E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দশমিনায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচিতে অনিয়ম

২০২১ মার্চ ২৬ ১৬:৩৭:০৪
দশমিনায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচিতে অনিয়ম

দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : করোনা সময়ে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় ‘সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত ৮৫ উপজেলায় স্কুল ফিডিং’ কর্মসূচিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বাড়িতে পৌঁছে না দিয়ে পরিবহন খরচ আত্মসাৎ করতে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ডেকে বিস্কুট বিতরণ ও সাড়ে ২৬ লাখ বিস্কুট বিতরণ না করে অনিয়ম করেছে বিতরণকারী এনজিও প্রত্যাশা বাংলাদেশ। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৪৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২০২০ সালে শিক্ষার্থী বিহীন চর বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিস্কুট আওতা থেকে বাদ পরেছে। দারিদ্র পিরীত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতা ১৪৪টি বিদ্যালয়ে ওই বছর শিশু থেকে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া ১৮ হাজার ৫’শ ৫৮ শিক্ষার্থী। ১৮ মার্চ ২০২০ তারিখ থেকে কোভিড-১৯ এর কারনে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিশুদের পুষ্টিমান ধরে রাখার জন্য শিশু প্রতি, মাসে ২৫ প্যাকেট করে ২ মাস অন্তর ৫০ প্যাকেটের একটি ব্যাগ শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিতরণ করার নির্দেশনা জারী করে ২৯.০৪.২০২০ তারিখ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। চলতি বছরে অধিদপ্তর পূর্বের নির্দেশনা মোতাবেক স্কুল ফিডিং প্রকল্প চালু রাখতে পূণঃ নির্দেশ জারী করেছে।

এদিকে, ঠিকাদারি এনজিও প্রতিষ্ঠান প্রত্যাশা বাংলাদেশ ২০২০ সালের এপ্রিল-জুন ৩১ প্যাকেট, জুলাই-সেপ্টেম্বর ৩৯ প্যাকেট ও অক্টোবর-ডিসেম্বর ৪৬ প্যাকেট ও ২০২১ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে ৪৫ প্যাকেট বিস্কুট বিতরণ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। ওই সময়ে প্রতি শিক্ষার্থী ২৭৫ প্যাকেট বিস্কুট পাবার কথা থাকলেও পেয়েছে ১৬১ প্যাকেট বিস্কুট। চলতি বছরে ১৪৪ টি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৯ হাজার ৯’শ ৬০ জন হলেও পূর্বের বছরের ১৮ হাজার ৫’শ ৫৮ জনের বিপরিতে বিস্কুট বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন এনজিওটি। একাধিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রত্যাশা বাংলাদেশ এনজিওটি মোট ২৬ লাখ ৪৯ হাজার ৬’শ ৬২ প্যাকেট বিস্কুট কম দেয়ার অনিয়মসহ অধিদপ্তরের চিঠি মোতাবেক শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পৌঁছে না দিয়ে যাতায়ত খরচ আত্মসাৎ করে আসছে।

উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, প্রত্যাশা বাংলাদেশ প্রধান শিক্ষকদের মুঠোফোনে কল করে বিদ্যালয়ে বিস্কুট রেখে আসে। এতে করোনা কালীন সরকারের ঘরে থাকুন সুস্থ্য থাকুন নির্দেশনা শিশুদের জন্য কার্যকর থাকছেনা। বিস্কুট পরিমানে কম দেয়ার বিষয়টি বিদ্যালয়ে এনজিওটির পৌঁছে দেয়া রেজিষ্টারেও প্রমান থাকছে।

অভিযোগে বিষয়ে বেসরকারি সংস্থা প্রত্যাশা বাংলাদেশের গলাচিপা-দশমিনা মাঠ সমন্বয়কারী মোঃ মশিউর রহমান বলেন, সরকার শিশুদের বাড়িতে বিস্কুট পৌঁছে দেয়ার নির্দেশনা দিলেও টাকা দেয়নি। তাই আগের মতো বিদ্যালয়ে পৌঁছানো হচ্ছে। বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বিস্কুট বিনামূল্যে ত্রাণ হিসেবে দেয়া হয়, বিদ্যালয় খোলা থাকলে ওয়ার্কিং ডে হিসাব মতে আমাদের হেড অফিস থেকে বিস্কুট কম আসে।

বিদ্যালয়ে ডেকে বিস্কুট বিতরণ ও পরিমানে কম দেয়ার বিষয়ে মুঠোফোনে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রুহুল আমীন বলেন, অধিদপ্তরের বিস্কুট বিতরণ নির্দেশনা বিতরণকারী প্রত্যাশা বাংলাদেশ’র অফিসে প্রেরণ করা হয়েছে। বিস্কুট কম বিতরণ বিষয়টি বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় অভিযোগ আসেনি।

স্কুল ফিডিং সহকারি প্রকল্প পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম এ সংবাদদাতাকে মুঠোফোনে জানায়, পূর্বের শিক্ষার্থীর হিসাব ধরে বরাদ্দের কারণে ২৬৪৯৬৬২ প্যাকেট বিস্কুট কম দেয়ার সংখ্যায় হেরফের হতে পারে। কিন্তু স্বাস্থ্য বিধির কারণে শিশুদের বাড়িতে বিস্কুট পৌঁছে দেয়ার বিষয়টি অবাশ্যই মানতে হবে।

(এনসি/এসপি/মার্চ ২৬, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test