E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

৭১’র স্মৃতি

‘চোখের সামনে পরিবারের ১০ সদস্যকে খুঁচিয়ে মারে নরঘাতকরা, আজও সৈয়দপুরে দাবড়ে বেড়াচ্ছে তারা’ 

২০২১ ফেব্রুয়ারি ২৬ ১৬:২৪:০১
‘চোখের সামনে পরিবারের ১০ সদস্যকে খুঁচিয়ে মারে নরঘাতকরা, আজও সৈয়দপুরে দাবড়ে বেড়াচ্ছে তারা’ 

মানিক সরকার মানিক, রংপুর : ‘তৌহিদ বললো ‘তুম উসকো কাহা লেজারাহা’ ? (তুমি তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো)। মনির জানায়, খাতম করনেকেলিয়ে (হত্যা করতে)। জবাবে তৌহিদ মনিরকে বলে ‘তুমলোক আদ্মি হ্যায়, না জানোয়ার, উসকো সবকো খতম কারদিয়া, একঠো বাচ্চাকো ছোড়নে নেহি ছাকতা ? (তোমরা মানুষ না জানোয়ার, ওর পরিবারের সবাইকে শেষ করার পর একটা বাচ্চাকে ছাড়তে পারো না? সেই থেকে রক্ষা আমার। পরিবারের দাদা-দাদি বাবা-মা ভাই-বোনসহ ১০ জনকে চোখের সামনে হারাবার পর এভাবেই মুক্তি পাই আমি’- কথাগুলো মুক্তিযুদ্ধে পরিবারের সবাইকে হারানো নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরের আব্দুর রশীদের। 

আব্দুর রশীদ। এখন বয়স ৬২ বছর। তখন ছিল ১২, ক্লাশ থ্রি-তে পড়তেন। বাড়ি সৈয়দপুর শহরের বাঁশবাড়িতে। তার দাদা মোহাম্মদ শহীদের ছিল একটি রুটি-বিস্কুটের কারখানা। কারখানার পিছনের বাসায় ১১ সদস্যের বসবাস। দাদা ছিলেন আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য। ৭০ সালের নির্বাচনের সময় দাদা নৌকা মার্কার প্রতীকে লেবেল ছাপিয়ে ওই রুটি-বিস্কুটের প্যাকেটে লাগিয়ে বিক্রি করতেন। সে সময় তিনি শহীদ ডা. জিকরুল হকের জন্য নৌকায় ভোট চাইতেন। এটাই ছিল তাদের পরিবারের বড় অপরাধ। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে পাক হানাদার বাহিনীসহ অবাঙালি দোসররা।

রশীদ জানায়, ’৭১ এর ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতা ঘোষণার পর সৈয়দপুর শহর অশান্ত হয়ে ওঠে। পাড়ায় পাড়ায় পাকিস্তানী দোসররা বাঙালি নিধনে মরিয়া হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের সমর্থক হওয়ায় সঙ্গত কারণেই তাদের পরিবারের উপর পাক বাহিনীর নজর ছিল। পাকসেনারা তখন সৈয়দপুর বিমান বন্দর নির্মাণের কাজে প্রতিদিন তার দাদা, বাবা, বড় ভাইসহ অন্যান্যদের ধরে নিয়ে যেত এবং কাজ করিয়ে সন্ধ্যায় ছেড়ে দিত।

রশীদ জানায়, ‘৭১ এর ১৫ এপ্রিল ছিল বৃহস্পতিবার। বাইরে চৈত্র-বৈশাখের তাপদাহ। সূর্য সবে হেলেছে একটু পশ্চিমের দিকে। অন্যান্য দিনের মত আমার বাবা মোহাম্মদ শহীদ ও বড় ভাই মোহাম্মদ আবু সাকের গেছে বিমানবন্দরে কাজে। অসুস্থতার কারণে দাদা যেতে না পারায় বাসাতেই ছিলেন। দুপুরের খাবার সেরে দাদা চেয়ারে বসে পান খাচ্ছিলেন। আর আমি ছিলাম বারান্দায়। দাদি এবং মা পাশের ঘরে। ছোট ভাই বোনেরা বাইরে খেলছিল। ঠিক এ সময়ে পাক হানাদার বাহিনীর দোসর ইজাহার আহমেদ ও ওয়াহিদসহ অন্যরা দাদার ঘরে ঢোকে এবং দাদাকে দেখে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে। দাদা কিছু বলার আগেই ওয়াহিদ তার পেটে ছুরি চালিয়ে দেয়। চিৎকার আহাজারি করতে থাকে দাদি। এ সময় দাদি রাজাকার ইজাহারের পা জড়িয়ে ধরে তার স্বামীকে বাঁচিয়ে তোলার আকুতি জানায়। কিন্তু নরঘাতক ইজাহার তার দাদির গালে থাপ্পর মারে। এতে দাদির নাকের ফুল ছিড়ে নাক দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। তখনও আমি ঘরেই। ছোট ভাই বোনেরা ছুটে আসে। আমরা ভয়ে কোন কিছু বলার আগেই তাৎক্ষণিক আমাদের চোখের সামনেই তারা দাদার লাশ মাটি চাপা দিয়ে চলে যায়। সন্ধ্যায় কাজ শেষে বাড়ি ফেরে আমার বাবা মোহাম্মদ শহীদ ও বড় ভাই সাকের। বাড়ির অবস্থা দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তারাও।

