E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

খুড়িয়ে চলছে সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতাল, বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি 

২০২১ জানুয়ারি ২০ ২৩:০২:৪৭
খুড়িয়ে চলছে সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতাল, বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি 

রঘুনাথ খাঁ,সাতক্ষীরা : খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে জাতীয় অধ্যাপক ডা: এম আর খান প্রতিষ্ঠিত সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতাল। জনবল সঙ্কট, আধুনিক সরঞ্জাম ও সরকারি বরাদ্দ না থাকায় শিশু চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে,বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ২৫০ শয্যা হয়েছে। ২০১২ সালে শহরতলীর বাঁকালে নির্মিত হয়েছে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ। কিন্তু এ জেলার শিশুদের চিকিৎসার একমাত্র নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতাল। হাসপাতালটি বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক ডা: এম আর খান নিজ জেলার শিশুদের সুচিকিৎসার জন্য এটি প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু সঠিক তদারকি এবং সরকারি বরাদ্দ না থাকার কারণে হাসপাতালটিতে শিশু চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে। হাসপাতালটিও পরিবেশও যথেষ্ট নোংরা হওয়ায় অনেক সময় শিশুদের সাথে আসা অভিভাবকরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। ভবনে কোথাও কোথাও ফাটলও দেখা দিয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালটি ৩০টি বেড নিয়ে কার্যক্রম শুরু করলেও বর্তমানে ৫০টি বেড রয়েছে। কিন্তু প্রতিটি এখানে ১৫০ থেকে ২০০ শতাধিক রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। এক্ষেত্রে যাদের বাড়ি কাছাকাছি তাদের ভর্তি রাখার মত হলেও বেড সংকটের কারণে বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে হয়। যে কারণে ৫০টি বেড থাকলেও আমরা ৭০ জনের মত রোগি ভর্তি রাখি। কিন্তু রাখার প্রয়োজন আরো বেশি হলেও বেড সংকট এবং ভাবনের ধারণ ক্ষমতা কম থাকায় সম্ভব হয়না। এছাড়া হাসপাতালে আধুনিক সরঞ্জাম নেই। বিশেষ করে প্যাথলিক ল্যাবটি খুবই পুরাতন। অটো এ্যানালাইজার সার্ভিস ভালো নেই, ফটোথেরাপি, আধুনিক কিউবেটর, ভেইন ফাইন্ডার, খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। যে বেডগুলো রয়েছে তার অবস্থাও খুবই খারাপ।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী ডা: আবুল বাসার আরমান বলেন, শিশু চিকিৎসার একমাত্র প্রতিষ্ঠান হওয়ায় বিশেষ করে শীত মৌসুমে শিশুরা শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। ফলে এখানে রোগীদের চাপ বাড়ে। প্রয়োজনীয় লোকবল, আধুনিক সরঞ্জামাদি না থাকায় আমাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। গত বছরের তুলনায় এবছর চাপটা অনেক বেশি। শিশুরা শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। তবে এবার ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় আমরা হিশশিম খাচ্ছি।

সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর রশিদ বলেন, শীত মৌসুমে শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। ফলে এখানে রোগীর চাপ বাড়ে। কিন্তু সে তুলনায় হাসপাতালটির কোন উন্নয়ন হয়নি। জাতীয় অধ্যাপক প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালটিতে সরকারি বরাদ্ধ বাড়িয়ে দ্রুত উন্নয়ন করার দাবি জানান তিনি।

হাসপাতালের ম্যানেজিং কমিটির (সিলেকশনে) সাধারণ সম্পাদক জামান খান বলেন, লাল ফিতায় আটকা পড়ার কারণে প্রতিষ্ঠানটির এখন নাজুক অবস্থা। বরাদ্দ তো নেই। পাশাপাশি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কোন সুনজর না থাকায় সাতক্ষীরার একমাত্র শিশু চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানটি খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে।

সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. ওসমান গণি বলেন, সাতক্ষীরায় শিশুদের চিকিৎসায় এটি একমাত্র প্রতিষ্ঠান হলেও এখানে আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং লোকবল না থাকায় অনেক সমস্যা হচ্ছে। হাসপাতালটিতে সরকারি বরাদ্দ বাড়িয়ে আধুনিকায়ন করার দাবি জানান তিনি।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও শিশু হাসপাতালের সভাপতি এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, এখানে আসলে কোন বরাদ্দ নেই। তারা নিজেদের আয়ে নিজেরাই চলে। তারপরও স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়ে বরাদ্দের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে বরাদ্দ আসলে হাসপাতালের উন্নয়নে কাজ করা হবে।

(আরকে/এসপি/জানুয়ারি ২০, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test