E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

রায়পুরে স্কুল মাঠে গ্রামীন ফোনের টাওয়ার বসানো নিয়ে উত্তেজনা

২০২১ মার্চ ২৪ ১৬:৫৩:২৫
রায়পুরে স্কুল মাঠে গ্রামীন ফোনের টাওয়ার বসানো নিয়ে উত্তেজনা

রায়পুর (লক্ষ্ণীপুর) প্রতিনিধি : বাসার ছাদ, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, ক্লিনিক, কারাগার, খেলার মাঠ, জনবসতি এলাকা, হেরিটেজ ও প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকাসহ ইত্যাদি স্থানে  মোবাইল ফোনের টাওয়ার না বসানো এবং যেগুলো বসানো হয়েছে তা অপসারণ করাসহ ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে গত বছরের ২৫ এপ্রিল  একটি রায় প্রকাশ করেছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু এ আদেশ অমান্য করে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের ঐতিহ্যবাহী বামনী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে মোবাইলের টাওয়ার বসানো চেষ্টা করছেন প্রধান শিক্ষক। এ নিয়ে দাতা সদস্য, গ্রামের সচেতন যুবক ও প্রধান শিক্ষকের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। 

বুধবার (২৪ মার্চ) দুপুরে উপজেলার বামনী ইউপির খায়েরহাট এলাকার বামনী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।

প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির জানান, কমিটির সভাপতিসহ অন্য সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে মোবাইল কোম্পানির (গ্রামিন ফোন) সাথে ১৫ বছরের চুক্তি হয়। মাসে ৫ হাজার টাকা করে এক বছরের ভাড়া ৬০ হাজার টাকা দিবে তারা। স্কুলের দৈর্ঘ ৩০ ফিট ও প্রস্থ ৩০ ফিট জায়গায় এ টাওয়ার বসাবে তারা। কিন্তু দাতা সদস্য দেলোয়ার হোসেন, অভিভাবক সদস্য বেলাল হোসেন ও টিপু সুলতানসহ কয়েকজন যুবকের বাঁধার কারনে তার কাজ স্তগিত রাখা হয়েছে। কমিটির সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

স্কুলে দাতা সদস্য দেলোয়ার হোসেন ও অভিভাবক সদস্য বেলাল বলেন, মঙ্গলবার রাতে গ্রামিন টাওয়ার কোম্পানির লোক স্কুলের ভিতরে নবম ও দশম শ্রেণীর কক্ষের সামনে মাটি খননের কাজ করে । এ মোবাইল টাওয়ার থেকে নিঃসৃত তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা এবং এর স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত প্রভাব পড়বে কমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর। তাই কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যদি টাওয়ার করা হয় তাহলে পরিচালনা কমিটির সদস্য ও এলাকার যুবকদের সাথে সংঘর্ষ হওয়ার আশংকা করছি। তাছাড়া, মোবাইল ফোনের টাওয়ার থেকে নিঃসৃত তেজস্ক্রিয়তা (রেডিয়েশন) খুবই উচ্চমাত্রার এবং তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। শিক্ষার্থীসহ গ্রামবাসীর স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও পরিবেশগত প্রভাব পড়বে।

এ বিষয়ে স্কুলের সভাপতি মাহফুজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ এপ্রিল হাইকোর্ট ১১ দফা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণের মাত্রা নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে ১/১০ ভাগ করা, ২. মোবাইল টাওয়ার বাসার ছাদ, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, ক্লিনিক, কারাগার, খেলার মাঠ, জনবসতি এলাকা, হেরিটেজ ও প্রতœতাত্ত্বিক এলাকাসহ ইত্যাদি স্থানে না বসানো এবং যেগুলো বসানো হয়েছে তা অপসারণ, ৩. বিকিরণের মাত্রা যেন বেশি না হয়, তার ব্যাপারে অতিরিক্ত নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ, ৪. টাওয়ার বসাতে জমি অধিগ্রহণে কোনও বাধা আছে কিনা বা বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণ, ৫. টাওয়ারের বিকিরণের মাত্রা বিটিআরসি এবং লাইসেন্সি দুপক্ষকেই স্বাধীনভাবে আইটিইউ এবং আইইসি এর মান অনুসারে পরিমাপ করা, ৬. কোনও টাওয়ারের বিকিরণের মাত্রা বেশি হলে তা অপসারণ করে নতুন টাওয়ার বসানো, ৭. টাওয়ার ভেরিফিকেশন মনিটর পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিটিআরসির দায়-দায়িত্ব হবে বাধ্যতামূলক, ৮. বিটিআরসি স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং সেল গঠন করবে, ৯. বিটিআরসি অন্যদের নিয়ে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি গঠন করবে। লাইসেন্সিকে প্রতি ৬ মাসে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে, ১০. মোবাইল সেটে দৃশ্যমানভাবে এসএআর মান লিখতে হবে এবং ১১. সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সি প্রতিটি রিপোর্ট/রেকর্ড ৫ বছর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করবে। সংশ্লিষ্ট অথরিটিকে আদালতের আদেশ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে আরও গবেষণা করে রিপোর্ট দিবে।

(পিআর/এসপি/মার্চ ২৪, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test