E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিচারাধীন মামলা মীমাংসার চেষ্টা

শালিসি বৈঠকে বৃদ্ধসহ চারজনকে পেটালেন নলতা ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর

২০২১ ফেব্রুয়ারি ০৮ ১৯:৪৩:০৫
শালিসি বৈঠকে বৃদ্ধসহ চারজনকে পেটালেন নলতা ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : আদালতে বিচারাধীন মামলা শালিসের মাধ্যমে মীমাংসা করে নিতে রাজী না হওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার লোকজন এক বৃদ্ধসহ চারজনকে মারপিট করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে। 

দেবহাটা উপজেলার সখীপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের গৌর চন্দ্র দাস বলেন, তাদের শিবপুর মৌজায় তাদের রেকডীয় জমির মধ্যে সাত শতক জমি দখল করে রাখে তাদেরই প্রতিবেশী হরেন ঋষিসহ তিনজন। জমি ছেড়ে দিতে বলায় হরেন ঋষিসহ তিন জন বাদি হয়ে ওই জমি ভূল করে তার (গৌর) নামে রেকর্ড হয়েছে উল্লেখ করে রেকর্ড সংশোধনের জন্য তাকেসহ ১০ জনকে বিবাদী করে কালিগঞ্জ সহকারি জজ আদালতে গত বছরের ২৮ জানুয়ারি মামলা (১৮/২০)করেন। মামলার করে হরেন নিষেধাজ্ঞা চাইলে ৯ ফেব্র“য়ারি শুনানীর জন্য দিন ধার্য করেন বিচারক। একইভাবে ৭ শতক রেকডীয় জমি ফিরে অনিল কুমার দাসসহ তার চার ভাইপো বাদি হয়ে হরেণ ঋষিসহ তিনজনকে বিবাদী করে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর একই আদালতে দেওয়ানী (৮৩/২০) মামলা দায়ের করেন।

গৌর চন্দ্র দাস বলেন, দেওয়ানী আদালতে মামলা করার কয়েক দিন পরই হরেন দাস একই বিষয়ের উপর নলতা ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেন। নোটিশ পাওয়ার পর তারা ইউপি চেয়ারম্যানকে দেওয়ানী মামলার বিষয়টি উল্লেখ করলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। এ নিয়ে এ পর্যন্ত পটষিদে কমপক্ষে ১০ বার শালিস ডাকা হয়েছে। একপর্যায়ে গত শনিবার সকাল ১১টায় এ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে বসাবসি হয়। বসাবসির একপর্যায়ে হলরুমে নলতা ইউপি’র ৭ নং সদস্য আব্দুল্লাহ, সাবেক সদস্য আব্দুস সামাদ ও আব্দুল গফুরকে কাগজপত্রের আলোকে বিচার করার জন্য দায়িত্ব দিয়ে তিনি তার কক্ষে চলে যান বিএনপি নেতা ও তিনটি নাশকতা মামলার আসামী চেয়ারমান আজিজুর রহমান। হরেণ ঋষিদের জাল বয়নামার বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি। একইভাবে বিচারকরা দু’টি দেওয়ানী মামলার পরিবর্তে হরেণ ঋষির মামলা নিয়ে বিচার করার প্রতিবাদ করলে এতে ক্ষুব্ধ হন বিচারকরা। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি এক বেতের ছড়ি নিয়ে এসে টেবিলের উপর রাখা অনিল ও ধনঞ্জয় এর হাতে আঘাত করেন।

প্রতিবাদ করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বাইরের দরজা লাগিয়ে দিয়ে চেয়ারম্যান সমর্থক ইছাপুরের শেখ আবু হাসান, বাবুরাবাদের আইয়ুব আলী গফুর গাজী, পূর্ব নলতার নওশের, দুড়দুড়িয়ার খালেকসহ কয়েকজন তাকেসহ তার ছেলে দুলাল দাস, ভাইপো অনিল ও ধনঞ্জয়কে এলোপাতাড়ি মারপিট করে। এ সময় তাদেরকে আগামিতে পরিষদে না আসার জন্য হুশিয়ারি দেন চেয়ারম্যান। শনিবার তাদেরকে মারপিট করার পরপরই চেয়ারম্যানের নির্দেশে গ্রাম পুলিশ আব্দুল মজিদ, পলাশ, আল আমিন , বাবু দফাদার, হরেণ ঋষিসহ কয়েকজন তাদের আপোষের জমি বেড়া দিয়ে ঘিরে নেয়। তারা কয়েকজন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিলেও পরবর্তীতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে রোববার সখীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তবে রাতের আঁধারে হরেণ ঋষি দখলে নেওয়া বেড়া সরিয়ে নিয়েছে।

সখীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শেখ তানভির হোসেন সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, গৌর দাসের আঘাত গুরুতর নয়। তাকে যে কোন সময় ছাড়পত্র দেওয়া হবে।

জানতে চাইলে নলতা ইউপি চেয়ারম্যান আরিজুল ইসলাম বলেন, দেওয়ানী মামলা চললেও স্থানীয়ভাবে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় তিনি পরিষদে শালিস করেছেন। তবে শালিসে কাউকে মারপিট করার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test