E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সুনামগঞ্জে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের মানববন্ধন

২০২১ মার্চ ১৯ ১৬:০২:৪৪
সুনামগঞ্জে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের মানববন্ধন

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সুনামগঞ্জের নওয়াগাঁ গ্রামে সংখ্যালঘু ৮০ টি পরিবার ও ছয়টি মন্দিরে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার প্রতিবাদ ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখার আয়োজনে সংগঠণের আহবায়ক অ্যাড. পঙ্কজ কুমার মল্লিকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জেলা মন্দির সমিতির সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ, জয়মহাপ্রভু সেবক সংঘের সভাপতি গোষ্ঠ বিহারী মণ্ডল, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাতক্ষীরা শাখার সহসভাপতি অ্যাড. সোমনাথ ব্যাণার্জী, মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, রঘুনাথ খাঁ, সাংবাদিক অসীম বরণ চক্রবর্তী, শরিফুল্লাহ কায়সার সুমন, বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদের তালা শাখার সহসভাপতি নারায়ন চন্দ্র মজুমদার, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাতক্ষীরা শাখার সদস্য সচীব গোপাল মণ্ডল প্রমুখ।

বক্তারা বলেন. হেফাজত ইসলামের একাংশের সভাপতি মামুনুল ইসলামের নির্দেশনায় বুধবার সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নওয়াগাঁ গ্রামের ৮০টি হিন্দু পরিবার ও ছয়টি মন্দিরে প্রকাশ্যে দিবালোকে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। হামলা চালানো হয়েছে সাতজন মুক্তিযোদ্ধার উপর। মামুনুল ইসলামকে নিয়ে ফেসবুকে এক হিন্দু যুবক স্টাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে হেফাজত ইসলাম নওয়াগাঁও গ্রামে মিছিল করার ঘোষণা দিলেও সব কিছু জেনে শুনে প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন নীরব ভূমিকা পালন করেছে। ফলে হেফাজত হিন্দুদের উপর এ ধরণের ববর্রোচিত হামলা চালানোর সাহস পেয়েছে। প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও ওয়াজ মাহফিলে বক্তারন্সংখ্যালঘু ও রাষ্ট্রকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিচ্ছেন।

প্রশাসন জেনে শুনেও মুখ বুজে রয়েছে। ২০১২ সালে মহানবীকে কটুক্তি নিয়ে দৈনিক দৃষ্টিপাতে মিথ্যা সংবাদের কারণে কালিগঞ্জের ফতেপুর ও চাকদাহে ১৫ টি হিন্দু পরিবারের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট শেষে প্রেট্রোল ঢেলে আগুণ দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হলেও দীর্ঘ নয় বছরে কোন বিচার হয়নি। উপরন্তু নয় বছর পর মূল মামলা পূণঃতদন্তে পাঠানো হয়েছে। এতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামী জিএম নূর ইসলামসহ কয়েকজনের মুখে হাঁসি ফুটেছে। ফলে শামনগরের কাচরাহাটি অশোক মণ্ডলসহ পাঁচটি পরিবারের উপর হামলা হয়েছে। একই উপজেলার চাঁচাই গ্রামে মণষা বেদী ভাঙচুর ও ঋষি পরিবারের চার সদস্যকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। তারা মামলা দিয়ে পুলিশ কৌশলে মীমাংসার নামে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছে।

আশাশুনির নাটানায় ডাঃ সুদয় মণ্ডলের কালীমন্দির ও বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। সরাফপুর ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা চঞ্চলা দাসকে চাল পড়া খাইয়ে তিনটি নাশকতা মামলার আসামী প্রধান শিক্ষক গোলাম কিবরিয়ার ইন্ধনে চোর সাজানো হয়েছে। লজ্জায় ওই শিক্ষিকা আত্মহননের চেষ্টা করেছেন। এ ছাড়া মন্দিরের জায়গা দখল, শ্মশানের জায়গা দখল, হিন্দু জমি দখল, হিন্দু নারীদের ফুসলিয়ে নিয়ে ধর্মান্তরকরণ যেন প্রতিদিনের ঘটনা।

অধিকাংশ ঘটনায় মামলা হয়নি। আবার মামলা হলেও পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করায় আসামী গ্রেপ্তার হচ্ছে না হিন্দু নাবালিকা মেয়েদের আইন বহির্ভুতভাবে ধর্মান্তরিত করার পর বিয়ে দেখিয়ে বাল্য বিবাহ আইনকে পাশ কাটিয়ে ওই মেয়েকে নিরাপত্তা হেফাজতে না পাঠিয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হবু মুসিলম শ্বশুরের জিম্মায় দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। । ফলে সন্ত্রাসী ও মৌলবাদিদের হাত শক্ত হচ্ছে। বক্তারা সুনামগঞ্জসহ দেশব্যাপি সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

(আরকে/এসপি/মার্চ ১৯, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test