E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সিংড়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে বৈদ্যনাথ পুজা মন্ডপ ভাংচুর

২০১৪ এপ্রিল ২০ ১৮:৪১:৪৫
সিংড়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে বৈদ্যনাথ পুজা মন্ডপ ভাংচুর

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের সিংড়া উপজেলার সেরকোল শ্রীরামপুর গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধে ধরে বৈদ্যনাথ পূজা মন্ডপের টিনের চালা ঘর ভেঙ্গে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। রোববার দুপুরে এই ঘটনায় ৭ জনকে আসামী করে সিংড়া থানায় একটি মামলা হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, সেরকোল শ্রীরামপুর গ্রামের বৈদ্যনাথ পূজা মন্ডপের এক শতক জায়গা নিয়ে প্রতিবেশী ইসলাম হোসেন মন্ডলের সঙ্গে মন্ডপ কমিটির বিরোধ চলছিল। ইসলাম হোসেন ৬/৭ বছর আগে বৈদ্যনাথ পুজা মন্ডপ সংলগ্ন ৩১ শতক সরকারী জমি রাজস্ব বিভাগ থেকে লিজ নেন।

লিজ নেওয়ার পর পূজা মন্ডপের কিছু জমি নিজের বলে দাবী করলে পুজা কমিটির সঙ্গে বিরোধ বাধে। শনিবার সকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বৈদ্যনাথ পুজা মন্ডপে কীর্তন গাইতে আসে। এসময় ইসমাইলের ছেলেরা তাদের বাধা দিলে কীর্তনীয় দল ফিরে যায়। পরে ইসমাইলের লোকজন মন্ডপের চালা ঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় এনিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়।

পূজা কমিটির সভাপতি কামনা চন্দ্র সাহা জানান, এই মন্ডপে প্রতি বৈশাখে কীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এখানে একটি কালো পাথর ছিল । সেটিও চুরি হয়ে গেছে। পাথরে দুধ কলা দিয়ে পুজা অর্চনা করা হত। দীর্ঘদিন ধরে এই মন্ডপে পুজা হয়ে আসছে। ইসলাম হোসেন সম্প্রতি মন্ডপের জন্য ব্যবহৃত জমি দখল করে স্থাপনা নির্মান করেন। এনিয়ে প্রতিবাদ জানালে তার ছেলেরো হুমকি ধামকি দেয়। শনিবার সকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বৈদ্যনাথ পূজা মন্ডপে কীর্তন গাইতে গেলে তাদের চলে যেতে বাধ্য করা হয়।

তবে ইসলাম হোসেন জানান, তিনি ৩২ শতক জমি লিজ নিয়েছেন। মন্দির বা মন্ডপ ভাঙ্গার কোন ঘটনা ঘটেনি। গাছের সঙ্গে টানানো দু’টি টিন এমনিতেই খুলে পড়েছে। বাড়ির মেয়েদের নামায পড়তে সমস্যা হওয়ার কথা বলা হয় কীর্তন দলকে। কাউকে চলে যেতে বাধ্য করার অভিযোগ বা মন্ডপের জায়গা দখলের অভিযোগ সঠিক নয়।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফুল হাবিব রুবেল জানান,ইসলাম হোসেন অবৈধ ভাবে ঘর তোলার পর পরিষদ থেকে নোটিশ করা হলেও তিনি কর্নপাত করেননি।

খবর পেয়ে সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম বিপুল সংখ্যক পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা খাতুন, নাটোর সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম,স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফুল হাবিব রুবেল পুলিশের অন্যান্য উর্ধর্তন কর্মকর্তা এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় সকলের উপস্থিতিতে ইসলাম হোসেনের সম্প্রতি টিরে চালা দিয়ে তৈরী করা স্থাপনা অপসারন করে সরকারী জায়গা দখলমুক্ত করা হয়।

এদিকে এই মন্ডপ ভাংচুরের ঘটনায় পুজা কমিটির সভাপতি কামনা চন্দ্র সাহা বাদি হয়ে ইসলাম হোসেন,তার ৬ ছেলে সিরাজুল ইসলাম,শরিফুল ইসলাম,মোয়াজ্জেন হোসেন,জামাল হোসেন,আব্দুল হাকিম ও হানিফ আলীকে আসামী করে সিংড়া থানায় একটি মামলা করেন।

নাটোর সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার বৈদ্যনাথ পুজা মন্ডপের টিনের চালা ঘর ভেঙ্গে দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া সহ স্থানীয় প্রশাসনের সর্তক দৃষ্টি রয়েছে।


(এমআর/এটি/এপ্রিল ২০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test