E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফেসবুকের কল্যাণে এক যুগ পর পাগলী দূর্গা ফিরে পেল তার পরিবার 

২০২১ জানুয়ারি ১৪ ১৮:১৯:৪১
ফেসবুকের কল্যাণে এক যুগ পর পাগলী দূর্গা ফিরে পেল তার পরিবার 

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : ফেসবুকের কল্যাণে ও টাঙ্গাইলের নাগরপুরের মহানুভব রনির প্রচেষ্টায় হারিয়ে যাওয়ার প্রায় এক যুগ পর দিনাজপুরের পাগলী দূর্গা ফিরে পেল তার পরিবার।

মানুষের কাছ থেকে মানবতা যে এখনও হারিয়ে যায়নি তা আবারও প্রমান করলেন নাগরপুর উপজেলার ধুবড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে আসাদুজ্জামান রনি। ভারসাম্যহীন পাগলী দূর্গাকে এক যুগ আশ্রয় দিয়ে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। রনি দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর মানসিক ভারসাম্যহীন দূর্গাকে আশ্রয় দিয়ে তার সকল দায়ীত্ব নিজ কাধে তুলে নিয়েছিলেন। সেই সাথে তার পরিচয় ও পরিবারের সন্ধান করতে বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা চালাতে থাকেন। কোন উপয় না পেয়ে রনি ফেসবুকে মেয়েটির সন্ধান পেতে ছবি সম্বলীত একটি পোষ্ট দেন। আর ফেসবুকের কল্যাণে পাওয়া যায় মেয়েটির পরিবারের সন্ধান।

ধুবড়িয়া বাজার বনিক সমিতির সভাপতি আসাদুজ্জামান রনি বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েটিকে ২০১০ সালের দিকে ধুবড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে দেখি। মেয়েটিকে তার নাম পরিচয় জিজ্ঞেস করলে সে কিছুই বলতে পারছিল না। তখন আমি তাকে আমার বাড়িতে এনে আশ্রয় দেই। আমি নাম পরিচয়হীন মেয়েটির নাম দেই লাইলী। সেই সাথে মেয়েটিকে তার পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকি। দূর্গা দীর্ঘ আট বছর কোন প্রকার কথা বলতে পারেনি। অবশেষে দীর্ঘ ১১বছর পর এলাকার মানুষের সহযোগিতায় বিশেষ করে আওয়ামী লীগ নেতা আওলাদ হোসেন লিটন ভাইয়ের মাধ্যমে মেয়েটির পরিবারের সন্ধান পাই। জানা যায় লাইলীর আসল নাম দূর্গা রানী। স্বামীর নাম রমেশ, বাড়ি দিনাজপুরের সস্তীতলা শহীদুল কলোনী। মেয়েটির বাবার বাড়ি বগুড়া জেলার সান্তাহারের সুইপার কলোনী।

বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে দূর্গাকে তার স্বামী ও তার ভাইদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় মেয়েটির আশ্রয়দাতা রনি অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, মেয়েটিকে তার পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দিতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। মেয়েটি যেন বাকি জীবনটা তার পরিবারের সাথে সুখে শান্তিতে দিন কাটাতে পারে সৃষ্টিকর্তার নিকট সেই প্রার্থনা করি।
স্ত্রীকে দীর্ঘ এক যুগ পর ফিরে পেয়ে রমেশ হরিজন বলেন, প্রায় ১১ বছর রনি ভাই আমার স্ত্রীকে স্বযতেœ লালন পালন করে আজ আমার কাছে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। এটা মানবতার এক অনন্য উদাহরণ। আমার স্ত্রীকে ফিরে পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। আমার দুই মেয়ে তাদের মাকে কাছে পেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। রনি ভাইকে ধন্যবাদ দেয়ার ভাষা আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মো. আওলাদ হোসেন লিটন বলেন, আমরা যে কাজটি করতে পারিনি রনি তা করে দেখিয়েছে। মানবতা আজোও বেঁচে আছে এটা তারই সাক্ষ্য বহন করে। দিনাজপুরে বসবাসকারী আমার ভাই দীলিপ এর সাথে দূর্গা (লাইলী) এর বিষয়ে আলাপ করলে, দিলিপ তার ফেসবুকে ছবি সহ পোষ্ট করলে তার ফেসবুকের শতশত বন্ধুরা বিষয়টি শেয়ার করে। একপর্যায়ে, হরিজন সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে যোগাযোগ হওয়ায়, পরিচয় নিশ্চিত হয়ে দূর্গা (লাইলী) কে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

(আর এস/এসপি/জানুয়ারি ১৪, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test