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে স্বাস্থ্য ডিজি ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন একাধিক চিকিৎসক ও তাদের সহকর্মীরা। কিন্তু অদৃশ্য কারণে ডা. লিটনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দিকেও। এনিয়ে হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসকের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়, ঢাকা শিশু হাসপাতালের এনেসথেসিয়া বিভাগের সহযােগী অধ্যাপক হিসেবে ডাঃ জহিরুল ইসলাম লিটন দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ কর্মরত রয়েছেন। তিনি দায়িত্ব অবহেলার পাশাপাশি অন্যদের কাজে বাধা প্রদান করে আসছেন।

এমনকি এনেসথেসিয়া বিভাগের চিকিৎসক হলেও দীর্ঘদিন যাবত তিনি শিশুদের কোন এনেসথেসিয়া দেন না বরং অন্য চিকিৎসকদের নিরুৎসাহিত করে আসছেন। একই সময়ে ডা. লিটন ঢাকা শিশু হাসপাতালে চাকুরীরত অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালে নিউরােআইসিউ কনসালটেন্ট হিসেবে চাকুরী করে আসছেন। যা শিশু হাসপাতলের চাকুরী নিয়মের সম্পূর্ণ পৱিপন্থি।

আরো জনশ্রুতি রয়েছে, সপ্তাহ খানেক আগে নিয়ম বহির্ভুত কার্যকলাপের জন্য এনাম মেডিকেল কলেজ প্রশাসন তাকেসহ অন্য এক চিকিৎসককে চাকুরী থেকে বহিষ্কার করে। ডাঃ জহিরুল ইসলাম লিটনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় ঠিকাদার ও সন্ত্রাসীদের সহায়তায় প্রশাসনের বিভিন্ন প্রক্রিয়াকে স্থবির এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বাভাবিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। পাশাপাশি এদের সহযােগীতায় হাসপাতলের উপ-পরিচালক পদ বাগিয়ে নেওয়ার জোর তৎপরতা চালিয়ে ব্যর্থ হন তিনি।

ডাঃ জহিরুল ইসলাম লিটন অগণতান্ত্রিক ভাবে ঢাকা শিশু হাসপাতাল শাখার স্বাচিপের সাধারণ সম্পাদক হয়ে অনিয়ম দূর্নীতি এবং অনিয়মের রাজত্ব কায়েম করেছে। যা নিয়ে স্বয়ং শিশু হাসপাতালের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় সময় ডাঃ ও ডাঃ শাহীন শরিফ এনেসথেসিয়া এবং সার্জারী বিভাগসহ অত্র হাসপাতালে
কর্মরত নার্স, স্টাফ এবং বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে অশালিন আচরণ এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। যা কাজের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্টসহ সবার মধ্যে ভীতি তৈরি হয়।

লিখিত অভিযোগটিতে লেখা রয়েছে, ডাঃ জহিরুল ইসলাম লিটন একজন নিয়মিত মাদক সেবক এবং তার সাথে নেশার সহযােগী হিসাবে থাকে একই হাসপাতালের এনেসথেসিয়া বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডাঃ শাহীন শরিফ ও জাহাঙ্গীর কবির। যদিও ডাঃ জাহাঙ্গীর কবির হাপাতালের পরিচ্ছন্নতার কাজে যুক্ত। এর ফলে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় যে কোন এনেসথেসিয়াতে অংশ গ্রহণ করা কোমলমতি শিশুদের মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায় বলে আশঙ্কা রয়েছে।

একাধিক চিকিৎসকরা জানান, 'বিতর্কিত চিকিৎসক ডা. লিটন মাদকসেবী কিনা সেটা নিশ্চিতে প্রয়োজনে ডোপ টেস্ট করাতে পারেন সংশ্লিষ্ট দফতর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখনই স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে দেশের মানুষকে আশার বানী শোনালেন; তখন জনগণও সরকার গৃহিত পদক্ষেপ বাস্তবায়নে বিশ্বাস করে। চিকিৎসা সেবায় দেশের মানুষ যখন সরকারের প্রতি আস্থা রাখতে শুরু করে তখনই স্বাচিপ নেতা ডা. লিটনের বিতর্কিত কর্মকান্ডে স্বাস্থ্য বিভাগ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। এমনকি স্বাচিপের গুটিকয়েক বিপদগামী সদস্যদের কারণে সংগঠনটির সুনাম বিনষ্টের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবায় ধস নামার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।'

একজন চিকিৎসক এত অনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত থাকা সত্বেও ডাঃ জহিরুল ইসলাম লিটন, ডাঃ শাহীন শরিফ এবং ডাঃ জাহাঙ্গীর কবির কি করে ঢাকা শিশু হাসপাতালের মতাে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন তা নিয়ে সচেতন মহল প্রশ্ন তুলেছেন।

পাশাপাশি এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণে শিশু হাসপাতালের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করা ঢাকা শিশু হাপাতালের নির্যাতিত ও ভীত সন্ত্রস্ত চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য ডিজির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

(টিজি/এসপি/সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test