E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাবমেরিন ক্যাবলে আলোকিত হচ্ছে হাইমচরের ঈশানবালা, মধ্যচর ও রাজরাজেশ্বর

২০২১ ফেব্রুয়ারি ০৪ ১৪:১৯:০৩
সাবমেরিন ক্যাবলে আলোকিত হচ্ছে হাইমচরের ঈশানবালা, মধ্যচর ও রাজরাজেশ্বর

উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : সাবমেরিন ক্যাবলে দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষও পাবে বিদ্যুতের আলো। প্রমত্তা পদ্মা ও মেঘনা নদীর ভাঙ্গা গড়ার মধ্য দিয়ে জেগে উঠা হাইমচর উপজেলার ৪নং নীলকমল ইউনিয়নের ঈশানবালা, মধ্যচর ও চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর। চাঁদপুর জেলা সদর থেকে দক্ষিণ ও পশ্চিমে ২৫ কিলোমিটার নদীপথ পদ্মা-মেঘনার কোল ঘেঁষে জেগে উঠে এই চর। সেখানে প্রায় ৮০ হাজার মানুষের বসবাস বলে জানা যায়। সেখানকার বেশিরভাগ মানুষই কৃষি ও জেলে নির্ভর। ঈশানবালার পাশে শরিয়তপুর জেলার ডামুড্যা ও ভেদেরগঞ্জ উপজেলা এবং চাঁদপুর থেকে পশ্চিমে নদী পাড় হলেই রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন। নির্ভেজাল প্রকৃতিকে আলিঙ্গন করা যায় এখানে।

স্থলভাগ থেকে বিচ্ছিন্ন এই চরে কী কোনদিন বিদ্যুতের আলো পৌঁছাবে এটা ছিলো নিছকই স্বপ্ন। কিন্তু স্বপ্নই এখন বাস্তবে পরিণত করেছেন চাঁদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। তার আন্তরিক সহযোগিতায় নিজ নির্বাচনী এলাকার চরাঞ্চলগুলোকে অন্ধকার থেকে আলোকিত করার উদ্যোগ নেন তিনি। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের মাধ্যমে এখন বিদ্যুতের আলো পৌঁছাচ্ছে এসব দুর্গম চরাঞ্চলে। চর থেকে দুর্গম চরে সাবমেরিন ক্যাবলে বিদ্যুত পৌঁছে যাচ্ছে ।

প্রায় ৭ হাজার পরিবার এই বিদ্যুৎতের আওতায় এসেছে ইতিমধ্যে প্রায় ১০ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ মিটার দেওয়া হয়েছে। এখন অপেক্ষা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ চালু করা। চরের মানুষের নিকট বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেয়াতে রীতিমতো উৎসব শুরু হয়ে গেছে। অনেকদিনের অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড প্রকৌশলী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ বেলায়েত হোসেন ও শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোঃ জুলফিকার রহমান জানান, অফগ্রিড এলাকার এসব চরের মানুষের জন্য সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুত সংযোগের ব্যবস্থা করেছে সরকার। এই চরের ২০ হাজারের বেশি পরিবার এবার বিদ্যুতের আলোয় নিজের ঘর আলোকিত করতে পারবে।

এভাবে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুত পৌঁছানো সম্ভব কি না তা নিয়ে বছর কয়েক আগেও ঢের বিতর্ক ছিল। কিন্তু সব বিতর্ককে পেছনে ফেলে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) প্রথমে সদ্বীপে বিদ্যুত পৌঁছে দিতে সাগরের তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবল নির্মাণ করে। বিগত ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর দেশের ইতিহাসে প্রথমবার সদ্বীপে বিদুৎ পৌঁছায় সাবমেরিন ক্যাবলে। এক দুই কিলোমিটার নয় সীতাকু- থেকে সদ্বীপ পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের প্রথম বিদ্যুৎ সঞ্চালন সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হয়। শুরুতেই সাগরকে জয় করাতে নদী পেরনোর চিন্তা গতি পায়।

দেশের যেসব বড় নদী রয়েছে তার চরাঞ্চলে বহু দিন থেকেই মানুষের বসতি গড়ে উঠেছে। এসব চরে একে একে সাবমেরিন ক্যাবলে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়। এই ধারাবাহিকতায় শরীয়তপুরে পদ্মার চরে পৌঁছে দেয়া হয় বিদ্যুৎ। এখন পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার চরে বিদ্যুৎ।

পল্লী বিদ্যুতের শতভাগ বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমে এই অঞ্চলগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করায় বিদ্যুত সুবিধা পেতে যাচ্ছে এই প্রত্যন্ত এলাকার প্রায় দশ হাজার গ্রাহক।

চাঁদপুর হাইমচর মেঘনার চর ঈশানবালা ও মধ্যে চরে শোভা পাচ্ছে সাবমেরিন ক্যাবল বিদ্যুতের লাইন।

(ইউ/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test