E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বগুড়া পৌর মেয়র প্রার্থী আব্দুল মান্নান আকন্দকে গ্রেফতারের নির্দেশ

২০২১ ফেব্রুয়ারি ২৫ ১৭:৫৮:৫০
বগুড়া পৌর মেয়র প্রার্থী আব্দুল মান্নান আকন্দকে গ্রেফতারের নির্দেশ

বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়ায় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড-এর ৩১ কোটি ১৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়েরকৃত দুর্নীতি মামলায় বগুড়া পৌরসভা’র সাধারণ নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও সাম্প্রতিক অব্যাহতি প্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মান্নান আকন্দ ওরফে ফেম মান্নানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের দায়ের করা মামলায় বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এই নির্দেশ দেন বগুড়ার স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক এমরান হোসেন চৌধুরী।

দুদক বগুড়ার আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ জানান, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড-এর ৩১কোটি ১৮লাখ ৪৯হাজার টাকা আত্মসাতের দুর্নীতির মামলায় বৃহস্পতিবার চার্জ গঠনের দিন ধার্য ছিল। এতে আব্দুল মান্নান আকন্দ অনুপস্থিত থাকার জন্য আবেদন করেছিলেন। আদালত আব্দুল মান্নান আকন্দের আবেদন নামঞ্জুর করে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।

মামলায় অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- ব্যাংকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপক (পরবর্তি সময়ে বরখাস্তকৃত) মোঃ রফিকুল ইসলাম, আতিকুল কবির, মাহবুবুর রহমান, আকতার হোসেন, জহুরুল হক, এনামুল হক, মাকসুদুল হক, ফেরদৌস আলম। বৃহস্পতিবার আদালতে আব্দুল মান্নান আকন্দ ব্যতীত সবাই উপস্থিত ছিলেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ৩০ নভেম্বর সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড বগুড়া শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক মোঃ শফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে বগুড়া থানায় দুর্নীতির এই মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে ভুয়া হিসাব সৃষ্টি করে ব্যাংকের টাকা আত্মসাত করেন। মামলা তদন্ত শেষে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় বগুড়ার তৎকালীন উপ-পরিচালক মোঃ আনোয়ারুল হক উক্ত ২ আসামী (মোঃ আব্দুল মান্নান আকন্দ এবং মোঃ রফিকুল ইসলাম) সহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে গত ২০১৭ সালের ৯ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। চার্জশীটে উল্লেখ করা হয় যে, আসামীরা গত ২০০৮ সালের ২৩ অক্টোবর হতে ২০১১ সালের ৩ নভেম্বরের মধ্যে ওই ব্যাংক হতে জালিয়াতি, প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গ সহ দুর্নীতির মাধ্যমে ৩১ কোটি ১৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকা আত্মসাত করেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, এই মামলা তদন্তের জন্য দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নেওয়া হয়। ২০১২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শুরু করেন প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আখতার হামিদ ভূঞা। এরপর এ মামলার তদন্ত করেন উপ-পরিচালক সৈয়দ তাহসিনুল হক। পরে ২০১৪ সালের ৪ জুন তিনি আসামিদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের (বগুড়া) তৎকালীন উপ-পরিচালক (বর্তমানে প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত) মো. আনোয়ারুল হককে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আনোয়ারুল হক এ ঘটনা তদন্ত করে ৯জনের নামে অভিযোগপত্র জমা দেন ২০১৭ সালের ৯ আগস্ট। ইতিপূর্বে ২০১৯ সালে এপ্রিল মাসে একই মামলায় মেসার্স শুকরা এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর মোঃ আব্দুল মান্নান আকন্দ এবং ওই ব্যাংকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপক (পরবর্তি সময়ে বরখাস্তকৃত) মোঃ রফিকুল ইসলামের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে হাজতি পরোয়ানা মূলে জেল হাজতে প্রেরণ করেছিল। সেই মামলায় চার্জ গঠনের দিন ধার্য ছিল বৃহস্পতিবার।

উল্লেখ্য, আসন্ন বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে আব্দুল মান্নান আকন্দ স্বতন্ত্রভাবে মেয়র পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়া এবং সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপের কারণে পৌর আওয়ামী লীগের ৪নং ওয়ার্ড কমিটির সদস্য আব্দুল মান্নান আকন্দ ওরফে ফেম মান্নানকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে উষ্কানিমূলক বক্তব্যসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র একাধিক নেতৃবৃন্দকে গালিগালাজের অভিযোগ রয়েছে।

(আর/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test