E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

দখলমুক্ত হলো বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপ, অবৈধ দখলদারের হামলায় আহত ২০

২০২১ ফেব্রুয়ারি ০৯ ১৯:২১:৫৪
দখলমুক্ত হলো বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপ, অবৈধ দখলদারের হামলায় আহত ২০

বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ২০ জন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানা গেছে। পুলিশ  লাঠিচার্জ ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। বগুড়া চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল চত্বরে মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় ঘণ্টাব্যাপী এই সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। সম্প্রতি হাইকোর্টের রায়ে বিরোধ নিষ্পত্তির পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হতে বগুড়ার একজন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়। নিয়ম মাফিক অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইতিমধ্যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছেন। কিন্তু মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম হাইকোর্টের রায় অবজ্ঞা করে নির্বাচনের বিরোধিতা করে মোটর মালিক গ্রুপের অফিস ও মালামাল তার অবৈধ দখলে রাখে। অফিস দখলমুক্ত করতে বগুড়া জেলা প্রশাসন হতে একাধিকবার বৈঠকে বসতে আমন্ত্রণ জানালেও বিভিন্ন অযুহাতে তারা বৈঠকে বসেনি।

জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে চারমাথা বাস টার্মিনালে মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম এর নেতৃত্বে মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের ওপর হামলার হুমকী মাইকে ঘোষণা দিয়ে প্রচারসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত লোকজন নিয়ে মহড়া দেয়। এই ঘটনায় চারমাথা এলাকায় সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরির পরিবেশ বিরাজ করছিল।

মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক আহ্বায়ক ও বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্য দিনের মতো তিনি কাজের তদারকিতে চারমাথা অফিস এলাকায় গেলে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। হামলার খবরে (অবৈধ দখলদার কর্তৃক দীর্ঘদিন নির্যাতিত) মোটর মালিক গ্রুপের সদস্যরাসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা তাকে রক্ষার্থে ছুটে যায়। এক পর্যায়ে মোটর মালিক গ্রুপের অফিসের বেআইনী/অবৈধ দখলদার আমিনুলের নেতৃত্বাধীন স্বশস্ত্র লোকজন পিছু হটতে বাধ্য হয়। তারা পিছু হটার সময় মোটর মালিক গ্রুপের অফিস ভাংচুরসহ পুড়িয়ে দেয়। তারা ক্ষমতার জোর দেখিয়ে হাইকোর্টের রায় অবমাননা করে অবৈধভাবে মোটর মালিক গ্রুপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। সাধারণ ভোটে তারা আসতে চায় না। তাদের আহ্বান জানাবো ভোটে আসুন এবং জয়ী হলে আপনাদের ফুলের মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানাবো। তার আগে অস্ত্র ও ক্ষমতার ভয় দেখিয়ে আইন বিরোধী কাজ করবেন না। আজকের ঘটনায় পুলিশসহ আহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং অপরাধীদের বিচারের অাওতায় আনার দাবি জানান।

খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ ও সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবীরের নেতৃত্বে পুলিশ চারমাথায় অবস্থান নেয়। পুলিশ আমিনুলকে সমঝোতার প্রস্তাব দিলে আমিনুল পুলিশকে জানিয়ে দেয় তারা শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে অপর পক্ষকে প্রতিহত করবে। আমিনুল গ্রুপের লোকজন পুলিশের সামনেই লাঠি মিছিল শুরু করে।

অপর দিকে মোহন গ্রুপের প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মী সান্তাহার সড়কে এলজিইডির সামনে অবস্থান নেয়। পুলিশ মাঝামাঝি অবস্থান নিয়ে থাকাকালে আমিনুলের লোকজন লাঠিশোটা নিয়ে পুলিশের ব্যারিকেট ভেঙে ধাওয়া করে এবং পাল্টা ধাওয়ায় আমিনুলের লোকজন পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। জানা যায়, পালিয়ে যাবার সময় আমিনুল গ্রুপ ৩টি বাস ও একটি তেলের পাম্পে ভাংচুরসহ একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে।

সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের জেলা বিশেষ শাখার কনস্টেবল রমজান আলী দুর্বৃত্তের দ্বারা ছুরিকাঘাতের শিকার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেলে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করে। পুলিশ রাবার বুলেট ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে মোহন গ্রুপের লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

জানা যায়, ঘটনাস্থল হতে পুলিশ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। সংঘর্ষের কারণে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। সংঘর্ষ থেমে যাওয়ার পর স্বশস্ত্র আমিনুল গ্রুপ আবার চারমাথায় অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়। বর্তমানে চারমাথা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এবং বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

(আর/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test