E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ নেতার কবজি কর্তনের বিচারের দাবি পরিবারের 

২০২১ মার্চ ২০ ১৮:১৪:৫৫
কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ নেতার কবজি কর্তনের বিচারের দাবি পরিবারের 

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আতাউর রহমান মিন্টুর উপর বর্বরোচিত হামলার পর ৪দিন পেরিয়ে গেলেও আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে পরিবারের সদস্যরা। 

শনিবার দুপুরে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী বাজারস্থ বাড়িতে এই সংবাদ সম্মেলন আহবান করেন মিন্টুর বাবা। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মিন্টুর স্ত্রী নওরিন আক্তার চুনী, বাবা আলতাফ হোসেন, মা ফাতেমা বেগম, ভাই আশরাফুজ্জামান রাজু ও আফতাবুজ্জামান সাজু। সংবাদ সম্মেলনে জেলায় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সকল সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জুর ইন্ধনে সন্ত্রাসীরা এই নারকীয় ঘটনা ঘটায়। তার প্রভাবের কারণে চারদিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো একজন আসামীকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত এই পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পরিবারের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন।

আতাউর রহমান মিন্টুর বাবা বলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. জাফর আলী ও সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জুর দ্বন্দ্বের কারণে তার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে নারকীয় এই হামলা করা হয়েছে। আমার ছেলে জাফর আলীর ভাগ্নে হওয়ায় তাকে এই মূল্য দিতে হল। এর আগেও তার ছেলের উপর ওই সন্ত্রাসীরা হামলা করেছিল। তখন চাপ দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করতে হয়েছিল। আবারও তারা আমার ছেলেকে হত্যাচেষ্টা করে। রাজনৈতিকভাবে তার উত্থান ভাল চোখে দেখছিল না প্রতিদ্বন্ধিরা।

সন্তান সম্ভাবা মিন্টুর স্ত্রী নওরিণ আক্তার চুনী বলেন, আমি কোনদিন দেখি নাই তার সাথে কারো কোন দ্বন্দ্ব হয়েছে। আমার স্বামীর সাথে কারো কোন দ্বন্দ্ব ছিল না। তাকে নি:শংসভাবে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। তার দুই হাত কেটে ফেলা হয়েছে। পা কেটে দিছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী আমার মা। তার আমি মেয়ের মত। তাঁর কাছে আমার অনুরোধ আমার স্বামীকে যারা এইভাবে ক্ষতবিক্ষত করেছে আমি তার কাছে বিচার চাই। আমার সন্তানের মুখের দিকে আমি চাইতে পারি না। তারা বাবার আদর থেকে বঞ্চিত হল। তাকে কোলে নেয়ার মত হাত রইল না তার।

এসময় মিন্টুর বাবা আলতাফ হোসেন ও মা ফাতেমা বেগম সন্তানের বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মিন্টুর ভাই আফতাবুজ্জামান সাজু জানান, তারা প্রতিনিয়ত হামলা করত আমাদের বাড়ীতে। প্রতিনিয়ত অস্ত্র নিয়ে আমাদের পিছনে ছুটত। ওই নাহিদ, আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু ভাই, তার আপন শ্যালক, ওই সোহেল’র মোবাইল ট্রাকিং করে দেখেন ঘটনার সময় সে জড়িত ছিল। ওই মঞ্জু ভাইয়ের ইন্ধনে আজ আমার ভাইয়ের হাত নাই। পা নাই। চিরদিনের জন্য পঙ্গু। আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার ভাই সব আসামীর নাম বলেছে। আমার ভাইকে অভিনয় করতে করতে ফিল্ম স্টাইলে তারা হাত কাটছে এবং পরক্ষণে নিউজ করে দিয়েছে, ভাই আপনার স্বার্থকতা করে দিয়েছি। আপনি কুড়িগ্রামে উল্লাস করবেন। আনন্দ করবেন। কুড়িগ্রাম জেলায় অবাধ ক্ষমতা পাবেন আপনি। যত চাঁদা লাগে যত টাকা লাগে ইনকাম করে আপনাকে দিতে পারবো।

ওই মঞ্জু ভাই রাজনীতি করে না। শুধু সন্ত্রাস করে। উনি আজীবন কুড়িগ্রামে যত হত্যা সংগঠিত হয়েছে, মারামারি হয়েছে আমান উদ্দিন ভাই তার কথায় হয়েছে। ওই আনোয়ার ভাই অস্ত্র ধার করে কাঁঠালবাড়ীতে ছিল। ছয়টি মোটর সাইকেলে ১২জন আসামী তারা চতুর্দিক থেকে আক্রমন করেছে আমার ভাইকে কোন ছাড় দেয়নি। হাত কাটার পর যখন বাম পা টান দিয়েছে তখন বলে একটি পা যদি ভাইকে উপহার দিতে না পারি তাহলে আমাদেরকে বিগ এ্যামাউন্ট দিবে না। আমাদেরকে টাকা পার্সেল করবে না। তোমরা গা ঢাকা দিয়ে থাকো। তোমাদের ব্যবস্থা আমরা করবো। এই মঞ্জু ভাই রাজনীতিতে ক্ষমতার উপরে যাওয়ার জন্য মাননীয় সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলীর ভাগ্নের হাত কেটে নিয়ে উনি দেখিয়ে দিল জাফর ভাই আপনার ক্ষমতা নাই। আমার ক্ষমতা অনেক বেশি।

তারা আমাদেরকে হত্যার হুমকী দিয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা নাই। প্রশাসন আমাদেরকে নিরাপত্তা না দিলে আমরা বাঁচতে পারবো না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি পারেন দেশকে সন্ত্রাসমুক্ত মাদকমুক্ত করতে। আমাদেরকে উদ্ধার করতে।

উল্লেখ্য, গত ১৬ মার্চ দুপুরে রাজারহাটের রামরতন এলাকায় আতাউর রহমান মিন্টুকে ১১-১২ জনের একটি দল ডান হাতের কব্জি কেটে নেয়। তার বাম হাতও বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে। এছাড়াও দুই পায়ের রগ কেটে ফেলা হয়েছে। তিনি এখন ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।

এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজারহাট থানায় বাঁধনসহ ১১ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৩-৪জন অজ্ঞাত আসামী করে মামলা করেন মিন্টুর বাবা আলতাফ হোসেন।

(পিএস/এসপি/মার্চ ২০, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test