বাড়িজুড়েই তখন শোকের ছায়া। এসময় প্রতিবেশী এক অবাঙালি তাদের পরামর্শ দেয় আত্মগোপনের। পরে আমি, আমার বাবা, বড় ভাই পাশের বাসায় আত্মগোপনে যাই। দাদি, মা ৪ বোন ও ছোট ভাই রাশেদ ছিল বাড়িতে। দিন শেষে আকাশে চাঁদ উঠেছে। জোসনা রাত। আমার ছোট ভাই-বোনেরা ঘুমিয়েছে। আমি বাবা আর বড়ভাই আত্মগোপনে পাশের বাসায় বিছানায় শুয়েছিলাম। গভীর রাতে আমাদের বাসা থেকে কান্নার চিৎকার শুনতে পাই। পরে বিছানা ছেড়ে বাড়ির কাছে এসে বাবা, আমি এবং বড় ভাই লুকিয়ে থেকে চুপিসারে দেখি ওরা আমার মায়ের পেটের একদিক দিয়ে বেয়নেট ঢুকিয়ে অন্য দিক দিয়ে বের করে মাকে নির্মমহাতে হত্যা করছে। চোখের সামনে মা হত্যার এমন দৃশ্য দেখে তার কাছে যেতে চাইলেও বাবা আমাদের নিরাপত্তার জন্য দু’ভাইয়ের মুখ চেপে ধরেন।

মায়ের পর তারা আমাদের ছোট ভাই রাশেদ এবং ছোট বোন সকিনা, ফিরোজা ও হাছিনাকেও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে হত্যা করে আমাদেরই চোখের সামনেই। পাকিরা দাদিকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মারার সময় বারবার বলতে থাকে, ‘তুমহারা লাড়কা আউর পোতালোক কাহা’? (তোমার ছেলে ও নাতিরা কোথায়?) দাদি তখন নির্যাতনের যন্ত্রণা সইতে না পেরে ওদেরকে জানিয়ে দেয়, পাশের বাড়িতে আমাদের লুকিয়ে থাকার কথা। সাথে সাথে হায়েনারা দাদির মাথায় বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করলো। এরপর ওরা আত্মগোপনে থাকা আমাদের বাসায় আসে এবং তালা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে আমাদের তিনজনকে ধরে নিয়ে যায় পার্শ্ববর্তী দহলা এলাকায়। সেখানে তারা আমার বড় ভাই সাকেরকে পৌরসভার পায়খানার গভীর সেফটিক ট্যাংকীর ভেতর জীবন্ত অবস্থায় ফেলে দেয়। সেখানেই মারা যায় সে। এ সময় আমি এবং আমার বাবা সেখান থেকে কোন রকমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। তখন ওরা আমার বাবাকে লক্ষ্য করে ছুরি চালায়। এতে বাবার পায়ে লাগলে তিনি মাটিতে পড়ে যান। তখন তারা বাবাকে চিৎ করে শুইয়ে জবাই করে। এরপর তার হাত পা ধরে ছুড়ে ফেলে দেয় আরও অনেক লাশের ভীরে।

