E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আ. লীগ নেতা শরবত হত্যা : ৩ দিনের রিমান্ডে ইউপি চেয়ারম্যান

২০২০ অক্টোবর ০৮ ১৭:১১:১৩
আ. লীগ নেতা শরবত হত্যা : ৩ দিনের রিমান্ডে ইউপি চেয়ারম্যান

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা শরবত মোল্লা হত্যা মামলার প্রধান আসামী খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদত শাহানেওয়াজ ডালিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত তিন দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছে। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক জহিরুল ইসলামের ১০ দিনের রিমাণ্ড আবেদন শুনানী শেষে আমলী আদ্লাত ৮ এর বিচারক ইয়াসমিন নাহার এ আবেদন মঞ্জুর করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ৮ এপ্রিল গদাইপুর বিলে মঞ্জুরুল মোল¬ার চিংড়ি ঘেরের দু’ কর্মচারিকে বেঁধে রেখে মাছ লুটের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে ক্ষুব্ধ হন গদাইপুর গ্রামের রাজাকার মোজাহার সরদারের ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহানেওয়াজ ডালিম ওরফে ডালিম ডাকাত। এরই জের ধরে ডালিমের দু’ ভাই ও তাদের লোকজন ৯ এপ্রিল সবেবরাতের রাতে গদাইপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরবৎ মোল্লা ও মঞ্জুরুল মোল্লার চিংড়ি ঘেরে লুটপাট চালায়।

১০ এপ্রিল সকালে ওই মাছ চেয়ারম্যান, তার ভাই আহসান হাবিব টগর গদাইপুর মাছের সেটে বিক্রি করতে গেলে শরবত মোল্লার সঙ্গে বচসা বাঁধে। এ সময় সরকারি ১০ টাকার চাল গরীবদের না দিয়ে তার পকেটের লোকজনদের দেওয়া নিয়ে হাতাহাতিও হয়। পরে সকাল নয়টার দিকে পুরাতন কবরস্থানের পাশে শরবৎ মোল্লা, তার স্ত্রী শরিফা খাতুন, প্রতিবেশি আরিফা খাতুন, তুয়ারডাঙার সুবিমল বিশ্বাসসহ কয়েকজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে ডালিম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা। ভাঙচুর করা হয় তাদের বাড়িসহ পাঁচটি বাড়ি।

১০ এপ্রিল দিবাগত রাত একটার দিকে শরবৎ খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় গ্রামের ক্ষুব্ধ মানুষজন ডালিম ও তার কয় সহযোগীদের বাড়ি ভাঙচুর করে। নিহত শরবতের ছেলে সবুজ তার বাবাকে হত্যার অভিযোগে ১১ এপ্রিল শনিবার রাতেই ডালিমকে প্রধান আসামী করে ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করে। এ ছাড়াও টগরকে হত্যার চেষ্টা ও ডালিমের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ভাই ওবায়দুল্লাহ ডাবলু বাদি হয়ে দু’টি ও মুক্তিযোদ্ধা শেখ নুরুল এর বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় তার স্ত্রী জামেলা বেগম বাদি হয়ে আরো একটি মামলা করে।

আওয়ামী লীগের দু’ গ্রুপের সংঘর্ষে শরবৎ হত্যা, উভয়পক্ষের ১০ জন আহত ও কমপক্ষে ১০টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় চারটি মামলায় ১৩৮ জন আসামী হলেও এ পর্যন্ত ১৭জন আসামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকার পর পহেলা আক্টোবর দিবাগত রাত একটার দিকে শরবৎ হত্যা মামলার প্রধান আসামী মোজাহার রাজাকারের ছেলে শাহানেওয়াজ ডালিম ওরফে ডালিম ডাকাতকে ঢাকার খিলখেত এলাকার নিজস্ব বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২ অক্টোবর তাকে জিজ্ঞাসাবােদর জন্য ১০ দিনের রিমাণ্ড আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

এদিকে শাহানেওয়াজ ডালিমকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এলাকাবাসী বৃহষ্পতিবার সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা কালেক্টরেট চত্বরে এক মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করে।

সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক জহিরুল ইসলাম জানান, আদালতের আদেশ পাওয়ার পর শুক্রবার তাকে জেলখানা থেকে তাদের জিম্মায় নিয়ে আসা হবে।

(আরকে/এসপি/অক্টোবর ০৮, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test