E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ছোট ভাইকে অপহরণ করে বড় ভাই জেলে 

২০২১ ফেব্রুয়ারি ১০ ১৫:৪৫:৩৫
ছোট ভাইকে অপহরণ করে বড় ভাই জেলে 

উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : আপন বড় ভাই অপহরণ করেছে ছোট ভাইকে। রহস্যময় একটি চিঠির সূত্র ধরে বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে। এ ঘটনায় বড় ছেলেকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন বাবা আবু তাহের। ইতিমধ্যে পুলিশ ছোট ভাই রায়হান এহসান রিহান (৫)কে উদ্ধার করেছে। আর বড় ভাই ফাহাদ এহসান তারেক (২২)কে কৌশলে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। ছোট ভাইয়ের কিডনি বিক্রির জন্যে অপহরণ করেছে বলে উদ্ধারকৃত চিঠির সূত্রে জানতে পেরেছে পুলিশ। উদ্ধারকৃত ওই চিঠিতে তারেকের বাবা-মায়ের সাথে পারিবারিক চরম বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে। সচেতন কেউ কেউ চিঠিতে বর্ণিত কথার সত্যতা যাচাই করার কথাও বলছেন। ঘটনাটি হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার মকিমাবাদ গ্রামের জহির মিয়ার বাড়ির। 

এদিকে ছোটভাই রিহানকে অপহরণের পর তাদের বাসায় একটি চিঠি পায় বাবা আবু তাহের। চিঠি পড়েই বাবা নিশ্চিত হন বড় ছেলেই টাকার জন্যে আর পারিবারিক দূরত্বের কারণে ছোট ছেলেকে অপহরণ করেছে। এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন আবু তাহের।

উদ্ধারকৃত রহস্যময় চিঠিতে তারেক লিখেছেন : আমি শুধু এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম। আমি যেদিন কিডনি বিক্রি করেছিলাম। ঠিক এদিন থেকে আপনারা আমার অবহেলা করা শুরু করছেন। অথচ আপনাদের অত্যাচারে আমি বাধ্য হয়েছি, নিজের অঙ্গ বিক্রি করতে। আপনারা আমার জীবনের সব শেষ করে দিয়েছেন। আমার স্ত্রী অন্যের বিছানায় সঙ্গী শুধু আপনাদের জন্যে। আমার সন্তানের মুখ পর্যন্ত আমি আজও দেখি নাই। আমার জীবন নষ্ট করে আপনারা শান্তিতে থাকবেন। ভাবলেন কিভাবে। আমি এতদিন অপেক্ষা করেছি। আপনাদের হাতে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আপনারা আমার কোনো ব্যবস্থা করে দেন নাই।

আপনার সন্তান যেখানে বেকার সেখানে আপনারা হিন্দুর সন্তানকে ২০ লাখ টাকা দেন ব্যবসা করার জন্য। আপনাদের টাকা পয়সা মানুষের জন্যে। এতোদিন কোনো বাচ্চা পেসেন্ট পাই নাই। তাই আপনাদের সবকিছু মুখ বুঁজে সহ্য করেছি। আমার মত এবার আপনাদের ছোটছেলে কিডনি দিবে। আপনারা আমার ব্যবস্থা করেন নাই, তাই এটা ছাড়া আমার আর কিছুই করার ছিলো না। আপনারা আপনাদের টাকা-পয়সা নিয়েই থাকেন। মানুষের ছেলেদের বড় বানান। আমার কিডনি বিক্রির সময় যেমন কিছু করতে পারেন নাই। এবারও পারবেন না, আপনাদের ছোট ছেলের সময়।

মূলত তারেকের এই চিঠির সূত্র ধরেই হাজীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করে তারেকের বাবা আবু তাহের। এর পরেই পুলিশ কৌশলে তারেককে ৫ লাখ টাকা দেয়ার কথা বলে হাজীগঞ্জে নিয়ে আসে। আর গোপনে হাজীগঞ্জ থানার এসআই মোশারফ তারেককে আটক করে।

এদিকে আটক তারেকের মা ফরিদা সুলতানা শিখা মুঠোফোনে জানান, আমার বড় ছেলে ছোট ভাইয়ের সাথে এমন করবে এটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি।

পুলিশের হাতে আটক তারেক জানান, আমি আমার ছোট ভাইকে অপহরণ করেছি শুধুমাত্র টাকার জন্যে। কিডনি বিক্রয়ের কথাটি চিঠিতে লিখে আমার মা-বাবাকে ভয় দেখিয়েছিলাম।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোশারফ জানান, অপহরণকারীকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অপহৃত রিহানকে তার বাবা মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

(ইউ/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test