তবে সেসব লাশ কাদের ছিল তা আমি জানতে পারিনি। মর্মান্তিক এই দৃশ্যও হতভাগার মত চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই কিছুই করার ছিল না আমার। সেখান থেকে কোন রকমে পালিয়ে আসি নিজ বাড়িতে। কিন্তু সেখানে আরো পৈশাচিক দৃশ্য দেখতে হয় আমাকে। দেখি তিন নরপশু তখন আমার বেঁচে থাকা একমাত্র বড় বোন নূর জাহানকে নিয়ে পৈশাচিকতায় মেতেছে। সে ছিল নববিবাহিতা। বিয়ে হয়েছে খুলনায়। যুদ্ধ শুরুর আগে বাড়ি এসেছিল। পরে আর স্বামীর বাড়ি যাওয়া হয়নি। বড় বোনের উপর আদিম অত্যাচারের সে দৃশ্যও আমি আড়ালে লুকিয়ে দেখি। পরে ওই পশুরা বোনকেও নির্মমভাবে জবাই করে। তখন বোনের ইশারায় আমি টয়লেটে লুকিয়ে থাকি। পরে নরপশুরা চলে গেলে বের হয়ে আসি এবং ততক্ষণে নিশ্চিত হতে পারি যে, আমার সব শেষ হয়ে গেছে। একমাত্র আমিই বেঁচে ছিলাম। এ অবস্থায় নরপশুদের ভয়ে আরেক প্রতিবেশির বাসার টয়লেটে গিয়ে লুকাই। কিন্তু বিধিবাম! লুকিয়ে থাকা অবস্থায় সেখানে আসে পাকি দোসর ‘ভাসানি’ নামের অবাঙালি এক তরুণ। ভাসানি আমাকে জিজ্ঞেস করে ‘তুম কুছ খ্যায়া কিনা’? (তুমি কিছু খেয়েছো কি না) এ সময় সে আমার পকেট এবং দেহ তল্লাশি করে চলে যায়।

পরে সে আমার লুকিয়ে থাকার বিষয়টি জানায় মনির খান নামের আরেক অবাঙালি নরঘাতককে। মিনিট কয়েক পরেই হাতে রক্ত মাখা একটি ছোড়া নিয়ে মনির আমার সামনে আসে এবং আমাকে সেখান থেকে ধরে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চেয়ারে বসে থাকা তৌহিদ নামের এক ব্যক্তি মনিরকে জিজ্ঞেস করে ‘তুম উসকো কাহা লেজারাহা’ ? (তুমি তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো)। মনির জানায়, খাতম করনেকেলিয়ে (হত্যা করতে)। জবাবে তৌহিদ নরঘাতক মনিরকে বলে ‘তুমলোক আদ্মি হ্যায়, না জানোয়ার, উসকো সবকো খতম কারদিয়া, একঠো বাচ্চাকো ছোড়নে নেহি ছাকতা ? (তোমরা মানুষ না জানোয়ার, ওর পরিবারের সবাইকে শেষ করার পর একটা বাচ্চাকে ছাড়তে পারো না?) সেই থেকে রক্ষা আমার। ওইদিন পাকসেনারা সৈয়দপুর শহরে কারফিউ দিয়ে বিভিন্ন স্থানে গণগত্যা চালায়। সবাইকে হারিয়ে আমি একা প্রতিবেশী এক অবাঙালি পরিবারে যুদ্ধ চলাকালীণ ৯ মাস পালিত হই। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অন্য এক বাঙালি পরিবারে চলে যাই। সেখানে ওই পরিবারের সদস্যরাই আমাকে বড় করে তোলে। সেখানে আমি ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করি’।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়েছে। সেইসব ঘাতকদের অনেকেই এখন সৈয়দপুর শহরে বসবাস করছে। শুধু বসবাসই নয়, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত তারা। কিন্তু তাদের অনেকের নাম উচ্চারণেও ভয় পায় অনেকে। এসব নরঘাতকদের অন্যতম ইজাহার আহমেদ যে সৈয়দপুরের ইউপি চেয়ারম্যান শহীদ মাহাতাব বেগের মাথা ছিন্ন করে তার ছিন্ন মাথা নিয়ে প্রকাশ্যে উল্লাস করেছিলেন। এছাড়াও যুদ্ধাপরাধী ইজাহার তৎকালীণ গণ পরিষদের সদস্য ডা. জিকরুল হকসহ ১৫০ জনকে রংপুরে বালার খাল এলাকায় এনে নৃশংসভাবে খুন করে। সে সৈয়দপুরের ৪১৩ হিন্দু-মারোমারিদের নিরাপদে ভারতে পাঠানোর কথা বলেও নৃশংসভাবে জবাই করে। তারপরও সেই নরঘাতক যুদ্ধাপরাধী এতকাল ছিল বহাল তবিয়তেই। শুধু তাই নয়, বিজয়ের ৫০ বছর পরও কষ্ট জাগা অভিযোগ, এত বাঙালি নিধনকারী সেই যুদ্ধাপরাধী ইজাহার আহমেদকে সৈয়দপুর বালিকা পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি বানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের এক সাংসদ। তবে গত তিন বছর আগে ওই কুখ্যাত ওই যুদ্ধাপরাধী বিচারের মুখোমুখি হবার আগেই বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যায়।

