E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

গোবিন্দগঞ্জে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত, অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

২০২০ অক্টোবর ০২ ২৩:৩০:০২
গোবিন্দগঞ্জে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত, অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমার ১১৬ সেঃমিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি উপচে ও বাঁধ ভেঙ্গে পৌরসভাসহ নদী তীরবর্তী ১৩টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট, ফসলসহ পুকুর উপচে মৎস্য খামারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় গোটা  উপজেলায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

গোবিন্দগঞ্জ -দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের উপর দিয়ে বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

করেতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে গোবিন্দগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের পৌর এলাকার খলসী চাঁদপুরের আগের ভাঙ্গা দুটি পয়েন্টের অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে পৌর শহরের একাংশসহ ডুবে গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার বগুলাগাড়ী নামাপাড়া সামক স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে দরবস্ত ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম, হরিরামপুর ইউনিয়নের ৭টি গ্রাম, তালুককানুপুর ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম, মহিমাগঞ্জের বোচাদহ ও বালুয়া বাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে রাখালবুরুজ ইউনিয়নের ৬টি গ্রাম, শিবপুর ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম , মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম, এছাড়াও বন্যার পানি প্রবেশ করায় ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম, শালমারা ইউনিয়নের ৪টি গ্রাম ও সাপমারা ইউনিয়নের ৫টি গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামের রাস্তাঘাটসহ শত-শত বিঘা ফসলী জমি পানিতে ডুবে গেছে। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের ঘর বাড়িতে পানি ওঠায় পানিবন্দী পরিবারগুলো তাদের গবাদি পশু, আসবাবপত্র নিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। শুকনো খাবার ও জ্বালানির অভাবে ওইসব এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

বন্যা কবলিত এলাকার অনেকে ইতিমধ্যে বাড়িঘর ছেড়ে গরু, ছাগল নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে উপজেলার তিন হাজার হেক্টরের বেশী জমির আমন ধান, আখ, এবং বিভিন্ন শাকসবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে।

এদিকে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্তরে হাটুপানি হওয়ায় ডাক্তার, নার্স, রোগী ও তাদের স্বজনদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতে করে চিকিৎসা কার্যক্রমে বিঘিœত হচ্ছে।

অপর দিকে, গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের উপর দিয়ে বিভিন্ন স্থানে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ওই সড়কে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন। কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ভারী যানবহনগুলোকে পলাশবাড়ী উপজেলা হয়ে পলাশবাড়ী -দিনাজপুর অঞ্চলিক সড়কে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ বর্মন জানান, বুধবার জেলা প্রশাসক বন্যা এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং বন্যার্ত মানুষের জন্য ৩ মেঃ টন চাল ও ৪শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দিয়েছেন। ঐ বরাদ্দে বাড়তি আলু ডালসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী যুক্ত করে স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের মাধ্যমে পৌরশহরসহ উপজেলার বিভিন্ন বন্যা কবলিত এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও পৌর এলাকায় বন্যার্ত মানুষের জন্য ৫ মেঃ টন চাল বরাদ্দ দেয়ায় পৌর মেয়র আতাউর রহমান সরকার বন্যার্ত মানুষের মাঝে সেসব বিতরণ করেছেন।

(এসআরডি/এসপি/অক্টোবর ০২, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test