E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাবালকের সম্পত্তি ফিরে পেতে আদালতে মামলা, মামলা তুলে নিতে হুমকি

২০২০ অক্টোবর ০৬ ২১:৫৬:৩৫
নাবালকের সম্পত্তি ফিরে পেতে আদালতে মামলা, মামলা তুলে নিতে হুমকি

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : নিয়ম বহির্ভুতভাবে হস্তান্তর করা নাবালকের সম্পত্তি ফিরে পেতে আদালতে মামলা করায় স্বপরিবারের জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। এ ঘটনায় সাতক্ষীরার কাটিয়ার জেলগেট এলাকার শেখ শফিকুল ইসলামের ছেলে শহীদুল ইসলাম গত শনিবার সাতক্ষীরা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন।

শহীদুল ইসলাম জানান, তার বাবা খুলনার খালিসপুরের ক্রিসেন্ট জুট মিলে চাকুরি করতেন। তিনি তার বাবার প্রথম স্ত্রী জাহানারার একমাত্র সন্তান। রাজিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর বাবা মা জাহানারাকে তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। পরে রাজিয়াকে ও পরে ভারতের পশ্চিম বঙ্গের,বেড়াচাপার যদুরাটি গ্রামের শাহানা বেগমকে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন। পোষ্ট অফিস মোড়ে ইসলাম ওয়াচ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তিনি দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করে আসছিলেন। ২০১০ সালে দু’ সৎ মায়ের চাপে তার বাবা ওই দোকান পত্রিকা পরিবেশক আরিফ খানের কর্মচারি আব্দুস সবুরের নিকট স্বল্প মূল্যে দখলে দিয়ে তাকে নিঃস্ব করে দেন। ২০১৫ সালে বাবা মারা যান।

তিনি আরো জানান, ১৯৭৬ সালের ১৪ অক্টোবর ৬৬৬৫ নং রেজিষ্ট্রি কোবালা মূলে কাটিয়া মৌজার সাড়ে সাত শতক ও ওই বছরের ২৫ অক্টোবর ৬৯৬৩ নং কোবালা মূলে একই মৌজার সাড়ে ছয় শতক জমি মোট ১৪ শতক জমির মালিক হন। ওই জমির মালিক হিসেবে একই বছরে তার নামে নামপত্তন করা হয়। ওই জমিতে তিনি বাড়িঘর নির্মাণ করে ও গাছ গাছালি লাগিয়ে শান্তিপূর্ণ ভোগদখলে আছেন।

অথচ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওই জমি নাবালকের অভিভাবক হিসেবে ১৯৮৭ সালের ২৮ জুন বাবা শেখ শফিকুল ইসলাম ৫০১৭ ও ৫০১৮ নং দলিল মূলে সৎ মা শাহানা বেগম ও রাজিয়া বেগমের নামে লিখে দিয়ে মর্মে ডিপি ২০৮৬ নং হাল খতিয়ানে রেকর্ড করাইয়াছেন মর্মে চলতি বছরের ৮ জুন জানতে পারেন। পরবর্তীতে তিনি দলিলপত্র সংগ্রহ করিয়া দু’ সমায়ের বিরুদ্ধে গত ২০ আগষ্ট সাতক্ষীরা সদর সহকারি জজ আদালতে দেঃ ৯৪/২০ মামলা করেন। একই সাথে ওই জমিতে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করলে বিচারক নাসিরউদ্দিন ফরাজী ওই জমির উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।

বিবাদীগণ মামলা ও নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত আদেশের নোটিশ গত ৩ অক্টোবর সকালে পাওয়ার পরপরই বিবাদীগণ ও তাদের দু’ সন্তান যথাক্রমে শাহানা বেগম, রাজিয়া বেগম, শেখ সাইফুল ইসলাম সুমন ও শেখ জাহিদুল ইসলাম লাভলু তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়। দরজায় লাথি মেরে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে সুমন ও লাভলু। দু’ লাখ টাকার বিনিময়ে সন্ত্রাসী ভাড়া করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে হত্যার হুমকি দেয় সুমন। তার চিৎকার ও চেঁচামেচি শুনে শাহাজাহান আলী ও ইকরামুল কবীরসহ কয়েকজন ছুঁটে এলে হুমকিদাতারা চলে যায়। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় আতঙ্কিত হয়ে তিনি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান। সেখান থেকে থানায় যোগাযোগ করতে বললে বাধ্য হয়ে তিনি ওই দিন সন্ধ্যায় থানায় যেয়ে সাধারণ ডায়েরী করেন।

জানতে চাইলে শেখ সাইফুল ইসলাম সুমন বলেন, তাদের বাবা দু’ মাকে ওই জমি লিখে দেওয়ার পর বড় ভাই এর কোন স্বত্ব নেই। এরপরও তাকে ওই বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয়েছে। স্বত্ব না থাকার পরও মামলা করায় তাদের সঙ্গে বড় ভাই এর কথা কাটাকাটি হয়েছে।

শহীদুল ইসলামের আইনজীবী অ্যাড. তারক চন্দ্র মিত্র জানান, বিবাদী পক্ষ মঙ্গলাবার আদালতে হাজির হয়ে জবাব দাখিলের জন্য আদালতে সময়ের আবেদন করেছেন। আগামি ২৮ অক্টোবর বিবাদীপক্ষের জবাব দাখিল ও স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আদালতে শুনানী করার জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।

(আরকে/এসপি/অক্টোবর ০৬, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test