শহীদ পরিবারের সদস্য রশীদ ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, একজন বাঙালি হিসাবে প্রত্যাশা ছিল স্বাধীন এদেশ একদিন রাজাকার যুদ্ধাপরাধী ও সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। কিন্তু তা না হয়ে এখনও স্বাধীনতাপক্ষের আওয়ামী লীগও ওই যুদ্ধাপরাধীদের ভরণ পোষন করে আসছেন। সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করলেও আদৌ এদের বিচার শেষ হবে কী না সন্দিহান আমরা। ইজাহার গেছে, তবে অনেক ইজাহারই এখনও সৈয়দপুর দাবিয়ে বেড়াচ্ছে। সম্প্রতি দেশে আড়াই হাজার রাজাকারের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তার ১৬০৮ জনই বৃহত্তর রংপুরের। এর মধ্যে নীলফামারী জেলাতেই রয়েছে সর্বাধিক। এসব যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের খুঁজে বের করে প্রত্যেকের বিচার দাবি করেছেন শহীদ সন্তান আব্দুর রশীদসহ শহীদ পরিবারের সদস্যরা। রশীদ এখনও স্বপ্ন দেখেন যুদ্ধাপরাধী এবং রাজাকারমুক্ত একটি স্বাধীন বাংলাদেশের। রশীদ সম্প্রতি কৃষি বিপণন অধিদফতরের রংপুরে কেয়ারটেকার কাম কুক হিসেবে কর্মরত থেকে অসবর নিয়েছেন। নিজের কোন জমিজমা নেই।

সৈয়দপুরে একটি অর্পিত জমি লীজ নিয়ে সেখানেই পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তার দাবি ওই জমিটি সরকার তাকে রেজিষ্ট্রি করে দিক। ৭ সদস্য নিয়ে সংসার ভরণ পোষণে দিশেহারা হতে হয়। বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ৩ ছেলে ২ মেয়ের মধ্যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। অপর মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। দুই ছেলে ছোট চাকরি করছে। অপর ছেলে অনার্সে পড়ছে। আজও শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি মেলেনি পরিবারটির। এ পর্যন্ত পাননি কোন সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার সাহায্য-সহযোগিতা।

রশীদ জানায়, ২০০৫ সালে তার পরিবারের এই করুণ কাহিনী নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে সে সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টির একটি তদন্তের ভার দেয়া হয় নীলফামারীর তৎকালীণ জেলা প্রশাসককে। পরে তার নির্দেশনায় বিষয়টির তদন্ত করেন সৈয়দপুর উপজেলার তৎকালীণ সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোল্লা মাহমুদ হাসান। তিনি তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন ‘১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভিক পর্যায়ে আবেদনকারীর পিতা-মাতা-ভাই-বোন দাদা-দাদিসহ তার পরিবারের ১০ সদস্যকে অবাঙালিদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী হত্যা করে। আবেদনকারীর পরিবারের নিহত সদস্যগণ সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেননি। বস্তুত বাংলাদেশের কোন এলাকায় ওই সময় বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ প্রশিক্ষণ সমাপান্তে সুসংগঠিত হয়ে যুদ্ধ করেননি’।

৭ মার্চ জাতির জনকের ঐতিহাসিক ভাষণের পর দেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠে এবং পাকিস্তানী ও তাদের দোসররা বাঙালিদের উপর নির্যাতন শুরু করে পরে ২৫ মার্চ কালো রাত্রির পর দেশে যুদ্ধ শুরু হলেও তদন্তকারী তার তদন্ত প্রতিবেদনে কী করে উল্লেখ করেন যে, ওই সময়ে কোথাও যুদ্ধ শুরু হয়নি? তার এ প্রতিবেদনের প্রতিবাদে তিনি জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে স্মারকলিপি দেন এবং প্রতিবেদন সংশোধনের দাবি জানান। কিন্ত তা প্রতিবেদনের কোন পরিবর্তন করা হয়নি। মহান মুক্তিযুদ্ধ কালীণ সময় নিয়ে তথ্য বিকৃতিকারী তৎকালীণ বিএনপি-জামায়াত জোটের পেতাত্ত্ব ওই সরকারী কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোল্লা মাহমুদ হাসানেরও শাস্তির দাবি জানান তিনি।

(এমএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test